X
শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫
২৬ বৈশাখ ১৪৩২
রেজাউদ্দিন স্টালিনের কবিতা

বিবিধ ঘটনাবলির যোগসূত্র

সৈয়দ হাসমত জালাল 
২২ নভেম্বর ২০২৩, ০১:১২আপডেট : ২২ নভেম্বর ২০২৩, ০১:৩৮

১.
সম্প্রতি ঢাকায় একটি কবিতাসভায় রেজাউদ্দিন স্টালিনের কণ্ঠে শুনেছি তাঁর 'বিজ্ঞানী যেভাবে রাজসভা ছেড়ে যায়' কবিতাটি। এটি যে তাঁর বেশ জনপ্রিয় কবিতা, তা শ্রোতাদের প্রতিক্রিয়া দেখে বুঝতে অসুবিধে হয়নি। কবি হিসেবে স্টালিন দেশ, সময়, রাজনীতি সম্পর্কে যেমন সচেতন, তেমনি যুক্তিবোধ এবং বিজ্ঞানমনস্কতা তাঁর কবিতাকে দিয়েছে লক্ষ্যণীয় স্বাতন্ত্র্য।

আলোচ্য কবিতাটিতে দেখি, মহামান্য শাসক যা-যা করতে বলেন,  তাঁর সভার এক বুড়ো বিজ্ঞানী নিমেষের মধ্যেই তা পালন করে। যেমন, রাজার নির্দেশে সে শূন্যে ফুটিয়ে তোলে নীল গোলাপ, অমাবস্যাকে বানিয়ে দেয় পূর্ণিমা। তবুও রাজার বিষাদ এবং আকাঙ্ক্ষা ঘোচে না। তিনি হয়ে উঠতে চান ইতিহাসের চেয়েও বড়। এবার বিজ্ঞানী আর তা পালন করে না। 'ইতিহাস হচ্ছে এক অমোঘ সত্য' বলে নত মস্তকে সে রাজসভা ছেড়ে ধীরে চলে যায়, 'যেখানে পৃথিবী সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে'। কবিতার অন্তিম পঙক্তিতে পৌঁছে কবি প্রকৃতপক্ষে অতিক্রম করে যান দেশ ও কালকে। এক চিরকালীন সত্যকে তুলে ধরে এই কবিতা।

স্টালিনের কবিতা সরল বাক্যবন্ধে তৈরি, কিন্তু তার ব্যঞ্জনা কবিতার নিহিত বোধেকে দেয় বিপুল পরিব্যাপ্তি। তাঁর কবিতা যেমন দুরূহ নয়, তেমনি অন্যদিকে তা পাঠের পর অনুভূতির গভীরে অনুরণন তোলে, সে কারণেই এইসব কবিতা পাঠকপ্রিয়তা অর্জন করেছে। সমাজ-বাস্তবতাকে নিরীক্ষণ করার ক্ষমতা আছে স্টালিনের, তার সঙ্গে মিশে থাকে সংবেদনশীলতা। ফলে তাঁর কবিতায় বক্তব্য থাকলেও তা নিছকই বক্তব্য নয়। বিভিন্ন চিত্রকল্প ও ধ্বনির ব্যঞ্জনায় তা শিল্পিত রূপ পায় বলেই তা হয়ে ওঠে কবিতা। তাঁর ব্যবহৃত গদ্যধর্মীতা কাব্যরস সৃষ্টির ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে ওঠে না।

স্টালিনের সাম্প্রতিক কয়েকটি কবিতা পড়ার সুযোগ হয়েছে আমার। তার মধ্যে একটি কবিতা 'ফাঁসির মঞ্চ থেকে'। নামটি দেখে প্রথমেই এক মুহূর্ত চমকে উঠতে হয়। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের সময় আমরা ফাঁসির মঞ্চের কথা পড়েছি, যেখানে হাসিমুখে অথবা প্রসন্ন চিত্তে উঠে গিয়েছেন দেশপ্রেমিক বিপ্লবীরা। উত্তম পুরুষে লেখা কবিতার কথক কারাবন্দী এবং তার মনে পড়ে— তার মা বলতেন, 'কবিতা লিখে ভাত হয় না'। কথক আজ সাহসী এবং সে প্রশ্ন করতে পারে, 'যারা কবিতা লেখে না/ তাদেরও কি ভাত হয়'? এ এক অমোঘ প্রশ্ন।

বোঝা যায়, এখনও বিশ্বজুড়ে বহু মানুষের মৃত্যু ঘটে ক্ষুধায়, এ যে সভ্যতার লজ্জা, সেই লজ্জাকেই পাঠকমনে সঞ্চারিত করতে চেয়েছেন কবি। কোনও শাসকই ক্ষুধায় মানুষের মৃত্যুর কথা স্বীকার করে না। আমাদের এই উপমহাদেশে তো নয়ই। তবে কথককে কেন ফাঁসিতে প্রাণ দিতে হচ্ছে, সে কথা এখানে উহ্য রেখে পাঠকের নিজের মতো করে ভেবে নেওয়ার একটা পরিসর তৈরি করে দিয়েছেন কবি। কখনো কথকের কথা হয়ে ওঠে কবির নিজের কথা— 'আমার যা কিছু কবিতা/ সবই তাদের জীবনের সারাংশ/ আমি শুধু সাজিয়েছি সত্যের অক্ষয় কালিতে'।

সত্য বলাই তো কবিতার কাজ। আর কবি সেই সত্যের পথ ধরে হাঁটতে থাকেন অবিচল। তা-ই কবির ধর্ম। এখানে উপরোক্ত তিনটি ছোট সরল পঙক্তিতে কবি যে কথা উচ্চারণ করেছেন, তা আর কবির ব্যক্তিগত কথা হিসেবে আবদ্ধ থাকে না। তা হয়ে ওঠে নৈর্ব্যক্তিক এবং কবিতার চিরকালীন সত্য। কবিতাটি যেখানে শেষ হচ্ছে, সেখানে কথক এগিয়ে যাচ্ছে বধ্যভূমির দিকে। আর মিনিট খানেকের মধ্যেই তার ফাঁসি হবে। সেরকম মুহূর্তে সে একই সঙ্গে দৃঢ় প্রত্যয়ে এবং নির্লিপ্তিতে স্বগতোক্তির মতো বলে, 'এরই মধ্যে আমি পতনপ্রবণ এক জাতির জন্য/ অগ্নিগর্ভ মৃত্যুর উদাহরণ ছাড়া কী রেখে যাবো'। 'পতনপ্রবণ' শব্দটি বিশেষভাবে লক্ষ্য করার মতো। এই পতন আসলে মানবিক বোধের, নৈতিকতার। আর 'অগ্নিগর্ভ মৃত্যু' হয়ে ওঠে এসবের বিরুদ্ধে এক মৃত্যুহীন প্রাণের প্রতিবাদ। এই কবিতায় কোথাও উচ্চকিত হয়ে ওঠা নেই, আবেগের বাহুল্য নেই। যা আছে তা হলো, সত্য উপলব্ধির এক নিষ্কম্প বিশ্বাস ও আত্মপ্রত্যয়।

২.
ছন্দ এবং অন্ত্যমিলে রচিত তাঁর একটি কবিতা 'ভস্ম থেকে ফেরা'। চার পঙক্তির এক-একটি স্তবক এবং সাতটি স্তবকে নির্মিত এই কবিতা মনে করিয়ে দিচ্ছে সিরিয়া, ইউক্রেন, ফিলিস্তিনের যুদ্ধের কথা। যুদ্ধের ভয়ংকর উত্তাপের কথা প্রকৃতি ও পারিপার্শ্বিক পরিবেশের সহজ সরল রূপকল্পের মধ্যে দিয়ে উঠে এসেছে এখানে। দুপুরে রোদ ঝরে পড়ছে বৃষ্টির মতো, কোথাও হাওয়া নেই, পায়ের সঙ্গে পথের ধুলো জ্বলছে। সাম্প্রতিক কালের প্রতিটি যুদ্ধেই দেখা যাচ্ছে হাজার হাজার শিশুর মর্মন্তুদ মৃত্যুর দৃশ্য। কবি বলছেন, 'যুদ্ধে পোড়া শিশুর কত জ্বর,/ মাপবে কিসে প্রকৃত সন্তাপ?' সহজ পঙক্তি বিন্যাস ও উপমার ব্যবহার এই কবিতাটির অন্যতম বৈশিষ্ট্য। যেমন, 'সিরিয়া আর য়্যুক্রেনের লোক,/ তাওয়ার পরে হচ্ছে রুটি রোজ।' 

স্টালিনের কবিব্যক্তিত্বের একটি বিশেষ দিক হলো, বিশ্বের বিবিধ ঘটনাবলীর সঙ্গে যোগসূত্র গড়ে তোলে তাঁর কবিতা। তাই এইসব ঘটনার উত্তাপ যেমন অনুভব করে বাংলাদেশ, তেমনি সেই উদ্বেগ কোথাও একাকার হয়ে যায় ফিলিস্তিনে কিংবা চিনে অথবা তাইওয়ানে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মানুষের জীবনপ্রবাহ এমনই অবিনশ্বর যে এই আগুন-বোমার মধ্যেও 'মানুষ প্রসব করে আশা'। আর ভস্মের মধ্যে থেকে তারা ঘরে ফিরে আসে। তবে এই প্রসঙ্গে একটি কথা উল্লেখ করতে চাই। এই কবিতায় জীবনের সংকটের কথা এসেছে গভীরভাবেই, কিন্তু শেষে যেভাবে আশাবাদ ব্যক্ত হয়েছে তা খানিকটা সরল সদিচ্ছা ও প্রথানুগ বলে মনে হয়েছে।

স্টালিনের কবিতার আর একটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো, তিনি সহজেই বাস্তব থেকে পরাবাস্তব, কখনো-বা জাদুবাস্তব চিত্রকল্পের মধ্যে পৌঁছে দেন পাঠককে। 'ফেনার রাজ্য' কবিতায় এরকম অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়। কবিতার প্রথম স্তবকেই কবি আগ্রহ জাগিয়ে তোলেন এইভাবে— 'গতদিন যাকে বৃদ্ধ দেখেছি/ আজ সে যুবক/ যাকে মৃত ভেবে দাফন করা হয়েছিল/ সে হাঁটছে আঙিনায়/ পা ছিল না এমন হতভাগা দৌড়াচ্ছে মাঠে'। এর পরবর্তী পঙক্তিগুলিতে যে চিত্রকল্প ফুটে উঠেছে তা যেন পূর্বোক্ত চিত্রকল্পগুলির এক আশ্চর্য সম্প্রসারণ, এক ব্যাপ্তি ও বিস্ময়ের মুখে দাঁড় করিয়ে দেয় পাঠককে—'ধুধু বালিয়াড়ি আজ/ সমুদ্রের ফেনায় উচ্ছ্বসিত/ মৃত মাছ লাফিয়ে নদীতে স্নান করছে'।

পুরাণ, মিথ কিংবা ইতিহাসের খণ্ড খণ্ড ঘটনাকে সাবলীলভাবে কবিতায় ব্যবহার করেন স্টালিন। এই কবিতায় দেখা যায় অর্জুন, রাধা ও কৃষ্ণকে তাদের জীবনের সম্পূর্ণ বিপ্রতীপ ঘটনার মধ্যে। অন্ধ কবি তামিরিস দেখতে পান আলো। আর লোলচর্ম জুলেখা ধীরে ধীরে হয়ে ওঠে যুবতী । এখানে বাস্তবের যুক্তি নয়, কাজ করছে রহস্যময় শৈল্পিক বোধের যুক্তি। কিন্তু শেষ স্তবকের একটি মাত্র পঙক্তি কবিতাটিকে পৌঁছে দিয়েছে একটি চূড়ান্ত স্তরে। কবি বলছেন, 'কিন্তু ঈসাকে এখনো ক্রুশ থেকে নামানো হয়নি'। ক্রুশবিদ্ধ ঈসা বা যীশুর চিত্রকল্প এখানে অসামান্য চমক সৃষ্টি করলেও তা পূর্ণতা দিয়েছে সমগ্র ভাবনাকে। মানবতার প্রতীক  ঈসা বা যীশু ক্রুশবিদ্ধ থেকেই গেছে। আমরা আমাদের মানবতার বোধকে ক্রুশ থেকে এখনো মুক্তি দিতে পারিনি। বিপরীত দিক থেকে কবি এখানে আমাদের একেবারে বাস্তবের ভূমিতে এনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন।

জীববৈচিত্র্য নিয়ে একদিন গড়ে উঠেছিল পৃথিবী। এই বিশ্বপ্রকৃতির মধ্যে মানুষ তো বিপুল প্রাণিজগতের অন্তর্ভুক্ত, তার অংশীদার মাত্র। কিন্তু মানুষ আজ হয়ে উঠেছে এই প্রাণিজগতের প্রভু, শাসক। প্রকৃতিকেও শাসন করছে সে, নষ্ট করে ফেলছে প্রকৃতির ভারসাম্য। ধ্বংস করছে সবুজ বৃক্ষ, অরণ্য, নদী, পাহাড়। তার ফলে বনের প্রাণীরা ঢুকে পড়ছে লোকালয়ে তাদের খাদ্যের সন্ধানে। মানুষ তাদের পুরে ফেলছে চিড়িয়াখানায়, কাউকে গৃহপালিত করে রাখছে, তাদের কাউকে আবার খেলা শিখিয়ে উপার্জন করছে অর্থ।

এই নির্মম বাস্তবতাকে রেজাউদ্দিন স্টালিন তুলে এনেছেন তাঁর 'বাঘ বিড়াল অথবা বানর' কবিতায়। চিড়িয়াখানার বিশাল খাঁচায় বন্দী হয় বাঘ। বেড়াল অবশ্য গৃহস্থের মনে মায়া জাগিয়ে ঠাঁই পায় তাদের ঘরে। এইখানে অসাধারণ চিত্রকল্প তৈরি করেছেন কবি— 'আমার থাবায় মাছিও মরে না/ টেবিলে শুয়ে থাকি/ ক্ষুধার্ত বইয়ের চিৎকার আমাকে সন্ত্রস্ত করে তোলে/ আমি খাটের নিচে লুকোই/ আর ঘুমিয়ে পড়ি শত বছরের নির্জনতায়'। আর বানরকে বেঁধে ফেলে চাবুক চালিয়ে শেখানো হয় খেলা। তার অনিচ্ছার কসরত বিক্রি করে মানুষ, যে আসলে তার ভাই। দিনের শেষে ক্লান্ত হতভাগ্য বানর ভাবে— 'এই একটাই পৃথিবী আমরা সবাই এক/ চাঁদ আর সূর্য ভাই-ভাই'।

তবে কবিতাটি পড়া শেষ হলে একটি অনিবার্য ভাবনা ঘুরতে থাকবে পাঠকের মনে। তা হলো, বাঘ, বেড়াল কিংবা বানরের প্রতীকে কোথাও কি প্রতিফলিত হচ্ছে না বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষেরই জীবন! একজন কুশলী কবির কবিতায় এই বহুমাত্রিকতা থাকাই স্বাভাবিক।

৩.
স্টালিনের কবিতায় সময়ের সংকট যেমন প্রতিফলিত হয়, সে সংকট বিশ্বজনীনও, তারই মধ্যে থাকে বোধের গভীর থেকে উঠে আসা প্রতিবাদ, হিংসা ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে মানবিক ন্যায়-নীতি-ভালোবাসা আর জীবনের অমিত শক্তির উপর প্রগাঢ় বিশ্বাস। তাই  'উঠে দাঁড়াতে হবে' কবিতার শুরুতেই স্পষ্ট উচ্চারণে তিনি বলেন, 'আদেশের অপেক্ষা না করে/ উঠে দাঁড়াতে হবে/ যে আদেশের অপেক্ষা করে/ সে পরাধীন/ শিরশ্ছেদের পরও/ নিজেকে প্রতিফলিত করতে হবে রক্তের ব্যাসার্ধ পর্যন্ত'। অসম্ভব প্রত্যয়ী এই উচ্চারণ। এক নৈর্ব্যক্তিক জীবন-দর্শন— 'প্রলয়ের পর সময় শুধু একা দাঁড়িয়ে থাকে/ ভাবো স্পার্টাকাসের কথা শিরশ্ছেদের পর আজো/ সে দাঁড়িয়ে আছে'।

'একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে' কবিতাটি যেন বিশ্বব্যাপী প্রতিটি মানুষের সংকট ও স্বপ্নের কথা। কবিতাটি শুরু হয় এইভাবে— 'ঠিক মতো কিছুই হয় না/ বাড়ি থেকে বেরুনোর সময়/ দরোজার মুখে কুলুপ আঁটা হয় না'। এরকম অনেক কিছুই ঠিকঠাক হয় না। এই কবিতায় স্টালিন অনায়াসে নৈপুণ্যে ব্যবহার করেছেন চমকপ্রদ আধুনিকোত্তর রূপকল্প। কিন্তু তার মধ্যেই বিশ্বসভ্যতার যে সংকট তাকে সরাসরি তুলে আনেন তিনি নির্ভার পঙক্তিমালায়, অথচ তা পড়তে পড়তে ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে সমস্ত অনুভূতি— 'তা বলে পৃথিবীর কোনো কিছু থেমে নেই/ পরাশক্তির ক্ষেপণাস্ত্র/ আঘাত হানছে বৃষ্টির ফোঁটায়/ ইসরাইল টেনে লম্বা করছে রক্তের রেখা/ চিনের মৌমাছিরা সিল্করোডে সাজোয়া যান নিয়ে ছুটে যাচ্ছে/ ইউক্রেনের সব গম খেয়ে ফেলছে রুশট্যাঙ্ক/ আমেরিকা জুতোর তলায় রোধ করে রেখেছে/ ফ্লয়েডের দৃষ্টি'।

বিশ্বজীবনের প্রতি একজন কবির নিবিড় পর্যবেক্ষণ থাকা খুব জরুরী। কবির থাকা প্রয়োজন সেই সংবেদন যার মধ্যে নিঃশব্দে ধ্বনিত হবে মানুষের ক্লেশ ও কান্না, স্বপ্ন ও উজ্জীবনের অযুত বর্ণচ্ছটা। স্টালিনের কবিতায় সেই নিরীক্ষণ ও সংবেদনের পর্যাপ্ত পরিচয় আমরা পাই। তাই এই কবিতার শেষে বেজে ওঠে মানুষের চিরন্তন অপেক্ষা ও আকাঙ্ক্ষার দুর্মর উচ্চারণ— 'ভাবছি হয়তো একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে'।

আধুনিকোত্তর সময়ে মানুষের জীবন ও সভ্যতা ক্রমশ জটিলতর রূপ ধারণ করেছে। প্রযুক্তির যান্ত্রিকতা মানুষকে করে তুলেছে বিচ্ছিন্ন, আত্মপর। পুঁজিবাদী রাষ্ট্রব্যবস্থা মানুষের মধ্যে ক্রমশ বাড়িয়ে তুলছে অর্থনৈতিক বৈষম্য। বাড়ছে আগ্রাসী যুদ্ধের প্রবণতা। ভোগবাদী সংস্কৃতি বদলে দিয়েছে সমাজ জীবনকে। বিশ্বায়নের পৃথিবী মানুষকে উপড়ে ফেলছে তার নিজস্ব শেকড়ের সংস্কৃতি থেকে। অথচ অধিকাংশ সাধারণ মানুষ তা অনুধাবন করতে পারছে না। ফলে ব্যক্তিগত সম্পর্ক থেকে বৃহত্তর জীবন সর্বত্রই ঘনীভূত হচ্ছে নানা ধরনের সংকট। খুব সচেতন এবং সংবেদনশীল একজন কবি, শিল্পী বা সৃজনশীল মানুষ পারেন শিল্পের মধ্যে দিয়ে এই পরিস্থিতির কথা তুলে ধরতে, মানুষের মনকে জাগ্রত করতে। রেজাউদ্দিন স্টালিনের কবিতার মধ্যে সেই শিল্পপ্রয়াস পরিলক্ষিত হয়, যা সমাজের পক্ষে কল্যাণকর, যা পাঠককে আশ্বস্ত করে।

/জেড-এস/
সম্পর্কিত
বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে রাজধানীতে আ.লীগের ঝটিকা মিছিল
আজ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন
প্রিয় দশ
সর্বশেষ খবর
যেভাবে বানাবেন কাঁচা আমের টক-মিষ্টি-ঝাল আমসত্ত্ব 
যেভাবে বানাবেন কাঁচা আমের টক-মিষ্টি-ঝাল আমসত্ত্ব 
এক যুগ আগে নিখোঁজ বিএনপিনেতার বাসায় পুলিশ: ডিএমপির দুঃখ প্রকাশ, এসআই প্রত্যাহার
এক যুগ আগে নিখোঁজ বিএনপিনেতার বাসায় পুলিশ: ডিএমপির দুঃখ প্রকাশ, এসআই প্রত্যাহার
হাফ ভাড়া নিয়ে তর্ক, কলেজশিক্ষার্থীকে বাস থেকে ফেলে হত্যার অভিযোগ
হাফ ভাড়া নিয়ে তর্ক, কলেজশিক্ষার্থীকে বাস থেকে ফেলে হত্যার অভিযোগ
মঞ্চ থেকে হলো জুমার আজান,  নামাজের পর বক্তব্য দেবেন নেতারা
মঞ্চ থেকে হলো জুমার আজান, নামাজের পর বক্তব্য দেবেন নেতারা
সর্বাধিক পঠিত
জার্সি পরেই যমুনার সামনে দায়িত্বে রমনার ডিসি মাসুদ আলম
জার্সি পরেই যমুনার সামনে দায়িত্বে রমনার ডিসি মাসুদ আলম
‘সাবেক রাষ্ট্রপতির দেশত্যাগে জড়িতদের শাস্তি দিতে না পারলে আমি চলে যাবো’
‘সাবেক রাষ্ট্রপতির দেশত্যাগে জড়িতদের শাস্তি দিতে না পারলে আমি চলে যাবো’
নৌ পুলিশের অভিযানে ২৭৬ জন গ্রেফতার, ১০ মরদেহ উদ্ধার
নৌ পুলিশের অভিযানে ২৭৬ জন গ্রেফতার, ১০ মরদেহ উদ্ধার
জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন থেকে পদত্যাগ করলেন স্নিগ্ধ
জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন থেকে পদত্যাগ করলেন স্নিগ্ধ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে ৫৬ জনের পদত্যাগ, তুলেছেন দুর্নীতির অভিযোগ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে ৫৬ জনের পদত্যাগ, তুলেছেন দুর্নীতির অভিযোগ