বাংলা নববর্ষকে (১৪৩০) বরণ করে নিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) চলছে জোর প্রস্তুতি। শান্তি-সম্প্রীতির বার্তা নিয়ে মহাসমারোহে বাংলা বর্ষবরণের ব্যাপক আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।
পয়লা বৈশাখে দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। মঙ্গল শোভাযাত্রা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও প্রকাশনা উৎসবসহ নানা আয়োজন থাকছে এবারের অনুষ্ঠানমালায়। মঙ্গল শোভাযাত্রাটি সকাল সাড়ে ৯টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু হয়ে ভিক্টোরিয়া পার্ক মোড় ঘুরে পুনরায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ফিরে আসবে।
বাংলা নববর্ষের মঙ্গল শোভাযাত্রায় এবারের মূল প্রতিপাদ্য ‘শান্তি ও সম্প্রীতি’। শান্তির প্রতীক হিসেবে কবুতর এবং সম্প্রীতির প্রতীক হিসেবে পেঁচা তৈরি করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্ত চত্বরে বড় একটি কবুতর পাখির স্ট্রাকচার আর ছোট একটি পেঁচার স্ট্রাকচার তৈরি করা হচ্ছে। কবুতরটি দৈর্ঘ্যে ১৮ ফিট, উচ্চতায় ১৬ ফুট, প্রস্থ্যে ১৪ ফুট।
শেষ মুহূর্তে ব্যস্ত সময় পার করছেন চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা। কেউ কেউ পুতুল, পাখি, বাঘের মুখোশ, পেঁচার মুখোশ, পাখির মুখোশ, রাজা-রানির মুখোশ, নানা রকমের মাটির জিনিসপত্র তৈরি করেছেন। আবার কেউ কেউ দেয়ালে দেয়ালে চিত্রাঙ্কন করছেন। বিভিন্ন আকার ও রকমের চিত্রকর্ম এবং মুখোশে রং করছেন তারা। শিক্ষার্থীদের রংতুলিতে ফুটে উঠছে আবহমান বাংলার রূপ।
রংতুলির কাজে ব্যস্ত থাকা শিক্ষার্থী নাঈম মৃধা বলেন, নববর্ষ উপলক্ষে আমরা চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা কয়েকটি গ্রুপ ভাগ করে কাজ করছি। একটি গ্রুপ কাগজের ফুল বানাচ্ছে এবং ছেলেরা পোড়া মাটির হাতি। ক্যাম্পাস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এবার অনেক মানুষ কম। তাই আমাদের ওপর চাপ পড়ে যাচ্ছে। তবু আমরা সবাই মিলে ভালো কিছু করার চেষ্টা করছি।
বাংলা নববর্ষ উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব ও চারুকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ইমাম হোসেন বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় নবম বৈশাখ উদযাপন উপলক্ষে আমরা কাজ করছি। এবারের পয়লা বৈশাখে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবু আমাদের শিক্ষার্থীরা তাদের বাসায় যাওয়া বন্ধ করে আমাদের সঙ্গে কাজ করছে। শিক্ষার্থীরা দেয়ালচিত্র আঁকছে, মুখোশ, ফুলও বানাচ্ছে। সেগুলো র্যালিতে আমরা বহন করবো। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকলেও আমরা আমাদের ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা ধরে রাখবো।
প্রতিবছর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রাসহ দিনব্যাপী নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে পয়লা বৈশাখ উদযাপন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের মঙ্গল শোভাযাত্রাটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৬টি বিভাগ ও ২টি ইনস্টিটিউট বিভিন্ন ব্যানারে অংশ নেয়। পাশাপাশি পুরান ঢাকার ঐতিহ্য ধরে রাখতে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনও এতে অংশ নেয়।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় আমরা সীমিত পরিসরে মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করেছি। পাশাপাশি আমাদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও রয়েছে। আমরা সবাই মিলে ক্যাম্পাসে বাংলা নববর্ষ উদযাপন করবো।