X
মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫
১৭ আষাঢ় ১৪৩২
কলাবাগানে জোড়া খুন

সিসিটিভি ফুটেজ ও খুনিদের ফেলে যাওয়া ব্যাগই গোয়েন্দাদের ভরসা

জামাল উদ্দিন
২৮ এপ্রিল ২০১৬, ২২:৪০আপডেট : ২৮ এপ্রিল ২০১৬, ২২:৪৯

নিহত জুলহাজ মান্নান ও মাহবুব তনয় রাজধানীর কলাবাগানের জোড়া খুনের ঘটনায় আরও কয়েকটি সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। এসব সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে দুজন খুনিকে শনাক্ত করতে পেরেছেন তারা। একইসঙ্গে শনাক্ত করা খুনিদের অবস্থান জানারও চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা।  এখন পর্যন্ত এই সিসিটিভি ফুটেজ ও খুনিদের ফেলে যাওয়া ব্যাগই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন ও খুনিদের গ্রেফতারে মূল ভরসা। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা এমন তথ্য জানান।
এদিকে, আট ধরনের ব্যক্তিকে টার্গেটে রেখেছে জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলাম। গত ৮ এপ্রিল সংগঠনটির ওয়েব সাইটে দেওয়া ‘কে হবে আমাদের পরবর্তী টার্গেট?’ শিরোনামে লিফলেটে এই আট ধরনের ব্যক্তিকে টার্গেটে রাখার কথা বলা হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সিসিটিভি ফুটেজ ও খুনিদের  ফেলে যাওয়া ব্যাগটির আলামত ধরেই তারা খুনিদের শনাক্ত করে গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছেন। হত্যাকাণ্ডের কারণ হিসেবে গোয়েন্দারা মনে করছেন, সমকামীদের সংগঠিত করতে মূল ভূমিকা পালন করায় খুনিদের টার্গেটে ছিলেন জুলহাজ মান্নান। খুনিরা নিষিদ্ধ ঘোষিত  জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য বলেও তাদের ধারণা। আনসারুল্লাহ বাংলা টিম নিষিদ্ধ হওয়ার পর তারা নাম পরিবর্তন করে আনসার আল ইসলাম নামে কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, আগের ঘটনাগুলোর সঙ্গে জুলহাজ মান্নান ও মাহবুব তনয় হত্যাকাণ্ডের প্রায় শতভাগ মিল রয়েছে। উগ্রপন্থী দল আনসার আল ইসলামের  স্লিপার  সেল এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। ঘটনার পর খুনিদের একজন যে ব্যাগ ফেলে গেছেন, সেই ব্যাগটি তদন্তে খুবই সহায়ক হিসেবে কাজ করছে। খুনিদের দুটি মোবাইল ফোন থেকে তাদের অবস্থান ও যাদের সঙ্গে তারা নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন, তাদের ওপর নজরদারিতে রাখা হয়েছে।

উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার জঙ্গিদের

খুনিরা একে অন্যের সঙ্গে উন্নতমানের সফটওয়্যারের মাধ্যমে তথ্য আদান-প্রদান করতেন বলে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা। প্রটেক্টেড টেকস্ট ব্যবহারের ফলে তথ্য আদান-প্রদানের পর এক মিনিটের মধ্যেই তা মুছে যেত। প্রযুক্তির সহায়তায় সেসব মেসেজ উদ্ধারের চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা।

আরও পড়তে পারেন: আরও সময় চায় মোবাইলফোন অপারেটরগুলো, সিদ্ধান্ত শনিবার

তদন্ত কর্মকর্তারা জানান, খুনিরা রাজধানীর আদাবরের একটি বাসায় থাকতেন, এমন একটি ঠিকানা পেয়েছেন তারা। প্রায় দুই মাস আগে ৬-৭ জন তরুণ বাসাটি মেস হিসেবে ভাড়া নিয়েছিলেন। কিন্তু হত্যাকাণ্ডের পর ওই তরুণরা আর বাসায় ফিরে যাননি। গোয়েন্দারা ওই বাসায়ও তল্লাশি চালিয়েছেন। কিন্তু সেখান থেকে কিছুই পাননি তারা। তাদের ধারণা, আদাবরের ওই বাসায় খুনিরা অবস্থান নিয়ে জুলহাজ মান্নানকে অনুসরণ করেছেন। হত্যাকাণ্ডে পর তারা ওই বাসা ছেড়ে দিয়েছেন। বাসা ভাড়া নেওয়া তরুণরা ভাড়াটিয়াদের তথ্য ফরম পূরণ করেছিলেন কিনা, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

গোয়েন্দা পুলিশ এবং কাউন্টার টেরিরিজমের অন্তত পাঁচটি টিম খুনিদের ধরতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কাউন্টার টেরিরিজম ইউনিটের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার সাইফুল ইসলাম জানান, তারা বিভিন্ন কৌশলে খুনিদের ধরার চেষ্টা করছেন। খুনিদের ধরতে ডিবি ও কাউন্টার টেরিরিজমের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে। শিগগিরই খুনিদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

আরও পড়তে পারেন: শুধু বেতন নয়, ভাতার ওপরও কর দিতে হবে

গত সোমবার সন্ধ্যা পৌনে ছয়টায় রাজধানীর কলাবাগানের ৩৫, উত্তর ধানমণ্ডির আছিয়া নিবাসের দ্বিতীয় তলায় চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয় ইউএসএআইডি’র কর্মকর্তা জুলহাজ মান্নান (৩৫) ও তার বন্ধু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মাহবুব তনয়কে (২৫)। জুলহাজ সমকামীদের অধিকার-বিষয়ক সাময়িকী ‘রূপবান’-এর সম্পাদনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আর তনয় লোকনাট্য দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।

/এমএনএইচ/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট থেকে বেরিয়ে গেলো ছাত্র ফেডারেশন
গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট থেকে বেরিয়ে গেলো ছাত্র ফেডারেশন
জলবায়ু অভিযোজনে তরুণদের সম্পৃক্ত করতে ইউনিসেফের সঙ্গে কাজ করবে বাংলাদেশ
জলবায়ু অভিযোজনে তরুণদের সম্পৃক্ত করতে ইউনিসেফের সঙ্গে কাজ করবে বাংলাদেশ
শতবর্ষী গাছের গোড়ায় জ্বলছে আগুন, ডাল দিয়ে বের হচ্ছে ধোঁয়া!
শতবর্ষী গাছের গোড়ায় জ্বলছে আগুন, ডাল দিয়ে বের হচ্ছে ধোঁয়া!
আলকারেজের কষ্টের জয়, বিদায় মেদভেদেভের 
আলকারেজের কষ্টের জয়, বিদায় মেদভেদেভের 
সর্বাধিক পঠিত
সঞ্চয়পত্রে কমলো মুনাফার হার, কার্যকর ১ জুলাই থেকে
সঞ্চয়পত্রে কমলো মুনাফার হার, কার্যকর ১ জুলাই থেকে
তিন বিমানবন্দরে ১৬ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ হচ্ছে
তিন বিমানবন্দরে ১৬ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ হচ্ছে
ইস্টার্ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও পরিবারের ব্যাংক হিসাব জব্দ
ইস্টার্ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও পরিবারের ব্যাংক হিসাব জব্দ
রূপপুর প্রকল্পের ১৮ প্রকৌশলী অপসারণ: হাইকোর্টের রুল
রূপপুর প্রকল্পের ১৮ প্রকৌশলী অপসারণ: হাইকোর্টের রুল
অন্তর্বর্তী সরকার ও প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা মুখোমুখি
প্রশাসনে থামছে না আন্দোলনঅন্তর্বর্তী সরকার ও প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা মুখোমুখি