তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীর যতটা না ঘরের মানুষ ছিলেন, তার চেয়ে বেশি শিল্পের মানুষ ছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন চলচ্চিত্র নির্মাতা নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু।
শনিবার (১৩ আগস্ট) চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদ এবং বিশিষ্ট সাংবাদিক ও সিনেমাটোগ্রাফার মিশুক মুনীরের প্রয়াণ দিবসের স্মরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ আয়োজিত ‘স্মৃতি ও চলচ্চিত্রে: তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীর’ শীর্ষক স্মৃতিচারণমূলক ও উন্মুক্ত চলচ্চিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
টিএসসি সংলগ্ন ‘সড়ক দুর্ঘটনা স্মৃতি স্থাপনা’ প্রাঙ্গণে আয়োজনটি করা হয়। এ সময় ছিলেন– প্রয়াত নির্মাতা তারেক মাসুদের স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদ, প্রয়াত সাংবাদিক মিশুক মুনীরের স্ত্রী মঞ্জুলী কাজী, চলচ্চিত্র নির্মাতা নাসিরুদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, প্রসূন রহমানসহ তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরের পরিবারের সদস্য, ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও সহকর্মীরা।
তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরের চলচ্চিত্র সংগ্রামের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে চলচ্চিত্রকার নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু বলেন, ‘চলচ্চিত্র একটা সাধনার বিষয়। চলচ্চিত্রকর্মী হতে কায়িক শ্রম লাগে। পদ্মা বা যমুনা নদীর চরে মাটি কাটা শ্রমিকদের যে কষ্ট করতে হয়, চলচ্চিত্রকর্মীদের তার থেকে বেশি কষ্ট করতে হয়। তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীর এই কাজ করার সাহস করেছিলেন। কারণ তারা আদর্শিক মানুষ ছিলেন। তারা যত না ঘরের মানুষ ছিলেন, তার চেয়ে বেশি ছিলেন শিল্পের মানুষ।’
আলোচনা পর্বে ক্যাথরিন মাসুদ তার বক্তব্যে বলেন, ‘তারেক ও মিশুকের এক আলাদা সম্পর্ক ছিল। তারা কাজের মধ্য দিয়ে সৃজনশীল যাত্রায় প্রমাণ রেখেছে।’
তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরের স্মৃতিস্তম্ভ নিয়ে নিজেদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা চাই আপনারা এই ‘স্মৃতি’র সঙ্গে থাকেন। আমরা আরও কাজ করতে চাই। আমরা চাচ্ছি, ঢাকা শহরের কোলাহলের বাইরে মানুষ এখানে বসে চিন্তা করবে। তারেক মিশুকের মতো ভাবতে পারবে।’
আলোচনা সভা শেষে তাদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হয়। এরপর টিএসসির পায়রা চত্বরে প্রসূন রহমানের নির্মাণে তারেক মাসুদকে নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র ‘ফেরা’ (২০১২), তারেক মাসুদের নির্মিত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘নরসুন্দর’ (২০০৯) এবং তথ্যচিত্র ‘আদম সুরত’ (১৯৮৯) প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে আয়োজন শেষ হয়।