X
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪
১৫ বৈশাখ ১৪৩১

নতুন বই ছাড়াই বইমেলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টল

আবিদ হাসান
০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৩:০৪আপডেট : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:২২

বইমেলা মানেই প্রকাশনাগুলোর নতুন বই প্রকাশ। মেলায় প্রকাশনীগুলো অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যই থাকে বই বিক্রি করে লাভবান হওয়া। মেলায় অংশগ্রহণ বাড়ছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর। তবে কোনও নতুন বই প্রকাশ ছাড়াই অংশগ্রহণ করছে তারা।

অমর একুশে বইমেলা ২০২৪-এর ষষ্ঠদিন, মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে মেলায় গিয়ে দেখা গেছে, বইমেলা একাডেমি প্রাঙ্গণে স্টল দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। এরমধ্যে রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও একমাত্র প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রথমবারের মতো অংশগ্রহণ করেছে ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি।

মেলায় এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশনার ক্যটাালগ সংগ্রহ করে দেখা যায় মেলায় নতুন কোনও প্রকাশনা নেই৷ তবে স্টলের দায়িত্বরত কর্তাব্যক্তিরা জানান, মেলায় বই বিক্রি নয়, প্রকাশনা ও প্রচারণার উদ্দেশ্যেই অংশ গ্রহণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। তারা জানান বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশনা, জার্নাল ও তাদের ফ্যাকাল্টিদের প্রকাশনাগুলো প্রদর্শনীর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়কে মানুষের সামনে তুলে ধরতেই মেলায় স্টল দিয়েছেন তারা। বিক্রির কোনও উদ্দেশ্যই থাকেনা তাদের।

বইমেলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার মুনীর আহমেদ ভুঁইয়া বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ফ্যাকাল্টিতে কী কী গবেষণা হচ্ছে, কারা কী কাজ করছেন সেগুলো প্রদর্শনীর মাধ্যমে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে তুলে ধরা৷ আমাদের বিক্রির কোনো উদ্দেশ্য নেই।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, আমাদের বই সারা বছরই থাকে। আমাদের প্রকাশনার নিজস্বরুম আছে। বিক্রি হলে হলো, না হলে নাই। এনিয়ে আমাদের মাথা ব্যথা নেই। আর আমরা মেলায় শুধু প্রদর্শনীর জন্যই অংশগ্রহণ করি। তাই মেলায় নতুন বই নিয়ে তাই ঐরকম চিন্তাও থাকে না।

কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বরত রাসেল হোসেন বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়কে তুলে ধরতেই মেলায় অংশগ্রহণ করি৷ এখানে আমাদের প্রচার-প্রচারণাই তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়। অন্য প্রকাশনীগুলোর মতো আমাদের লাভ করার কোনো উদ্দেশ্য থাকে না। আর তাই মেলা উপলক্ষ্যে বই প্রকাশের তাড়াও নেই।

ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ডেপুটি লাইব্রেরিয়ান কুমার বিশ্বাস বলেন, আমরা শুধুই প্রকাশনী প্রদর্শনীর জন্যই অংশগ্রহণ করেছি। এছাড়াও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি সম্পর্কিত তথ্য দিই শিক্ষার্থীদের।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টলের দায়িত্বরত মো. এনামুল হক বলেন, আমরা বই বিক্রি না, শুধু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে তুলে ধরতেই মেলায় অংশগ্রহণ করি।

নতুন বই

অমর একুশে বইমেলা ২০২৪-এর ষষ্ঠ দিন মেলায় নতুন বই এসেছে ১০৮টি। এরমধ্যে গল্প ১০, উপন্যাস ১৪, প্রবন্ধ ৫, কবিতা ৪৫, গবেষণা ৪, ছড়া ১, শিশুসাহিত্য ১, জীবনী ৪, রচনাবলি ১, মুক্তিযুদ্ধ ৩, বিজ্ঞান ১, ইতিহাস ১, রাজনীতি ১, বঙ্গবন্ধু ৩, ধর্মীয় ৪, অনুবাদ ১, অভিধান ১ ও অন্যান্য ৮টি।

মূল মঞ্চের আয়োজন

বিকেল ৪ টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয়েছে স্মরণ: মুহম্মদ মনসুর উদ্দীন শীর্ষক আলোচনা সভা। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জফির সেতু। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন শাহিদা খাতুন ও সৌমিত্র শেখর। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আবদুল খালেক।

প্রাবন্ধিক জরিফ সেতু বলেন, বাংলা লোকসাহিত্য ও সংস্কৃতিচর্চার অন্যতম পথিকৃৎ মুহম্মদ মনসুর উদ্দীনের জন্ম ও কর্মপরিসর বিশ শতকে। তিরাশি বছরের জীবনে তিনি সংস্কৃতিসাধনায় মগ্ন ছিলেন তেষট্টি বছর। জীবনের এই দীর্ঘ পরিসরে বাংলা লোকসাহিত্য ও সংস্কৃতিচর্চায় যে অবদান তিনি রেখে গেছেন তা তুলনারহিত।

তিনি ছিলেন মূলত লোকসাহিত্য ও লোকসংস্কৃতির সংগ্রাহক, সংরক্ষক, সম্পাদক ও প্রকাশক। এছাড়া লোকসাহিত্যের পাঠবিশ্লেষণ, লোককবিদের জীবন অন্বেষণ, লোকসাহিত্যের তাত্ত্বিক বিষয় ও বিভিন্ন ধারার শ্রেণিবিচারসহ নানাবিধ আলোচনার মাধ্যমে বাংলা লোকসাহিত্যের বিশ্লেষণেও মনোযোগী ছিলেন।

সভাপতির বক্তব্যে আবদুল খালেক বলেন, লোকসাহিত্য সংগ্রাহক ও গবেষক মুহম্মদ মনসুর উদ্দীন লোকসাহিত্যের প্রতি মানুষের আগ্রহ জাগ্রত করার জন্য কাজ করেছেন। লোকসাহিত্যের স্রষ্টা গ্রামের সাধারণ মানুষের সঙ্গে তিনি সহজেই মিশে যেতে পারতেন। লোকসাহিত্য পরিমণ্ডলে তিনি যে অসাধারণ কীর্তি রেখে গেছেন, তা বাঙালি সংস্কৃতিকে আলোকিত করেছে।

লেখক বলছি

লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন প্রাবন্ধিক খান মাহবুব, শিশুসাহিত্যিক শেলী সেনগুপ্তা, গবেষক নিগার চৌধুরী ও কবি আহমেদ শিপলু।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি সাজ্জাদ আরেফিন, ফারহান ইশরাক ও সৌম্য সালেক। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়, ঝর্ণা সরকার ও মো. কামাল হোসেন। দলগত আবৃত্তি পরিবেশন করেন জাহাঙ্গীর চৌধুরীর পরিচালনায় আবৃত্তি সংগঠন 'উদ্ভাস আবৃত্তি সংগঠন'।

এছাড়াও ছিল কাঙাল মজিবরের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন 'কাঙাল হরিনাথ সাংস্কৃতিক সংগঠন'-এর পরিবেশনা। সংগীত পরিবেশন করেন কণ্ঠশিল্পী নারায়ণ চন্দ্র শীল, বিমল বিশ্বাস, সাধিকা সৃজনী তানিয়া, শান্তা সরকার, শ্যামল কুমার পাল, আজমা সুরাইয়া শিল্পী ও শারমিন সুলতানা।

বুধবারের সময়সূচি

অমর একুশে বইমেলার সপ্তম দিন, বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি)  মেলা শুরু হবে বিকেল ৩টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিকেল ৪ টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে স্মরণ: গোবিন্দ চন্দ্র দেব শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন অধ্যাপক প্রদীপ কুমার রায়। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন জয়দুল হোসেন ও সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক।

/এসএইচএম/
সম্পর্কিত
লাল কৃষ্ণচূড়া, বেগুনি জারুলে ছুঁয়ে যায় তপ্ত হৃদয়
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
কোড সামুরাই হ্যাকাথনের দ্বিতীয় পর্বের ফল প্রকাশ, ৪৬ দল নির্বাচিত
সর্বশেষ খবর
বন ও বনভূমি রক্ষায় কর্মকর্তাদের নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
বন ও বনভূমি রক্ষায় কর্মকর্তাদের নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
মোনাকোর হারে লিগ ওয়ান চ্যাম্পিয়ন পিএসজি
মোনাকোর হারে লিগ ওয়ান চ্যাম্পিয়ন পিএসজি
বাজারে এলো বাংলা ভাষার স্মার্টওয়াচ ‘এক্সপার্ট’
বাজারে এলো বাংলা ভাষার স্মার্টওয়াচ ‘এক্সপার্ট’
চার বছরে আট ফ্লপ, আসছে আরও এক হালি!
চার বছরে আট ফ্লপ, আসছে আরও এক হালি!
সর্বাধিক পঠিত
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
প্রাথমিক বাদে সোমবার ৫ জেলার সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ
প্রাথমিক বাদে সোমবার ৫ জেলার সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ