যখন রঙ-উৎপাদনকারী কোষগুলো পিগমেন্ট তৈরি করা বন্ধ করে দেয়, তখন চুল ধূসর হয়ে যায়। এক সময় নির্দিষ্ট বয়স পার হলে তবেই কালো চুলের ভেতর উঁকিঝুঁকি দিতে দেখা যেত ধূসর চুলের। তবে আজকাল নানা কারণে খুব কম বয়সেই চুলে পাক ধরে যায়। দেখা যায় ত্রিশ পার হতে না হতেই সাদা হতে শুরু করেছে চুল। কেন এমনটি হয় জানেন?
- ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিনের একটি রিপোর্ট বলছে, চুলের ফলিকলগুলোতে অক্সিডেটিভ ক্ষতির কারণ হতে পারে সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি। নিয়মিত প্রখর রোদ লাগার কারণে অকালে পাক ধরতে পারে চুলে।
- ভিটামিন বি-৬, বি-১২ এবং ভিটামিন ডি এর ঘাটতি হলে অকালে ধূসর হয়ে যেতে পারে চুল- বলছে মেডিক্যাল নিউজ টুডের একটি খবর। ডেভেলপমেন্ট জার্নালে ২০১৫ সালের একটি প্রতিবেদনে ভিটামিন বি, ভিটামিন ডি এবং কপারের ঘাটতি চুল ধূসর হয়ে যাওয়ার কারণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, পুষ্টির ঘাটতি পিগমেন্টেশনকে প্রভাবিত করে।
- ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব ট্রাইকোলজিতে প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় ২৫ বছরের কম বয়সী তরুণদের চুল ধূসর হওয়ার কারণগুলো বিবেচনায় আনা হয়। এর মধ্যে ছিল সিরাম ফেরিটিনের কম মাত্রা। এটি শরীরে আয়রন সঞ্চয় করতে সহায়তা করে। এছাড়া ভিটামিন বি ১২ এর অভাবজনিত কারণের কথাও উল্লেখ করা হয়।
- মানসিক চাপ বা স্ট্রেসের কারণেও অকালে চুলের রঙ সাদা হয়ে যেতে পারে। টাইমস অব ইন্ডিয়ার একটি রিপোর্ট বলছে, মনস্তাত্ত্বিক চাপ মেলানোসাইট (রঙ্গক তৈরির জন্য দায়ী কোষ) ক্ষয় করতে পারে, যার ফলে চুলের রঙ নষ্ট হয়ে যায়।
- ওয়েব এমডিতে প্রকাশিত একটি খবর বলছে, ভিটামিন সি এর ঘাটতির কারণে অনেক ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে চুল দুর্বল হয়ে যাওয়া ও সাদা হতে শুরু করা। তারপর ধীরে ধীরে চুল পড়তেও শুরু করে। সঠিক সময়ে এর চিকিৎসা না হলে টাক পড়ে যাওয়াও বিচিত্র কিছু নয়।
- ধূমপান ও মদ্যপান অকালে চুল পাকার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তামাকের ধোঁয়ার ক্ষতিকারক রাসায়নিক চুলের ফলিকলকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এবং মেলানিন উৎপাদন ব্যাহত করতে পারে। শরীরের জন্য অত্যাবশ্যক পুষ্টির ক্ষয় হয় মদ্যপানের কারণে। প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং খনিজগুলোর শোষণে হস্তক্ষেপ করে সামগ্রিক স্বাস্থ্যের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে এই অভ্যাস।
- জেনেটিক কারণেও আগে আগে চুলে পাক ধরতে পারে।
- কপার এবং আয়রনের ঘাটতিও চুল দ্রুত পেকে যাওয়ার কারণ হতে পারে বলে জানিয়েছে ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিন।
- অপর্যাপ্ত ঘুম চুলের ধূসর হওয়ার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে পারে। ঘুমের অভাব চুলের স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন ক্রিয়াকলাপকে ব্যাহত করতে পারে।
- দূষিত পরিবেশে থাকা বিষাক্ত পদার্থের কারণে চুল ধূসর হয়ে যেতে পারে তাড়াতাড়ি। আবার চুলের জন্য ব্যবহৃত প্রসাধনীতে থাকা রাসায়নিকের কারণেও চুলে পাক ধরতে পারে সময়ের আগে।