গাছ
যত ধোঁয়া ধোঁয়া সত্য সব এই শহরেই দেখেছি,
দৃঢ় হতে হয় বলে জেনেছি আরও স্বতন্ত্র, আরও ‘আমি’!
অনেক অন্ধকারের শৈশব, ফাঁকা পেছন-বাড়ি, তুতফল গাছ।
পিঠে ঠেস দেওয়া দেয়াল সরে গেলে ভেবেছি অতীত।
চোখ বুজে হেলে পড়তাম যে মানুষের উপর,
তারা হারালেও গাছ হতে পেরেছি।
অন্ধকারের অতীত থাকা ভালো!
তাতে আঁধারে ভয় কমে, গাছেদের মতো!
হাসপাতাল
অনেক সত্যের মধ্য থেকে
যে একটা সত্যকে নিচ্ছো তুমি
তোমার জন্মের ইতিহাসে,
জেনে রেখো
বাকিগুলো সাপ হয়ে উঠছে
মেঘদূত,
ধীরে ধীরে।
তারপর একটা প্রাচীন গর্ত বয়ে নিয়ে বেড়াই আমরা!
তোমার উজ্জ্বল চোখ ছাড়া আর সব যেখানে মৃত!
যেসমস্ত দিনে হতাশাগ্রস্ত ঘটনারা অবশ করে দিচ্ছে।
একশ একটা ঘটনার ঘোড়া শরৎকাল শোনাচ্ছে।
তখন মেঘদূত,
তোমার খিল খিল হাসির তোড়ে ভেসে যাচ্ছে অভিমান।
আমার সখের তৈজসের মতন সাজানো থাকছে
গাছ, ফুল, সাইকেল আর নিয়ন বাতির গান...
ভিন্ন ভিন্ন মুখ
‘এইভাবে আর দেখা হবে না’—আমাকে প্রথম বলেছিল স্বপ্না বৌদি। তারপর আমিও বলেছি কাউকে। দেখেছি একই মানুষের সাথে বারংবার দেখা হলেও সেই মানুষের সাথে দেখা হয় না আর। স্বপ্না বৌদি ঘর ছেড়ে চলে গিয়ে ফিরে এসে দেখেছে নিজের পালা বাছুরেও তার দাবি নাই।
কেবল ভরদুপুরে একটা কুকুর আজও আসে যাকে সে খেতে দিয়েছিল রোজ। কুকুরের মতন এমন স্মৃতি ধরে রাখা মানুষ খুঁজতে খুঁজতে স্বপ্না বৌদি পুকুরে নাই হয়ে গেল সেইবার।
ঋতুস্রাবের ঘোর
১.
কোনো জল ভেঙে আসবে কি আসবে না কেউ কোনো কালে
তার জন্য প্রতি মাসে কুঁকড়ে যাচ্ছে আদিম শরীর অহেতুক!
২.
ঋতুস্রাবের ঠিক আগ মুহূর্তে মনে হয় গর্ভ পূর্ণ...
এরূপে প্রতি মাসে
গর্ভ পূর্ণ হতে হতে গর্ভ ফাঁকা হয়ে যায়!
বাসা
একটা ঘরে মানুষ ফিরতেই পারে,
থাকতেই পারে, বাস করতেই পারে রোজ।
তবুও ঘর মানেই বাসা হয় না সবার।
বাসা মানে মানুষেরা জানে—
তুমি কী খেতে ভালোবাসো,
কেমন করে উঠো, ঘুমাও, রাত জাগো।
বাসা মানে কাটা ফেলার ঝুড়িটাও তোমার চেনা।
তাতেও না দেখে উচ্ছিষ্ট ঢেলে দিলে ঠিকঠাক পড়ে,
ছড়িয়ে যায় না।
বাসা মানে
মানুষেরা তোমার চোখ দেখেই বুঝতে পারে তুমি কষ্টে আছো।