X
বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫
১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
রামপাল নিয়ে প্রধানমন্ত্রী

মায়ের চেয়ে মাসির দরদ বেশি

বাংলা ট্রিবিউন ডেস্ক
২৭ আগস্ট ২০১৬, ১৬:২৯আপডেট : ২৭ আগস্ট ২০১৬, ২১:০৭

 

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

রামপাল প্রকল্পের বিরোধীদের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘মনে হচ্ছে মায়ের চেয়ে মাসির দরদ বেশি। বিরোধীদের কথায় আমার কিছু যায়-আসে না। আপনাদের কথায় বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে দিলে বিদ্যুৎ পাবেন না। হারিকেন নিয়ে অন্ধকারে বসে থাকতে হবে।’

শনিবার (২৭ আগস্ট) বিকালে গণভবনে রামপাল নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমাদের গ্যাসের মজুদ ফুরিয়ে আসছে। ভবিষ্যতে গ্যাস দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন নিয়ে শংকা রয়েছে। এ ছাড়া উন্নত দেশগুলোতে এখন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ে তোলা হচ্ছে।'

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে সুন্দরবনের কোনও ক্ষতি হবে না। ভিত্তিহীন ও কাল্পনিক যুক্তি দিয়ে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলছে। আর এর পেছনে উসকানি রয়েছে বিএনপির।'    

প্রধানমন্ত্রী বলেন, '১৯৯৬ সালে আমরা পাঁচ বছরের জন্য ক্ষমতায় এসেছিলাম। তখন আমরা উন্নয়নের ধারা এগিয়ে নিয়েছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা পরের বার ক্ষমতায় যেতে পারিনি। এরপর ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর আমরা করণীয় ঠিক করি। এরই অংশ হিসেবে নির্মাণ করি একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র।'

রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'সস্তা পরিবহনের জন্য নদীর কাছেই কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র করা হয়। যোগাযোগ সুবিধার কারণে রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র করা হয়েছে।’ এসময় প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, কোরিয়াসহ বিভিন্ন দেশের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উদাহরণ তুলে ধরেন।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘আন্তর্জাতিক পরিবেশ আইনে আছে, বনের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে বাণিজ্যিক প্রকল্প নির্মাণ করা যাবে না। আমরা সুন্দরবনের ১৪ কিলোমিটার দূরে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র করছি। তবুও বলা হয়, ভারত কেন ২৫ কিলোমিটারের মধ্যে তাদের দেশে বিদ্যুৎকেন্দ্র করতে দেয়নি। আমি বলবো, ভারতের মতো বড় দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের মতো ছোট দেশের তুলনা করা ঠিক না। এখানকার লোকের বিদ্যুতের চাহিদা বেশি এবং রিসোর্স অনেক কম।’

রামপালে বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ উদ্যোগে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ চলছে। গত ১২ জুলাই বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলায় এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট মৈত্রী সুপার থারমাল পাওয়ার প্রজেক্ট বাস্তবায়নে মূল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। কিন্তু তেল-গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটিসহ পরিবেশবাদীদের অনেকে দাবি করে আসছে, রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে সুন্দরবনের পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বহুল আলোচিত হওয়ার কারণ এর নির্মাণস্থল ও পরিবেশগত প্রভাব নিরূপণ (ইআইএ)। কেন্দ্রটির নির্মাণস্থল সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশের উত্তর-পশ্চিম প্রান্তসীমা থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে।

রামপাল কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের অর্থনৈতিক সমীক্ষা প্রতিবেদনে বলা আছে, বাংলাদেশে বর্তমানে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনে যে খরচ হয়, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে তার চেয়ে ৬২ শতাংশ বেশি খরচ হবে। রামপাল প্রকল্পে বাংলাদেশ সরকার ইতিমধ্যে ১৫ বছরের জন্য কর মওকুফ করেছে, যার আর্থিক মূল্য ৯৩ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার। বিদ্যুৎ প্রকল্পটিতে কয়লা আনার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে নদী খনন ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বছরে ২ কোটি ৬০ লাখ ডলার ব্যয় করতে হবে।

/এনএস/এআরএল/

আরও পড়ুন: 

‘মাশাল্লাহ, আল্লায় বাঁচাইলা’

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
মেক্সিকোতে লাইভ ভিডিও চলাকালে নারীকে গুলি করে হত্যা
মেক্সিকোতে লাইভ ভিডিও চলাকালে নারীকে গুলি করে হত্যা
কলার খোসা যেভাবে চুল ভালো রাখে
কলার খোসা যেভাবে চুল ভালো রাখে
দাবি না মানলে লাগাতার কর্মসূচির ঘোষণা জবি শিক্ষার্থীদের
দাবি না মানলে লাগাতার কর্মসূচির ঘোষণা জবি শিক্ষার্থীদের
কোরবানির চামড়া সংগ্রহে প্রস্তুত হচ্ছে সাভার শিল্প নগরী
কোরবানির চামড়া সংগ্রহে প্রস্তুত হচ্ছে সাভার শিল্প নগরী
সর্বাধিক পঠিত
সাবেক সেনা সদস্যদের আবেদন পুনর্বিবেচনা করছে সেনাবাহিনী, ধৈর্য ধরার পরামর্শ
সাবেক সেনা সদস্যদের আবেদন পুনর্বিবেচনা করছে সেনাবাহিনী, ধৈর্য ধরার পরামর্শ
‘পুলসিরাত’ ইসলামিক নাম, তাই পরিবর্তনের নির্দেশ
‘পুলসিরাত’ ইসলামিক নাম, তাই পরিবর্তনের নির্দেশ
পূজা উদযাপন পরিষদের দুই নেতার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা
পূজা উদযাপন পরিষদের দুই নেতার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা
আরও ১৬ ভারতীয়কে বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দিয়েছে বিএসএফ
আরও ১৬ ভারতীয়কে বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দিয়েছে বিএসএফ
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্রিফিংয়ে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের প্রসঙ্গ
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্রিফিংয়ে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের প্রসঙ্গ