X
বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫
১৮ আষাঢ় ১৪৩২

চিনির হাতি-ঘোড়ার ঐতিহ্যে মানিকগঞ্জের বৈশাখী মেলা

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
১০ এপ্রিল ২০১৮, ১৬:০৯আপডেট : ১০ এপ্রিল ২০১৮, ১৬:১২

চিনির হাতি-ঘোড়ার ঐতিহ্যে মানিকগঞ্জের বৈশাখী মেলা বাংলা নতুন বছরকে বরণ করতে আয়োজিত বৈশাখী মেলার অন্যতম অনুসঙ্গ চিনির তৈরি হাতি, ঘোড়া, মটক, পাখি, নৌকা। এটি মানিকগঞ্জের প্রায় শত বছরের ঐতিহ্য। চিনি দিয়ে তৈরি হাতি-ঘোড়া প্রস্তুতের কাজে কারিগররা ভীষণ ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। পহেলা বৈশাখের পর থেকে মাস জুড়ে জেলার বিভিন্ন স্থানে বৈশাখী মেলা বসবে জেলার বিভিন্ন স্থানে। শুধুমাত্র বৈশাখ উপলক্ষে মানিকগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় অন্তত শতাধিক স্থানে বসবে মেলা। এসব মেলায় অন্যতম প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে চিনির তৈরির হাতি ঘোড়াসহ বিভিন্ন প্রানীর রূপের তৈরি চিনির তৈরি সাজ। শুধু মানিকগঞ্জ জেলায় নয় পার্শ্ববর্তী ১০টি উপজেলায় এই চিনির তৈরি সাজ সরবরাহ হচ্ছে। ভোর সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে সাজ তৈরির এই মহাযজ্ঞ।

স্থানীয়রা জানান, এখানকার গ্রামীণ মেলায় চিনির সাজ ও বিন্নি ধানের খই ছাড়া কল্পনা করা যায় না। সেই সাজ তৈরি করেই সংসার চালাচ্ছেন জেলার সাটুরিয়া উপজেলার কয়েক পরিবার।

মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটীর ভাটারা গ্রামের কয়েক বণিক পরিবার প্রায় ১৫০ বছর ধরে বিন্নির সাজ তৈরি করে সংসার চালাচ্ছেন। এ সাজ শুধুমাত্র একটি গ্রামেই তৈরি হয়।

চিনির হাতি-ঘোড়ার ঐতিহ্যে মানিকগঞ্জের বৈশাখী মেলা সাটুরিয়া উপজেলার ভাটারা গ্রামে গিয়ে কথা হয় সাজ তৈরির কারিগর শ্যামল এবং দিলীপ বণিকের সঙ্গে। তারা জানালেন সাজ তৈরিতে শুধু মাত্র চিনি লাগে। আর বড় বাতাসা বানাতে গেলে চিনির সঙ্গে আখের গুড় লাগে।

দিলিপ বণিক তৈরি পদ্ধতি জানাতে গিয়ে বলেন, প্রথমে বিশেষভাবে তৈরি করা পাতিলে চিনি জ্বাল দেওয়া হয়। চিনির সিরা তৈরি হলে গরম অবস্থায় সেটি  কাঠের ফ্রেমে ঢালা হয়। ১০ মিনিট পর বের করে আনা হয় চিনির সাজ।  

সাজ তৈরির পাশাপাশি কারিগররা কদমাও তৈরি করেন।  শুধু চিনি দিয়েই কদমা বানিয়ে  আকৃতি দিয়ে চিকন সুতা দিয়ে কেটে তৈরি করা হয়। শ্যামল বণিক জানান, চিনি দিয়ে মোট পাঁচ প্রকারের সাজ তৈরি করা হচ্ছে।

চিনির হাতি-ঘোড়ার ঐতিহ্যে মানিকগঞ্জের বৈশাখী মেলা আরেক কারিগর ভগবত বণিক জানান, আমাদের পৈত্রিক ব্যবসা এটি। তাদের মুরুব্বিদের কাছে তারা শুনেছেন, দেড়শত বছর ধরে চলে আসছে তাদের এই সাজ তৈরির কাজ। তিনি আরও জানান, আমরা বর্তমানে ৫টি পরিবার এ সাজ তৈরি করে আসছি। তিনি আরও বলেন,  বৈশাখি মেলা উপলক্ষে আমরা প্রায় ৩০০ মণ সাজ তৈরির অর্ডার পেয়েছি। আমরা প্রতি কেজি সাজ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা করে। খুচরো  ১০০-১২০ টাকা কেজি বিক্রি হয়ে থাকে। এক মণ সাজ তৈরি করতে খরচ হয় ২২শ’ টাকা। পাইকারি বিক্রি করা যায় ২৮ শ’ টাকা। বড় বাতাসা এক দিনে ২ মণ তৈরি করা যায়,আর সাজ তৈরি করা যায় ৪ মণ পর্যন্ত। সাজ তৈরির কাজ শেষ হলে সারা বছর এই পরিবার মিছরি তৈরির কাজ করে থাকে।

 

/এফএএন/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ইউক্রেনে কিছু অস্ত্রের সরবরাহ স্থগিত করলো যুক্তরাষ্ট্র
ইউক্রেনে কিছু অস্ত্রের সরবরাহ স্থগিত করলো যুক্তরাষ্ট্র
ঋতুপর্ণার জোড়ায় মিয়ানমারকে হারিয়ে প্রতিশোধ, মূল পর্বের কাছাকাছি বাংলাদেশ
ঋতুপর্ণার জোড়ায় মিয়ানমারকে হারিয়ে প্রতিশোধ, মূল পর্বের কাছাকাছি বাংলাদেশ
সিলেটের ডিসির প্রত্যাহার চেয়ে রাজপথে অবস্থান সাবেক মেয়র আরিফুলের
সিলেটের ডিসির প্রত্যাহার চেয়ে রাজপথে অবস্থান সাবেক মেয়র আরিফুলের
৮ আগস্ট ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ পালন না করতে প্রজ্ঞাপন
৮ আগস্ট ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ পালন না করতে প্রজ্ঞাপন
সর্বাধিক পঠিত
অবশেষে রিজার্ভে আইএমএফের লক্ষ্য পূরণ হলো
অবশেষে রিজার্ভে আইএমএফের লক্ষ্য পূরণ হলো
যারা ফেসবুক লাল করেছিল, তাদের জীবন লাল করে দেবে আ.লীগ: পার্থ
যারা ফেসবুক লাল করেছিল, তাদের জীবন লাল করে দেবে আ.লীগ: পার্থ
ইলিশের দাম নির্ধারণের প্রস্তাবে প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদন
ইলিশের দাম নির্ধারণের প্রস্তাবে প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদন
ক্যাম্পাসে নতুন সভাপতির প্রবেশ ঠেকাতে দুদিন পাঠদান বন্ধ!
ঢাকা সিটি কলেজক্যাম্পাসে নতুন সভাপতির প্রবেশ ঠেকাতে দুদিন পাঠদান বন্ধ!
পরীক্ষার প্রশ্নে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ, তদন্তে কমিটি
পরীক্ষার প্রশ্নে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ, তদন্তে কমিটি