ফুটবল স্টেডিয়াম মানেই হৈচৈ আর হট্টগোলের সমার্থক। সবুজ মাঠে খেলোয়াড়রা খেলেন আর গ্যালারিতে হই হই রব ওঠে। এটাই চিরচেনা দৃশ্য। কিন্তু স্টেডিয়ামে যদি বন থাকে তাহলে কেমন হয়?
জলবায়ু পরিবর্তন ও বন নিধনের বিরুদ্ধে বার্তা ছড়িয়ে দিতে অস্ট্রিয়ার একটি স্টেডিয়ামকে বনে রূপান্তর করা হলো। এটি মূলত আর্ট ইনস্টলেশন তথা স্থাপনাশিল্প।
ক্লাগেনফুর্ট শহরে অবস্থিত ওয়াদারজি ফুটবল স্টেডিয়ামে চমৎকার বন সাজিয়েছেন সুইস শিল্পী ক্লাউস লিটম্যান। সেখানে এখন বিভিন্ন প্রজাতির ২৯৯টি গাছ। এর মধ্যে কোনো কোনোটির ওজন ছয় টন করে! ৩০ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতা সম্পন্ন স্টেডিয়ামটিতে তাই বিভিন্ন দেশের পর্যটক সমাগম দেখা যাচ্ছে।
গত ৮ সেপ্টেম্বর শুরু হয়েছে ‘ফর ফরেস্ট– দ্য আনএন্ডিং অ্যাট্রাকশন অব নেচার’ (অরণ্যের জন্য– প্রকৃতির চিরন্তন আকর্ষণ) শীর্ষক স্থাপনাশিল্পটির প্রদর্শনী। ৩০ বছরেরও বেশি সময় আগে অস্ট্রিয়ান শিল্পী ও স্থপতি ম্যাক্স পাইন্টনারের আঁকা ড্রইংয়ে অনুপ্রাণিত এই আয়োজন। সাত সপ্তাহ ধরে শহরে এমন আবহ মানুষকে আকর্ষণ করবে বলে স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষের আশা।
ক্লাউস লিটম্যান ড্রইংটি কিনতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেটি বিক্রি হয়ে গেছে আমেরিকান একটি শিল্পকর্ম সংগ্রহশালায়। তার লক্ষ্য, প্রকৃতি সম্পর্কে উপলব্ধি ও এর ভবিষ্যতের প্রশ্নে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেওয়া। তিনি মনে করেন, এমন একদিন হয়তো আসবে যেদিন বিশেষভাবে নকশা করা জায়গাতেই কেবল প্রকৃতি দেখা যাবে। যেভাবে প্রাণীরা এখন চিড়িয়াখানায় থাকে। স্থাপনাশিল্পটিকে সেই বার্তারই প্রতীক হিসেবে দেখা হচ্ছে।
স্থাপনাশিল্পটি দেখভাল করছে আনেয়া ল্যান্ডস্কেপ আর্কিটেকচার। আগামী ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত বন দেখার জন্য স্টেডিয়ামে বিনামূল্যে ঢোকা যাবে। দর্শনার্থীরা চাইলেই অপূর্ব এই শিল্পকর্ম উপভোগ করতে পারবেন। এটাই অস্ট্রিয়ার সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত স্থাপনাশিল্প। অক্টোবরের পর স্টেডিয়ামের কাছেই জনসাধারণের উন্মুক্ত স্থানে বনটি পুনরায় স্থাপন করা হবে।
অস্ট্রিয়ান ফুটবল দ্বিতীয় বিভাগের দল অস্ট্রিয়া ক্লাগেনফুর্টের হোমগ্রাউন্ড হিসেবে ব্যবহৃত হয় ওয়াদারজি স্টেডিয়াম। অস্থায়ী স্থাপনাশিল্প প্রদর্শনী চলাকালে দলটি কাছের কারাওয়ানকেনব্লিক স্টেডিয়ামে খেলছে।
সূত্র: বিবিসি, সিএনএন ট্রাভেল