যুক্তরাজ্যে ব্রেক্সিটের ঘটনা প্রবাহের ধারাবাহিকতায় রাজনীতির কেন্দ্রে নাটকীয় উত্থান হয়েছিল সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের। শনিবার (৯ জুন) কনজারভেটিভ পার্টির সংসদ সদস্য পদ থেকেও নাটকীয়ভাবে বিদায় নিলেন তিনি। এক হাজার শব্দে লেখা পদত্যাগপত্রে তিনি বর্তমান প্রধানমন্ত্রীরও সমালোচনাও করেছেন। সব মিলিয়ে আলোচনার কেন্দ্রে এখন তার ভূমিকা।
আকস্মিক পদত্যাগে ব্রিটেনের রাজনীতি থেকে বরিস জনসনের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের আপাতত ইতি ঘটছে, এমনটিই বলছেন বিশ্লেষকরা।
সমালোচকরা বলেছেন, পরিস্থিতি বরিসের পদত্যাগ ক্রমেই অনিবার্য করে তুলেছিল। ব্রেক্সিট ইস্যুকে কেন্দ্র করে ব্রিটেনের সাম্প্রতিক ইতিহাসের সফলতম টোরি প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনকে বিদায় নিতে হয়। তার স্থলাভিষিক্ত হওয়া থেরেসা মে -কেও শেষপর্যন্ত ক্যামেরনের পথেই হাটতে হয়েছে। এরপরই ক্ষমতায় বসেন বরিস। ব্রেক্সিট সম্পন্ন করতে সফল হন।
ব্রেক্সিট ইস্যুতে ব্রিটিশ জনগণ এখন দ্বিধাগ্রস্ত। করোনা, রাজনীতির পট পরিবর্তন আর ইউক্রেন যুদ্ধ ব্রিটেনের অর্থনীতিকে ঝুঁকিতে ফেলেছে।
বরিস জনসন বলেছেন, যখন কনজারভেটিভ পার্টির একজন এমপি ছিলেন তখন পত্রিকাতে কলাম লিখেই বছরে সাড়ে ৩ লাখ পাউন্ডের বেশি আয় করতেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, নিজ দলের দুই সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ও থেরেসা মে’র বিদায়ের কলকাঠি নাড়েন তিনিই। থেরেসা'র সরকারকে অস্থিতিশীল করতে সরকার ও দলে থেকে যা যা করার তার সবই করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রিত্ব পেতে রাতারাতি নিজের অবস্থান আর পূর্বের বক্তব্য পাল্টে ফেলতেন। যা অন্য নেতাদের আগে দেখেনি ব্রিটেনের জনগণ।
মেয়র থাকাবস্থায় লন্ডনকে সাধারণ মানুষের জন্য অসাধ্য করে তুলেছিলেন বলে অভিযোগ সমালোচকদের। সেই সময় এক সাক্ষাৎকারে বরিস ১৭ বার বলেছিলেন, তিনি আর সংসদ সদস্য পদে দাঁড়াবেন না। কিন্তু একমাস পরই তিনি অক্সব্রীজ এলাকা থেকে এমপি নির্বাচন করে জয়ী হয়েছিলেন।
অনেক ব্রিটিশ সমালোচক এখন তাকে ‘ব্রিটিশ ডোনাল্ড ট্রাম্প’ বলে ব্যাঙ্গ করেন। তবে নিজের রাজনৈতিক অবস্থানের ঘন ঘন পরিবর্তন, ব্যক্তিগত জীবন, পলিটিক্যাল এন্টারটেইনার হিসেবে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড ও মন্তব্য দিয়ে আলোচনায় থেকেছেন তিনি।
সংসদ সদস্য পদ থেকে বরিস জনসের পদত্যাগ বড় কোনও পরিবর্তন আসবে না বলে শনিবার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন ইউকে -বাংলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম।
৮০০ বছর ব্রিটেন লিখিত সংবিধান ছাড়াই চলছে। ব্রেক্সিট ও ইউক্রেন যুদ্ধের পরিস্থিতির পাশাপাশি সামাজিক ও ভূ-রাজনৈতিকের মতো বিষয়গুলো এখন ব্রিটেনের জনগণের সামনে।