X
বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪
২৫ বৈশাখ ১৪৩১

‘ইতিহাস লিখছি, জীবিত অবস্থায় প্রকাশ করলে মেরে ফেলবে’

জাবি প্রতিনিধি
২৬ জানুয়ারি ২০২৩, ১৮:১১আপডেট : ২৬ জানুয়ারি ২০২৩, ১৮:১১

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাবেক উপাচার্য ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম উপাচার্যের দায়িত্বে থাকাকালীন তার সাথে ঘটে যাওয়া সব ঘটনা নিয়ে বই লেখা শুরু করেছেন। তবে জীবিত অবস্থায় বইটি প্রকাশ করলে তিনিসহ তার ছেলেকে মেরে ফেলা হবে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি।

বুধবার (২৫ জানুয়ারি) জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে ভোট দিতে এসে সাংবাদিকদের সাথে সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন দেশের প্রথম এই নারী উপাচার্য।

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসনকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, 'ইতিহাস অন্য রকম। এখন আমি সেই ইতিহাস লিখছি। আমার জীবদ্দশায় আসবে না। লিখে এমন জায়গায় বস্তাবন্দি করে রাখবো যে কেউ পাবে না। আমার জীবদ্দশায় হলে এরা আমাকে তো মারবেই, আমার ছেলেকে শুদ্ধ মারবে।'

ফারজানা ইসলাম বলেন, ‘আমি তো এবার ধরবো। আমার সময় কেন এতো আন্দোলন হলো? প্যানেল নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলাম। আমার অভিষেক অনুষ্ঠানের দিন কেন গুলি ফুটানো হলো? সেসময় আমার কী দোষ ছিল। আমি কী এতোই খারাপ ছিলাম?'

সমাবর্তনের বিষয়ে সাবেক এই উপাচার্য আক্ষেপ করে বলেন, 'সমাবর্তন প্রতি বছর হওয়া উচিত। আমি এর আগেও এটা বলেছি। কিন্তু আমার সময় বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে অস্থিতিশীল পরিবেশ ছিল। আমার সময় এত আন্দোলন কেন হয়েছে? এটার কারণ সাংবাদিকেরা বের করতে পারলে তারা সার্থক হবে। এখন একবেলা আন্দোলন হয় না। তখন প্রো-ভিসিরাও আমাকে প্রোটেক্ট করেনি৷ আমি কী এতোই খারাপ ছিলাম?’

তিনি বলেন, 'প্রক্টর আমাকে সেসময় রক্ষা করেনি কিন্তু বর্তমান প্রশাসনকে রক্ষা করে যাচ্ছেন। বর্তমান প্রশাসন কীভাবে এসেছিল? প্রো-ভিসি কীভাবে হয়েছেন তিনি। তিনি ভিসি হওয়ার সময় আমি কী তার জন্য সুপারিশ করিনি?'

তার বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের ব্যাপারে তিনি বলেন, 'দুদক তদন্ত করেছে না কে করেছে? কোন সে দিল আফরোজা বেগম (ইউজিসি সদস্য) কী বলেছে—সেসব আমার কানে এসেছে। উনি তো আমাদের সবকিছুতেই বাধা দেন। দর্শন বিভাগে ৬ জন শিক্ষক নিয়োগের বোর্ডটাকে তিনি বাধা দিয়েছিলেন নিয়মকানুন জানেন না বলে। আমরা হাইকোর্টে আপিল করে সেটা ছাড় পাই। সবসময় যে ইউজিসির মেম্বাররা আমাদের চেয়ে বেশি জানেন এটা নয়। তারা এখানে পড়ান না। পাবলিক ইউনিভার্সিটির স্ট্যাটিউটগুলোর কিছু জানেনই না।'

উন্নয়ন প্রকল্পের দুই কোটি টাকা ঈদ সালামির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যে টাকা ছাড় হয়নি সেটা আমি কীভাবে খরচ করে ফেললাম? এটা বলা ঠিক না। এটা যদি আমার সময়ে কেউ করে থাকে— কাউকে খুশি করতে এর দায়-দায়িত্ব আমি নিবো না।’

শিক্ষা বিভাগের অডিট নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অডিটের প্রশ্নটিই অবান্তর। এর উত্তর তারা যেভাবে দিয়েছে আমি মনে করি সেটাই জাস্টিফাইড।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের দুইটি অংশ এক হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, 'দু’টি অংশ ভেতরে ভেতরে এক ছিল। এখন প্রকাশ্যে এক হওয়ার অনুমতি পেয়েছে; অনেক সময় নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা হয়তো অনুমতি দেন না বলে এক হতে পারে না। কিন্তু আদর্শগত দিক থেকে তো আগে থেকেই এক ছিল। এখন একটা সুযোগ হয়েছে এক হওয়ার—এটা ভালো।'

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনে সর্বোচ্চ সংখ্যক ভোট পান অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম। এরপর ২ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও  রাষ্ট্রপতির আদেশে দেশের প্রথম নারী উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান তিনি। প্রথম মেয়াদে দায়িত্ব পালনের পর ২০১৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি আচার্যের নির্বাহী আদেশে দ্বিতীয় মেয়াদে নিয়োগ পান ফারজানা ইসলাম। গত বছরের ১ মার্চ তার মেয়াদ শেষ হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) ও বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলমকে উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব দেওয়া হয়।

/এমএস/
সম্পর্কিত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের গাছে ঝুলছিল যুবকের লাশ
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের দাবিতে সারা দেশে ছাত্রলীগের বিক্ষোভ
উন্নয়নের নামে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪০০ গাছ কাটার পরিকল্পনা 
সর্বশেষ খবর
মঙ্গোলিয়ার দাবাড়ুকে হারিয়ে ফাহাদের মুখে হাসি
মঙ্গোলিয়ার দাবাড়ুকে হারিয়ে ফাহাদের মুখে হাসি
চেয়ারম্যান হলেন ৯ এমপির স্বজন, হেরেছেন দুজন
চেয়ারম্যান হলেন ৯ এমপির স্বজন, হেরেছেন দুজন
পিছিয়ে পড়েও জোসেলুর জোড়া গোলে ফাইনালে রিয়াল
চ্যাম্পিয়নস লিগপিছিয়ে পড়েও জোসেলুর জোড়া গোলে ফাইনালে রিয়াল
চেয়ারম্যান হলেন এমপির ছেলে ও ভাই
চেয়ারম্যান হলেন এমপির ছেলে ও ভাই
সর্বাধিক পঠিত
শনিবারে স্কুল খোলা: আন্দোলন করলে বাতিল হতে পারে এমপিও
শনিবারে স্কুল খোলা: আন্দোলন করলে বাতিল হতে পারে এমপিও
‘চুন্নু স্বৈরাচারের দোসর’, বললেন ব্যারিস্টার সুমন
‘চুন্নু স্বৈরাচারের দোসর’, বললেন ব্যারিস্টার সুমন
এক লাফে ডলারের দাম বাড়লো ৭ টাকা
এক লাফে ডলারের দাম বাড়লো ৭ টাকা
ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর ইস্যুতে ন্যাটোকে রাশিয়ার সতর্কতা
ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর ইস্যুতে ন্যাটোকে রাশিয়ার সতর্কতা
ইউক্রেনে পাঠালে ফরাসি সেনাদের নিশানা করার হুমকি রাশিয়ার
ইউক্রেনে পাঠালে ফরাসি সেনাদের নিশানা করার হুমকি রাশিয়ার