X
মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫
৩ আষাঢ় ১৪৩২

‘ডিভোর্সের পর কীভাবে স্বাভাবিক জীবনে ফিরবো?’

জীবনে চলার পথে বিভিন্ন কারণে বিষণ্ণতা ঘিরে ধরতে পারে, থমকে যেতে পারে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। হতাশার এই সময়ে সঠিক দিকনির্দেশনা সাহায্য করতে পারে দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে। বাংলা ট্রিবিউনের নিয়মিত আয়োজনে আপনার মনের কথাগুলো শুনে প্রতি শনিবার পরামর্শ দেবেন মনোরোগ চিকিৎসক আতিকুল হক। পরিচয় গোপন রেখে যেকোনো ধরনের মানসিক টানাপোড়েনের বিষয় আমাদের জানাতে পারেন এখানে- [email protected]

জীবনযাপন ডেস্ক
০৮ জুলাই ২০২৩, ১৫:১৩আপডেট : ০৮ জুলাই ২০২৩, ১৫:১৩

প্রশ্ন: ডিভোর্সের পর কীভাবে স্বাভাবিক জীবনে ফিরবো? আমার বয়স ৩৫ বছর। সম্প্রতি ডিভোর্স দিয়েছি আমার স্বামীকে। অনেকদিন ধরেই মানসিকভাবে খারাপ ছিলাম। কিন্তু ডিভোর্সের পরে মনে হচ্ছে আরও খারাপ হয়ে যাচ্ছে মানসিক অবস্থা। হতাশা ঘিরে ধরছে চরমভাবে। মনে হচ্ছে আর স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবো না। সামাজিক চাপ তো আছেই। সব মিলিয়ে খুব খারাপ অবস্থায় পড়েছি। কোনও কাজেও আগ্রহ পাচ্ছি না। কী করবো?

উত্তর: ডিভোর্সের মানসিক প্রতিক্রিয়া অত্যন্ত জটিল এবং সুদূরপ্রসারী। তবে এখানে কিছু পরামর্শ দেওয়া হলো যা আপনার মানসিক অবস্থাকে  দ্রুত স্বাভাবিক পর্যায়ে নিয়ে আসতে সাহায্য করবে। প্রথমত, ডিভোর্স একটি বিচ্ছিন্নতার অনুভূতি তৈরি করে, যা আপনাকে হতাশা এবং দুঃখিত অনুভব করাতে পারে। এটি স্বাভাবিক এবং গুরুত্বপূর্ণ। মস্তিষ্ক আমাদের জীবনে সবসময় প্রিয়জনদের উপস্থিতি প্রত্যাশা করে। তাদের অনুপস্থিতিজনিত শূন্যতা পূরণ হতে সাধারণত ২ বছর সময় লাগে। আরও আগেও তা পূরণ হতে পারে যদি কারোর মনেবল বেশি হয়। আপনার মনেবল বেশি বলেই আপনি বিষয়টি শেয়ার করেছেন। দ্বিতীয়ত, সামাজিক যোগাযোগ বাড়াতে চেষ্টা করুন। পুরনো সম্পর্ক শেষ হয়ে যাওয়ার পরে আপনি খুবই একাকী বোধ করতে পারেন, যদিও এই অনুভূতি দীর্ঘস্থায়ী নয়। আপনার পরিবার, বন্ধু এবং প্রিয়জনদের সঙ্গে সময় কাটাতে চেষ্টা করুন। স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার জন্য সমাজে পুনরায় সম্পৃক্ত হওয়াটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তৃতীয়ত, আপনার স্বাস্থ্যের প্রতি মনোযোগ দিন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, যথেষ্ট ঘুম এবং নিয়মিত ব্যায়াম আপনার শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যে সাহায্য করবে। চতুর্থত, স্ট্রেস মোকাবিলা করুন। স্ট্রেস হ্রাস করার জন্য ধ্যান, শ্বাস নিয়ন্ত্রণ, ব্যায়াম বা অন্যান্য শারীরিক ক্রিয়াকলাপ অনুশীলন করুন। পঞ্চমত, কাউন্সিলিং এবং থেরাপি গ্রহণ করুন। একজন পেশাদার মানসিক চিকিৎসক বা সামাজিক কর্মী আপনাকে এই ট্রানজিশনাল সময় ধরে সাহায্য করতে পারে। তারা আপনাকে আপনার অনুভূতিগুলি প্রকাশ করতে এবং নতুন জীবনের জন্য তৈরি হতে সাহায্য করতে পারে।

প্রশ্ন: আমার বয়স ১৯ বছর। বাবা মা খুব কঠিন শাসনে রেখেছিলেন সারা জীবন। এখনও আমার কোনও স্বাধীনতা নেই। বাবা মায়ের সঙ্গে সম্পর্কও ভালো না। কলেজেও ভালো বন্ধু নেই। সব কিছুতেই বাবা মায়ের শাসন আর বারণে আমি খুবই হতাশ হয়ে পড়েছি। জীবন অনেক কঠিন মনে হচ্ছে।

উত্তর: আমি দুঃখিত যে আপনি এমন অনুভব করছেন। আপনার অনুভূতিগুলো সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ। এটি স্বাভাবিক যে বাবা-মায়ের কঠোর শাসনের ফলে আপনি হতাশ হওয়ার পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে পড়েছেন। তবে আপনার জন্য সুখবর হলো, আপনার মস্তিষ্কের নিজেকে পরিবর্তন করার ক্ষমতা অসাধারণ। এজন্যই আপনি আপনার সমস্যা সুন্দর ভাবে বুঝতে ও বুঝাতে পেরেছেন এবং এর সমাধান খুঁজেছেন। সুতরাং কঠোর অনুশাসনের ফলে আপনার মস্তিষ্কের যে ক্ষতি হয়েছে তা ধীরে ধীরে পূরণ হবে এবং আপনার সহনশীলতা ও অভিযোজন ক্ষমতাও বাড়তে থাকবে। পাশাপাশি কিছু পরামর্শ থাকছে আপনার জন্য। প্রথমত, শাসন ও বারণের বিষয়ে আপনার বাবা-মায়ের সাথে সরাসরি, অন্যান্য আত্মীয়-স্বজন বা পারিবারিক বন্ধু-বান্ধবদের মাধ্যমে আলোচনা করার চেষ্টা করুন। আপনার মনের অবস্থা তাদের জানানো ব্যাপারটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি মনে করেন যে তারা বুঝতে পারবেন না বা বুঝতে চাইবেন না, তাহলে একজন মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের সঙ্গে আলাপ করার চেষ্টা করুন ও তাদের সাথে পারিবারিক কাউন্সেলিং সেশনের জন্য আপনার পরিবারের সদস্যদেরকে উদ্বুদ্ধ করুন। দ্বিতীয়ত, স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণ করতে শিখুন। যোগা, ধ্যান, দীর্ঘশ্বাস নেওয়া ইত্যাদি পদ্ধতির মাধ্যমে মনোবল বাড়ান। স্ট্রেস হ্রাসের উপায় শিখুন। প্রাণায়াম, সংগীত শুনুন বা এধরনের কার্যক্রম চর্চা করুন যা আপনাকে শান্তি ও স্বাস্থ্যকর মনোভাব দিবে। তৃতীয়ত, সামাজিক যোগাযোগ বাড়ান এবং নতুন নতুন সামাজিক পরিমণ্ডল গড়ে তুলুন। সামাজিক জীবন গঠন এবং নিজের স্বাধীনতা পেতে সময় নিয়ে চেষ্টা করুন। শখের কাজ, খেলাধুলা ও অন্যান্য ক্রিয়াকলাপে যুক্ত হতে চেষ্টা করুন। এভাবে আপনি নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে পারবেন এবং নিজের স্বাধীনতা অনুভব করবেন। যাই হোক, যদি আপনি মনে করেন আপনার সমস্যা ধীরে ধীরে বেড়েই চলেছে এবং আপনি জীবনের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন বা বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়ছেন, তাহলে অবিলম্বে একজন মানসিক স্বাস্থ্য পেশাদারের সাথে যোগাযোগ করা খুব জরুরি।

/এনএ/
সম্পর্কিত
শরীর ঠান্ডা রাখতে কোন কোন খাবার খাবেন?
ডাবের পানি খেলে যেসব উপকার পাবেন
কাঁঠাল খেলে এত উপকার পাওয়া যায় জানতেন?
সর্বশেষ খবর
ইতিহাসে প্রথমবার তিন সুপার ওভার!
ইতিহাসে প্রথমবার তিন সুপার ওভার!
জি৭ শীর্ষ সম্মেলন ছেড়ে তাড়াতাড়ি বেড়িয়ে যান ট্রাম্প
ইরান-ইসরায়েল সংঘাতজি৭ শীর্ষ সম্মেলন ছেড়ে তাড়াতাড়ি বেড়িয়ে যান ট্রাম্প
পৃথক দুর্ঘটনায় দিনাজপুরের সড়কে ঝরলো ৩ জনের প্রাণ
পৃথক দুর্ঘটনায় দিনাজপুরের সড়কে ঝরলো ৩ জনের প্রাণ
টস জিতে ব্যাটিং নিয়েছে বাংলাদেশ
টস জিতে ব্যাটিং নিয়েছে বাংলাদেশ
সর্বাধিক পঠিত
নগরভবনে সভা করছেন ইশরাক, নামের সঙ্গে ‘মাননীয় মেয়র’
নগরভবনে সভা করছেন ইশরাক, নামের সঙ্গে ‘মাননীয় মেয়র’
ইরানে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা থেকে সরে দাঁড়ালো ভারত?
ইরানে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা থেকে সরে দাঁড়ালো ভারত?
ক্রিকেটার সাকিবসহ ১৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
ক্রিকেটার সাকিবসহ ১৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
ইরানের ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষমতা ‘অবমূল্যায়ন’ করেছে ইসরায়েল
ইরানের ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষমতা ‘অবমূল্যায়ন’ করেছে ইসরায়েল
শপথের সুযোগ নেই, পরিপক্ব আচরণ প্রত্যাশা করি: আসিফ মাহমুদ
শপথের সুযোগ নেই, পরিপক্ব আচরণ প্রত্যাশা করি: আসিফ মাহমুদ