X
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪
১১ বৈশাখ ১৪৩১

দেশের ১০ ভাগ মানুষ থ্যালাসেমিয়ার বাহক: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২৮ জুলাই ২০২২, ২০:৩৫আপডেট : ২৮ জুলাই ২০২২, ২০:৪০

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, দেশের প্রায় ১০ ভাগ মানুষ থ্যালাসেমিয়ার বাহক। থ্যালাসেমিয়া নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে বিয়ের আগে পাত্র-পাত্রীর রক্ত পরীক্ষা করা জরুরি।

বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) এ-ব্লক মিলনায়তনে পেডিয়াট্রিক হেমাটোলজি অ্যান্ড অনকোলজি বিভাগ ও মুভমেন্ট ফর থ্যালাসেমিয়া ইরাডিকেশন ইন বাংলাদেশ (এমটিইবি) যৌথভাবে আয়োজিত ‘থ্যালাসেমিয়া অ্যান ইমার্জিং ন্যাশনাল হেলথ ইস্যু: ওয়ে টু মিনিফাই’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘থ্যালাসেমিয়া রোগীর চিকিৎসায় বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট করার জন্য পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় বিএসএমএমইউ’কে সব ধরণের সহযোগিতা দেবে। ঘরে ঘরে থ্যালাসেমিয়া নির্মূলে সচেতনতা জাগ্রত হোক, থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধ আন্দোলন সফল হোক।’ তিনি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধে সব ধরণের সহযোগীতার আশ্বাস দেন।

অনুষ্ঠানে থ্যালাসেমিয়া গাইড বুক ও স্যুভেনির, ‘রক্তিম সাহারার আত্মকথা’ প্রকাশিত হয়। রোগীগণ তাদের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, পুনবার্সন ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেন, ‘থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধে প্রয়োজনে আইন করতে হবে।’

স্বাস্থ্য খাতে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন সাফল্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘দেশে স্বাভাবিক সময়ের স্বাস্থ্য সেবার পাশাপাশি দুর্যোগপূর্ব, দুর্যোগকালীন এবং দুর্যোগ পরবর্তী সময়ের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, পুনবার্সন ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে আসছে। চলমান করোনা মহামারি মোকাবিলায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রম সারা বিশ্বে প্রশংসা কুড়িয়েছে। প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা ভ্যাক্সিন হিরো পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।’

সভাপতির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘থ্যালাসেমিয়া একটি রক্তরোগ। বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে পাত্র-পাত্রীর থ্যালাসেমিয়ার বাহক কিনা তা জানা সম্ভব। রক্তের সঙ্গে সঙ্গে চোখও পরীক্ষা করা উচিত। পাত্র-পাত্রী যদি উভয়ই চোখের মাইনাস পাওয়ারের হয় তবে তাদের সন্তানের চোখেও মাইনাস পাওয়ারের হবে। থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধে ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুলে ভর্তির সময় এবং বিয়ের সময় কাজী অফিসে বর-কনের রক্ত পরীক্ষার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।’

সংসদ সদস্য ডা. মো. আব্দুল আজিজ বলেন, ‘জন্মের পরপরই নবজাতকের রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে থাইরয়েড, বি-ভাইরাসসহ বেশ কিছু রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধে রুটিন পরীক্ষার ওপর জোর দিতে হবে। এ বিষয়ে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।’

পেডিয়াট্রিক হেমাটোলজি অ্যান্ড অনকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ও এমটিইবি’র সভাপতি অধ্যাপক ডা. এটিএম আতিকুর রহমান জানান,  থ্যালাসেমিয়া একটি বংশানুক্রমিক রোগ। দেশের জনগণের প্রায় ৬-১২ শতাংশ মানুষ বিভিন্ন ধরনের থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত। এছাড়াও প্রতিবছর প্রায় ৭ হাজার নতুন শিশু থ্যালাসেমিয়া রোগের জিনসহ জন্মগ্রহণ করে। থ্যালাসেমিয়া রোগীরা দুই ধরণের হয়ে থাকে। একটি থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রোগী, অন্যটি থ্যালাসেমিয়ার বাহক। যারা থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত তাদের মাসে এক-দুই বার রক্ত দিয়ে বাঁচিয়ে রাখা হয়। তারা সারাজীবন এ রোগ বহন করে। তাদের অনেকেই বিশ থেকে ত্রিশ বছর বয়সের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের জটিলতায় মৃত্যুবরণ করেন। বোনম্যারো ট্রান্সপ্লানটেশন করে তাদের চিকিৎসা করা হলে সুস্থ্য হওয়ার সম্ভাবনা আছে। কিন্তু এই দেশে বোনম্যারো ট্রান্সপ্লানটেশন জটিল ও ব্যয়বহুল এবং এটা অপ্রতুল। অন্যদিকে যারা থ্যালাসেমিয়ার বাহক তারা এই রোগ বহন করেন এবং আরেকজন বাহককে বিয়ে করলে তাদের সন্তানের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। কিন্তু একজন থ্যালাসেমিয়া বাহক যদি একজন নরমাল ব্যক্তিকে বিয়ে করেন, তবে তাদের সন্তানের থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন– স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ড. মো. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, বিএসএমএমইউ’র উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. জাহিদ হোসেন, সাবেক উপ- উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লা, ডব্লিউএইচও, ইউনিসেফ ও সেভ দ্য চিলড্রেন বাংলাদেশ প্রতিনিধিরা।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ডা. চৌধুরী ইয়াকুব জামাল। থ্যালাসেমিয়া বিষয়ে বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ পেশ করেন সহকারী অধ্যাপক ডা. মোমেনা বেগম। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও চিকিৎসক, থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশু ও তাদের অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।

 

/এসও/আরকে/
সম্পর্কিত
শিব নারায়ণ দাসের মরদেহ বিএসএমএমইউ-এ হস্তান্তর
কণ্ঠের সুচিকিৎসা দেশেই সম্ভব: বিএসএমএমইউ ভিসি
আলাদা হচ্ছে আরও এক জোড়া শিশু
সর্বশেষ খবর
সেতুমন্ত্রীর মানহানির অভিযোগে যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিবের বিরুদ্ধে জিডি
সেতুমন্ত্রীর মানহানির অভিযোগে যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিবের বিরুদ্ধে জিডি
দাফনের ১৫ দিন পর তোলা হলো ব্যাংক কর্মকর্তার মরদেহ
দাফনের ১৫ দিন পর তোলা হলো ব্যাংক কর্মকর্তার মরদেহ
ফসলের মাঠে সোনারঙ, তীব্র গরমেও কৃষকের মুখে হাসি
ফসলের মাঠে সোনারঙ, তীব্র গরমেও কৃষকের মুখে হাসি
স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিশ্ববিদ্যালয়কে ভূমিকা রাখার আহ্বান
স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিশ্ববিদ্যালয়কে ভূমিকা রাখার আহ্বান
সর্বাধিক পঠিত
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের গল্প বাংলাদেশের পর্দায়
আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের গল্প বাংলাদেশের পর্দায়
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
তাপপ্রবাহের গেটওয়ে যশোর-চুয়াডাঙ্গা
তাপপ্রবাহের গেটওয়ে যশোর-চুয়াডাঙ্গা