বাদামি কিশোরীদের কৃষ্ণচূড়া হয়ে বাঁচতে নেই বেশিদিন
হাইমেন ছেঁড়ার আর্তনাদে ঘুম ভাঙ্গল কিশোরীটির
সেদিন বুঝেছিলাম শুরু হয়ে গেছে পর্ণমোচীর মৌষলকাল
রাগ, দুঃখ, হতাশা ছাপিয়েও মনে জেগেছিল
এক বিস্বাদ নিরাপত্তার অনুভব—আর যাই হোক আমি তো কৃষ্ণচূড়া নই।
সজীব কৃষ্ণচূড়ার মতো সদ্য ঋতুমতী কিশোরীর দেহ,
যেসব রাক্ষসদের রিরংসার বস্তু তাদের থেকে মুক্তি পেয়ে গেছি আমি।
জেনে গেছি প্রেমের চেয়ে ক্ষুধা বেশি বাস্তব।
এই তো সেদিন কৃষ্ণচূড়ার ডালে ঝুলছিল এক কিশোরীর সদ্য গজানো স্তন।
বাদামি রাঙা সে স্তন আমাকে চুপিচুপি বলেছিল
‘রিরংসার কোনো শেষ নেই, রাক্ষস বদলায় কিন্তু রিরংসা বদলায় না।’
ঘুমোতে পারি না আমি
চোখ বন্ধ করলেই দেখতে পাই কিশোরীটির কৃষ্ণচূড়া যোনি।
একদিন এক কমিউনিস্ট প্রেতাত্মা আমায় ডাকল ঘুমঘোরে,
‘শুধু অন্ধকার আর রক্তের স্বপ্ন কেন দেখো? প্রেম দেখতে পাও না তুমি?’
আমি বললাম, ‘কোথায় প্রেমিক পাচ্ছ? চারদিক শুধুই ক্ষুধার শ্বাপদ।’
আমি লিলিথ, তোমার অনুগত ইভ নই
হৃদয়ের খুব কাছের হাঁড়টি থেকে জন্ম হয়নি আমার।
স্বভাবে, জ্ঞানে, গুণে, বিদ্যায় ও কর্মে
তোমার সমকক্ষতাই হয়েছিল আমার পাপ।
মানতে পারোনি, এক নারীর সমকক্ষতা
তোমার কাচের চেয়েও বেশি ঠুনকো
আত্মগরিমায় লেগেছিল পুরুষতান্ত্রিক বিষাক্ততার আঘাত।
তাই তোমাদের ওই একতরফা বিশ্বাস আমায় করল অভিশপ্ত।
তোমাদের ওই পুরুষতান্ত্রিক পবিত্রতায় জায়গা হয়নি আমার।
আজ আমি অভিশপ্ত লিলিথ যাকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারার
আফসোসে তোমাকে পুড়তে হয় আজো।
আমি ইভ নই যে নরম ফুলের মতো মনটাকে তুমি নিয়ন্ত্রণে
রাখতে পার নিজের অভ্যাসে।
আমি মরুর ক্যাকটাস লিলিথ, যেমন বন্য ভালোবাসার
আস্বাদ দিতে পারি, তেমনি ভালোবাসার নামে
নিয়ন্ত্রণের শিকলে বাঁধলে, স্যাকিউবাস হয়ে
শুষে নিতে পারি শেষ হৃদয়বিন্দু।