রাজধানীর ফকিরাপুলস্থ বাবে রহমত দেওয়ানবাগ শরীফের পীর মাহবুব-এ খোদা রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) চিকিৎসাধীন রয়েছেন। শনিবার রাতে ইউনাইটেড হাসপাতালের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজ্জাদুর রহমান শুভ বাংলা ট্রিবিউনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, দেওয়ানবাগ শরীফের পীর মাহবুব-এ খোদা ৫ ফেব্রুয়ারি জ্বর ও কফযুক্ত কাশি, অচেতনতা ও জড়িয়ে যাওয়া কথা এসব সমস্যায় ৪/৫দিন ভুগে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তিনি হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ইউনাইটেড হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, দেওয়ানবাগ শরীফের পীর মাহবুব-এ খোদা’র চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড গঠন করে ইন্টারনাল মেডিসিন, বক্ষব্যাধি, কিডনি রোগ ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়া হয়। তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থায় জ্বর ও শ্বাস কষ্টের সমস্যা নিয়ে মাহবুব-এ খোদাকে হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়। তার মস্তিস্কের এমআরআই পরীক্ষায় মস্তিস্কের কোষে ইনফেকশন পাওয়া যায়। ইকোকার্ডিওগ্রাফি পরীক্ষায় ইজেকশন ফ্র্যাকশন শতকরা ৬৫ ভাগ পাওয়া যায়। পরে শ্বাসকষ্টের সমাধানের জন্য তাকে কৃত্রিম শ্বাস প্রশ্বাসের জন্য ইনটিউবিশন করা হয়। ৯ ফেব্রয়ারি তার সারা শরীরে খিঁচুনি হয়। স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তাকে খিঁচুনি রোধক ওষুধ ও এন্টি ভাইরাস দেন।
দেওয়ানবাগী পীরের মস্তিষ্ক, বুক ও পেটের সিটি স্ক্যান করা হলে দুই ফুসফুসের পর্দায় সংক্রমণ পাওয়া যায়।
ইউনাইটেড হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, কোনও ওষুধ ছাড়াই বর্তমানে তার রক্তচাপ ও নাড়ী স্বাভাবিক রয়েছে। রক্তে অক্সিজেন ও কার্বন ডাইঅক্সাইডের মাত্রা স্বাভাবিক। তার পরিবারকে সার্বক্ষণিক আপডেট জানাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
প্রসঙ্গত, ৬৭ বছর বয়সী দেওয়ানবাগ শরীফের পীর মাহবুব-এ খোদা ‘বিতর্কিত বক্তব্য’ দিয়ে আলোচিত হয়েছেন। তার ইসলাম ও শরিয়ত সম্পর্কিত ‘বিতর্কিত বক্তব্য’ প্রতিরোধের জন্য নানা উদ্যোগ নেয় ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ। সম্প্রতি প্রচারিত দেওয়ানবাগী পীরের বক্তব্যের ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে দেশের খ্যাতনামা আলেমারা এর নিন্দা জানান। দেওয়ানবাগী পীর বিগত কয়েক বছরে তার নিজের মতাদর্শ অনুযায়ী বক্তব্য রেখে এসেছেন। তার ভক্ত, আশেকানদের সামনে তিনি নসিহত করেন। এসব বক্তব্য আত্মার বাণী, সাপ্তাহিক দেওয়ানবাগসহ নানা জায়গায় প্রকাশিত হচ্ছে। সম্প্রতি তার কিছু বক্তব্য ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ সূত্র জানায়, ১৯৯১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর দেওয়ানবাগী পীর নিয়ে একটি ফতোয়া জারি হয়েছিল। তিনটি ফতোয়ার একটি ছিল, গ. আর তার অপপ্রচার প্রতিহত করা প্রত্যেক মুসলমানের কর্তব্য। (১৭৬৭ ইসঃফাঃ সং ও দাওয়াহ/৩/৮৭/৫১২২ তাং ৫/৯/৯১ ইং।)
/সিএ/এমপি/