X
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪
১৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রথম বই নিয়ে কথা

সদ্যসমুজ্জ্বলের ‘সম্পর্ক’

সাক্ষাৎকার গ্রহণ : রফিকুজ্জামান
০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৬:৪৩আপডেট : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৬:৪৬

অমর একুশে গ্রন্থমেলায় প্রকাশিত হয়েছে সদ্যসমুজ্জ্বলের প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘সম্পর্ক’। একই সঙ্গে মূল বাংলা ও ইংরেজি অনুবাদে মলাটবন্দি করে বইটি প্রকাশ করেছে অনুপ্রাণন প্রকাশন। অনুবাদ করেছেন নির্মল রায়, প্রচ্ছদ করেছেন আইয়ুব আল আমিন। গ্রন্থমেলায় অনুপ্রাণনের ২৩১-২৩২ নম্বর স্টলে পাওয়া যাবে বইটি।

প্রথম বই প্রকাশের অনুভূতি এবং সাহিত্য-ভাবনা নিয়ে সদ্যসমুজ্জ্বল কথা বলেছেন বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে। সদ্যসমুজ্জ্বলের ‘সম্পর্ক’

বই প্রকাশের সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন কীভাবে?

বই প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নিই ২০০৪ সালে। এসএসসি পরীক্ষা দেবো তখন। পাণ্ডুলিপিও তৈরি করছিলাম একটা। বাবাকে জানাই বিষয়টা। বাবা খুবই আগ্রহ দেখান। পাণ্ডুলিপি পড়তে চান। ঐ প্রথম বাবা আমার কবিতা পড়েন। কয়েকদিন পর আমাকে ডেকে বলেন, ‘অনেক ভালো কবিতা লিখেছিস। বই প্রকাশ করা দরকার। কিন্তু আরও একটু সময় নিয়ে প্রকাশ করলে ভালো হবে।’ শুনে খুব মন খারাপ হয়েছিলো। যাইহোক, বাবার কথার অবাধ্য হইনি। পড়ালেখায় মন দিই। এসএসসি রেজাল্ট খুব ভালো হয়। রেজাল্টের তাগিদ অনুভব করি এইচএসসিতেও। পরে বাংলা সাহিত্যে অনার্সের ছাত্র হিসেবে ভর্তি হওয়ার পর বুঝতে পারি বাবা কেন সময় নিতে বলেছিলেন। সব বুঝতে পেরে ২০০৩ সালে প্রস্তুত করা পাণ্ডুলিপি নিজেই বাতিল করি। তারপর সময় নিয়ে নতুন রূপে পড়তে ও লিখতে শুরু করি। এভাবে সময় নিতে নিতে ২০২০ পর্যন্ত লেগে গেলো বই প্রকাশের সিদ্ধান্তে আসতে।

 

কবিতাই কেন লিখলেন? ভাব প্রকাশের জন্য শিল্পের আরও তো মাধ্যম আছে।

কবিতা লেখার শুরুটা কীভাবে হয়েছে তা এখন মনে করতে পারি না। তবে বড় বয়সে মনে হয়েছে কবিতা আরোগ্য লাভের অন্যতম উপায় আমার কাছে। কবিতার মতো আমাকে কেউ সুস্থ করতে পারে না। কবিতা আমাকে বেঁচে থাকতে সাহায্য করে। তাই কবিতা লিখতেই হয়। আর অন্য মাধ্যমের কথা যদি বলেন, দুটি গল্প লিখেছি এখন পর্যন্ত, নাটক লেখায় হাত দিয়ে বাদ দিয়েছি। আরও প্রস্তুতি দরকার। তবে নাটক লিখবো। ওখানে সরাসরি কথা বলা যায়।

 

বই প্রকাশ করা একজন লেখকের জন্য কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ? বিষয়টাকে আপনি কীভাবে দেখেন?

বিষয়টা আপেক্ষিক। বই প্রকাশ করতেই হবে তেমন কোনো কথা নেই। অনেকে গোটা জীবনে একটিও বই প্রকাশ করেননি। তাদের বই প্রকাশিত হয়েছে মৃত্যুর পর। তবে আমি জীবদ্দশায় বই প্রকাশ করার পক্ষ। কারণ যারা প্রগতির চর্চা করেন, তাদের সবার চিন্তার সঙ্গে পরিচিত হওয়া সম্ভব নয়। তাই বইই হতে পারে পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়ার অন্যতম মাধ্যম।

 

পাণ্ডুলিপি গোছানোর ক্ষেত্রে কোন কোন বিষয়কে গুরুত্ব দিয়েছেন?

সম্পর্ক কোথায় নেই? পারিপার্শ্বিক সবকিছুর সঙ্গেই আমাদের সম্পর্ক রয়েছে। এই সম্পর্কগুলো খুবই নিবিড় এবং স্পর্শকাতর। একটি নবজাতকের শরীরের সঙ্গে সম্পর্কের তুলনা করা যেতে পারে। আমাদের খুব সাবধান থাকতে হয় সবসময়, না-হলে যেকোনো মুহূর্তে ঘটতে পারে বিপত্তি। সম্পর্কের রূপ সবসময় একই রকম। তাই সঠিক পরিচর্যা না করা গেলে সম্পর্ক ঠুনকো হয়ে যায়। এসব বিবিধ বিষয় মাথায় রেখেই ‘সম্পর্ক’ নির্ণয় করার চেষ্টা করেছি।

 

অনেকে বলেন লিখতে আসলে একটি প্রস্তুতির প্রয়োজন হয়। সেক্ষেত্রে নিজের প্রস্তুতি সম্পর্কে কী বলবেন?

যতদূর মনে পড়ে, ১৯৯৮ সালে প্রথম কবিতা লিখেছিলাম। তখন থেকে শুরু। আগেই বলেছি, এসএসসি পরীক্ষার আগে বই প্রকাশ করার ঝোঁক উঠেছিল। ২০০৭ সাল পর্যন্ত প্রচুর লিখেছিলাম পরে অবশ্য সেগুলো সব বাতিল করেছি। তাই বলতে গেলে প্রস্তুতি যদি বলেন, তবে সেটা ২০০৮ সাল থেকে। তাছাড়া বাংলা সাহিত্যের ছাত্র হওয়ায় পড়াশোনাটা আলাদাভাবে করতে হয়নি। তবে আলাদা করে পাশ্চাত্য সাহিত্য পড়তে হয়েছে, দুটি মহাকাব্য ও কিছু নাটক ব্যতীত।

 

সমসাময়িকদের সঙ্গে নিজের অবস্থানকে কীভাবে দেখেন?

সমসাময়িকরা অনেক ভালো লিখছেন। এদের অনেকের কবিতা আমার খুব প্রিয়। নিজেকে ঋদ্ধ করতে তাদের কবিতা নিয়মিত পড়ি। তাদের সঙ্গে নিজের অবস্থান? সেটা খুব ভারী বিষয়। এই বিষয়টা সময়ের হাতে ছেড়ে দিয়েছি। সময়ই বলে দেবে আমার অবস্থান কী! ঘ্রাণ থাকলে এমনিতে ছড়াবে। না থাকলে শুকিয়ে যাবে। এটাই নিয়ম।

 

আপনার নিজের লেখার প্রতি আত্মবিশ্বাস কেমন?

শতভাগ আত্মবিশ্বাসী। নিজের ভালো লেগেছে বলেই তো কবিতার বই প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত। লেখাটা প্রথমে নিজের ভালো লাগতে হবে। তারপর মনে হয় বই প্রকাশ করার সিদ্ধাতে আসা ভালো। তবে নিজের প্রতি সন্দেহ এড়িয়ে যেতে পারি না।

 

শিল্প অথবা পাঠক বিতর্কে কাকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন?

কোনোটাকে কম গুরুত্বপূর্ণ মনে করি না। লেখককে শিল্পের দিকে প্রথম নজর দেয়া দরকার। শিল্প না হলে সময়, কাগজ, কালি, অর্থ ব্যয় করা অনর্থক। আর পাঠক? ‘জাত পাঠক’-এর অভাব নেই। মূলত যারা ‘জাত পাঠক’ হতে চায় কিংবা হয়ে গেছে তারাই কবিতা চর্চা করে, এদের কেউ কেউ কবিতা লেখে। জাত পাঠকই একজন কবিকে প্রকৃতঅর্থে মূল্যায়ন করতে পারে। কবিতা পাঠককে আমি ‘এলিট শ্রেণির’ মানুষ মনে করি। সাহিত্যের যেকোনো শাখার ক্ষেত্রে শিল্প বা পাঠক কাউকেই তুচ্ছ মনে করার সুযোগ নেই। যদিও আমি পাঠকের কথা চিন্তা করে এখনও কিছু লিখিনি, শুধু শিল্প অর্থাৎ নিজের আনন্দকে প্রাধান্য বেশি দিই।

 

অধিকাংশ লেখক বইমেলাকে কেন্দ্র করে বই প্রকাশ করে, বিষয়টাকে আপনি কীভাবে দেখেন?

বইমেলা আমাদের প্রাণের মেলা। এ মেলার জন্য আমরা মুখিয়ে থাকি। আমার মনে হয় বইমেলাতে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণের জন্য এসময় সবাই বই প্রকাশ করে।

//জেডএস//
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যাঞ্চলে টর্নেডোর আঘাতে নিহত ৫
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যাঞ্চলে টর্নেডোর আঘাতে নিহত ৫
মাহিন্দ্র উল্টে চালকসহ ২ জন নিহত
মাহিন্দ্র উল্টে চালকসহ ২ জন নিহত
শিক্ষাবিদ প্রণব কুমার বড়ুয়ার মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
শিক্ষাবিদ প্রণব কুমার বড়ুয়ার মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল ঘোষণা নিউজিল্যান্ডের
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল ঘোষণা নিউজিল্যান্ডের
সর্বাধিক পঠিত
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
থেমে যেতে পারে ব্যাংকের একীভূত প্রক্রিয়া
থেমে যেতে পারে ব্যাংকের একীভূত প্রক্রিয়া
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
প্রাথমিক বাদে সোমবার ৫ জেলার সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ
প্রাথমিক বাদে সোমবার ৫ জেলার সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ