প্রশ্ন: আমার বয়স ২৫ বছর। সদ্য বিয়ে করেছি। পারিবারিকভাবে বিয়ে ছিল। সমস্যা হচ্ছে আমি স্বামীকে কিছুতেই ভালোবাসতে পারছি না। এমন না যে সে খুব খারাপ মানুষ। সে যথেষ্ট ভালো, তার পরিবারও ভালো। কিন্তু আমি শুধু বিরক্ত হই সবকিছুতেই। নতুন পরিবেশন, নতুন মানুষজন আমার একেবারেই ভালো লাগছে না। আমি মন থেকে বিরক্ত হয়ে আছি। বারবার মনে হচ্ছে বিয়ে করে ভুল করেছি। দিন গেলে ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যাবে এমন পরামর্শ দিচ্ছে আমার কাছের মানুষজন। কিন্তু আমার মনে হচ্ছে দিনদিন আমি আরও অসহ্য হয়ে উঠবো সব কিছুর প্রতি।
উত্তর: ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আমরা কেউই নিশ্চিতভাবে কিছুই জানিনা। সুতরাং ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা-কল্পনা করে কোনও লাভ নেই। জীবনে চলার পথ আঁকাবাঁকা সর্পিল। অথচ আমাদের চিন্তাভাবনা সরলরৈখিক। তাই জীবনের গতিপথ আমাদের কাছে প্রায়ই দুর্বোধ্য মনে হয়। এই মুহূর্তে আপনি যে ধরনের মনঃকষ্টে ভুগছেন, তা অন্যদের কাছে বাড়াবাড়ি মনে হলেও আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আপনি আপনার মন কী বলে সেটা শুনুন। নিজের উপর জোর খাটাবেন না। নিজের সকল আবেগ অনুভূতিকে যেটা যেরকম সেটা সেরকমভাবেই আপন করে নিন। তাহলে আপনার ক্ষোভ, যেদ, বিরক্তি, ঘৃণা এসব আপনার বশীভূত হয়ে যাবে। তারা আপনার উপর কোনও ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তার করতে পারবে না। আর আপনার বিবাহিত জীবনের ভবিষ্যৎ কী হবে তা আমরা কেউই জানি না। এখন সেটা নিয়ে ভাবনার কিছু নেই। যা হওয়ার সেটাই হবে। ভবিষ্যৎ অজানাই থাকুক। অজানার মাঝেই রোমাঞ্চ!
প্রশ্ন: আমার বয়স ৩৯ বছর। আমার কোনও কারণ ছাড়াই মন খারাপ লাগে। বিষণ্ণতা কাজ করে। কোনও কাজেই আনন্দ পাই না। সবাইকে হাসিখুশি দেখলে আরও কষ্ট লাগে। কিন্তু মন খারাপের কারণ খুঁজে পাই না। কী করবো?
উত্তর: আপনার মন খারাপের ব্যাপারটাকে আমরা ডিজথাইমিয়া বলতে পারি, যার সুনির্দিষ্ট কোনও কারণ নেই। অন্তর্মুখী স্বভাবের এবং আবেগপ্রবণ মানুষেরা এতে বেশি আক্রান্ত হয়। মন খারাপের কারণ খোঁজার কোনও প্রয়োজন নেই, যেহেতু এর সুস্পষ্ট কোনও কারণ থাকে না। এটাকে আপনার স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য হিসেবে আত্মস্থ করে নিন। তাহলেই এর মধ্য দিয়ে আপনার অসাধারণ প্রতিভার স্ফুরণ ঘটবে। সুখকে আমরা যেমন ভালোবাসি, দুঃখকেও তেমনি আমাদের অপরিহার্য আবেগ হিসেবে ভালোবাসতে হবে। তাহলেই দুঃখের তীব্রতা কমে যাবে। মন খারাপ এবং মন ভালো থাকা একে অপরের পরিপূরক। এভাবে চর্চা করতে থাকলে আপনার ভেতরে ধীরে ধীরে একটা প্রশান্তি চলে আসবে। এভাবে চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে সেই ব্যর্থতাকে মেনে নিন। এভাবে চেষ্টা করতে থাকলে না মেনে নেওয়ার মতো কিছুই আপনার কাছে থাকবে না।