সংসদ সদস্য থেকে পদত্যাগ না করলে করোনাকালে নিয়ম ভেঙে পার্টি করার অভিযোগ (পার্টিগেট) তদন্তের ফলাফলে মিথ্যাচারের দায়ে তাকে বহিষ্কৃত হতে হতো। পার্টিগেট কেলেঙ্কারি তদন্তের ফলাফল প্রকাশ্যে আসার আগেই তিনি স্বেচ্ছায় পদ ছাড়ার কৌশল নিয়েছেন। আগেভাগে পদত্যাগ করে নিজের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের আওয়াজ তুলে সহানুভূতি টানতে চেয়েছেন নিজের পক্ষে। তদন্তের ফলাফল প্রকাশের আগে আকস্মিক পদত্যাগকে বরিসের রাজনৈতিক কৌশল হিসেবেই অভিহিত করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
এতে করে নিজের আসনে আসন্ন উপনির্বাচন ও তাতে পরাজয়ের ঝুঁকি এড়াতে পেরেছেন। কারণ ব্রিটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের অতীতের ইতিহাস বলছে— ঝুঁকিপূর্ণ চ্যালেঞ্জে তার লড়াই করার সম্ভাবনা সব সময়ই ক্ষীণ।
তবে অন্য আসন থেকে তিনি নির্বাচন করে আবার যে সংসদে ফিরতে চাইবেন না— সে সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না পর্যবেক্ষকরা। কারণ ব্রিটেনের রাজনীতিতে বরিস সব সময়ই আনপ্রেডিক্টেবল এক চরিত্র।
কিন্তু বরিস যদি সংসদে না ফেরেন তাহলে কি ফের তার পুরনো পেশা সাংবাদিকতায় ফিরবেন? সেখানেও বিপত্তি। তার সাবেক কর্মস্থল টেলিগ্রাফ পত্রিকাটি দুদিন আগেই বিক্রির ঘোষণা দিয়েছে পত্রিকাটির মালিকপক্ষ। যদিও নিজের সাবেক সম্পাদক উইল লুইসকে মাত্রই নাইট উপাধিতে ভূষিত করেছিলেন জনসন।
নতুন পত্রিকার সম্পাদক হয়ে ফিরে নিজের দলের বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনায় তিনি সোচ্চার হবেন নাকি বিক্রির তালিকায় থাকা টেলিগ্রাফ পত্রিকাটি কিনে নেবেন বরিসের কোনও মিত্র? নাকি ফের সংসদে ফেরার লড়াইয়ে নামবেন বরিস— তার জন্য আপাতত কিছুটা অপেক্ষা ছাড়া বিকল্প নেই ব্রিটিশ রাজনীতির পর্যবেক্ষকদের।
এড মিলিব্যান্ডের স্কুলবন্ধু টার্কিশ ডিপ্লোম্যাট বাবার সন্তান ক্যারিয়ার জার্নালিস্ট বরিস জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিক।
বাহ্যত পলিটিক্যাল এন্টারটেইনার রাজনীতির ময়দানে সময় সময়ে কৌতূকের আনন্দ দিলেও সময় বুঝে কৌশলের ক্যারিশমা দেখাতে সিদ্ধহস্ত এ সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ। মনে রাখা সমীচীন, ব্রিটেনের জীবিত রাজনীতিবিদদের মধ্যে বরিসই সেই ব্যক্তি যার জনপ্রিয়তার পারদ ওঠা-নামা দুটোই করে।
বাম রাজনৈতিককর্মী নুরুর রহিম নোমান শনিবার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন,বরিসের পদত্যাগ আসলে তার ফিরে আসার কৌশলী চেষ্টা।