সৌদি আরবের ইস্তানবুল কনস্যুলেট ভবনে সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যার রেকর্ডকৃত শক্তিশালী প্রমাণ চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, 'যদি এমন প্রমাণ থাকে তাহলে আমরা তাদেরকে সেটা দিতে বলেছি।' ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এখবর জানিয়েছে।
সৌদি আরব ও দেশটির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের কঠোর সমালোচক জামাল খাশোগি গত ২ অক্টোবর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিতে তুরস্কের ইস্তানবুল শহরের সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশের পর আর বের হননি। সৌদি আরব অবশ্য বলছে, খাশোগি কনস্যুলেট ভবন থেকে বের হয়ে গেছেন। তবে তুরস্কের পক্ষ থেকে এর প্রমাণ চাওয়া হলে তা সরবরাহে ব্যর্থ হয়েছে রিয়াদ। তুরস্কের দাবি, তাদের তদন্তকারীদের হাতে নিশ্চিত প্রমাণ রয়েছে কনস্যুলেট ভবনের ভেতরে খাশোগিকে হত্যা করা হয়েছে। ২ অক্টোবর তুরস্কে আসা ১৫ সদস্যের একটি সৌদি দল এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ আঙ্কারার।
খাশোগির নিখোঁজের ঘটনায় বিপাকে পড়েছে সৌদি আরবের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। হত্যার রেকর্ডকৃত কথোপকথনের প্রমাণ চাওয়া হয়েছে জানিয়ে ট্রাম্প বলেন, আমি নিশ্চিত নই এমন কিছু রয়েছে। হয়ত আছে, সম্ভবত আছে।
ট্রাম্প জানান, সৌদি আরব ও তুরস্ক সফরে থাকা মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও’র কাছ থেকে তিনি বিস্তারিত জানার আশা করছেন। এই সপ্তাহের শেষ দিকেই সত্য বেরিয়ে আসবে।
তবে সৌদি আরবকে রক্ষার চেষ্টার কথা অস্বীকার করেছেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, না, কোনওভাবেই না। আমি শুধু জানতে চাই সত্যিকার অর্থে কী ঘটেছে।
এর আগে খাশোগির নিখোঁজের ঘটনায় দুর্বত্তরা জড়িত থাকতে পারে বলে দাবি করেছিলেন ট্রাম্প। সৌদি নেতাদের দিকে অভিযোগ তোলার বিষয়ে তিনি সতর্কতা অবলম্বন করেছেন। বলেছেন, নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ার আগ পর্যন্ত তাদেরকে অপরাধী বিবেচনা করা হচ্ছে।
তদন্তের শুরু থেকেই খাশোগিকে হত্যার একটি অডিও প্রমাণ হাতে থাকার দাবি করে আসছে তুরস্ক। ওই অডিও রেকর্ডিং পুরোপুরি শুনেছেন এমন এক তুর্কি সূত্র মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডলইস্ট আইয়ের কাছে দাবি করেন, ২ অক্টোবর মাত্র সাত মিনিটে পুরো হত্যাকাণ্ড সম্পাদিত হয়েছে। ওই সূত্র দাবি করেছে, খাশোগিকে হত্যার উদ্দেশ্যে সৌদি আরবের জেনারেল সিকিউরিটি বিভাগের ফরেনসিক প্রমাণ সংক্রান্ত প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করা সালাহ মোহাম্মদ আল তুবাইগিসহ ১৫ জনের একটি দল প্রাইভেট জেটে করে ওইদিন সকালে আঙ্কারা পৌঁছান। দূতাবাসের কনসাল জেনারেলের অফিস থেকে খাশোগিকে টেনেহিঁচড়ে কনসাল জেনারেলের পড়ার ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়। সে সময় উপরে প্রচণ্ড চিৎকারের আওয়াজ শুনতে পেয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন সেখানে নিচতলায় উপস্থিত থাকা এক ব্যক্তি। কিছুক্ষণ পর তার চিৎকার বন্ধ হয়ে যায়। কারণ, তাকে চেতনানাশক কিছু দেওয়া হয়েছিল।
এর মধ্যে মঙ্গলবার সৌদি কনসাল মোহাম্মদ আল-ওতাইবি তুরস্ক ছেড়ে রিয়াদ চলে গেছেন।