X
মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫
২৯ বৈশাখ ১৪৩২

ভারত-বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণে সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদন

বাংলা ট্রিবিউন ডেস্ক
১৯ আগস্ট ২০২০, ০১:৫০আপডেট : ১৯ আগস্ট ২০২০, ০১:৫০

একনেক বৈঠক (ছবি: বাসস) ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে আমদানি-রফতানিসহ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণের লক্ষ্যে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ৮৪৫ কোটি ৫৩ লাখ টাকা ব্যয়ে বারৈয়ারহাট-হোঁয়াকো-রামগড় সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে। মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এনইসি সভাকক্ষে একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সভায় যুক্ত হন।

সভাশেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি জানান, ৩ হাজার ৪৬১ কোটি ৯৭ লাখ টাকা ব্যয়ে মোট ৭টি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে ২ হাজার ৬১৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় করা হবে এবং প্রকল্প সাহায্য হিসেবে বৈদেশিক সহায়তা পাওয়া যাবে ৮৪২ কোটি ১৮ লাখ টাকা। অনুমোদিত প্রকল্পের মধ্যে ৬টি নতুন প্রকল্প ও একটি সংশোধিত প্রকল্প রয়েছে।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘বারৈয়ারহাট-হোঁয়াকো-রামগড় সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্পটি খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলায় সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ ২০২৪ সাল মেয়াদে বাস্তবায়ন করবে। ৮৪৫ কোটি ৫৩ লাখ টাকা প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে ভারতীয় ক্রেডিট লাইনের ঋণের অংশ হিসেবে ৫৮১ কোটি ২০ লাখ টাকা পাওয়া যাবে।’

তিনি বলেন, ‘এই প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ ও ভারতের ত্রিপুরার মধ্যে সংযোগ সড়ক তৈরি হবে এবং দুই দেশের সড়ক উন্নয়ন করা হবে। এতে উভয় দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য বিশেষ করে ত্রিপুরা এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এলাকার আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন হবে।’ মন্ত্রী বলেন,‘উভয় দেশ এর থেকে সমানভাবে লাভবান হবে।’

এম এ মান্নান জানান, প্রধানমন্ত্রী এই প্রকল্পের আওতায় কোনও ধরনের ডাকবাংলো বা রেস্ট হাউস নির্মাণ না করার নিদের্শনা প্রদান করেছেন। তিনি বলেছেন, বরং প্রয়োজন হলে ডাকবাংলো বা রেস্ট হাউসের জন্য সমন্বিতভাবে আলাদা প্রকল্প নেওয়া যেতে পারে।

পরিকল্পনামন্ত্রী আরও জানান, রামগড় সীমান্তে একটি সীমান্ত হাট বসানোর চিন্তাভাবনা রয়েছে।

৫২৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকা ব্যয়ে দাউদকান্দি-গোয়ালমারী-শ্রীবায়েরচর (কুমিল্লা) মতলব উত্তর (ছেঙগারচর) জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্প অনুমোদনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মান্নান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী এই সড়ক টোল ফ্রি রাখা প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন। তিনি মনে করেন, ব্যয় সংকুলানের জন্য টোল ফ্রি না রেখে সামান্য হলেও টোল আদায় করা উত্তম।

শেখ হাসিনা টোল আদায়ের বিষয়ে মত ব্যক্ত করে আরও বলেন, একটি সড়ক নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বড় আকারের তহবিলের প্রয়োজন হয়, তাই ব্যয় সংকুলানের জন্য সড়ক ও মহাসড়ক থেকে টোল আদায় করা উচিত। প্রধানমন্ত্রী সড়ক ও মহাসড়কের সঙ্গে সংযুক্ত ছোট ছোট রাস্তার উন্নয়ন ও পুরনো সেতুর জায়গায় নতুন সেতু নির্মাণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, পানি ব্যবস্থাপনা সংশ্লিষ্ট দুই প্রকল্প অনুমোদনের প্রাক্কালে শেখ হাসিনা সাম্প্রতিক সময়ের নদী ভাঙনের বিষয় উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, নদী ভাঙনের কারণে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবন নষ্ট হয়ে গেছে। তাই, ভবিষ্যতে এ ধরনের অবকাঠামো বড় বড় নদীর তীরে স্থাপন করা ঠিক হবে না; বরং নদীর গতি-প্রকৃতি বা চরিত্র বুঝে অবকাঠামো নির্মাণ করতে হবে।

শেখ হাসিনা নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা ভবনকে কীভাবে স্থানান্তর করা যায়, সেই উপায় খুঁজে বের করা বা একটি উপযুক্ত মডেল প্রণয়নের নিদের্শ দেন। একইসঙ্গে তিনি বন্যা মোকাবিলাসহ অন্যান্য ক্ষয়ক্ষতি কমাতে নদী ও খাল খননের অঙ্গীকার পুনঃব্যক্ত করেন।

মান্নান আরও জানান, প্রধানমন্ত্রী একনেক সভায় দেশব্যাপী কতগুলো স্লুইস গেট কার্যকর আছে কিংবা অকেজো হয়ে গেছে, এ বিষয়ে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়কে একটি জরিপ করার নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে তিনি নতুন করে কোনও স্লুইস গেট যেন নির্মাণ না করা হয়, সে নির্দেশনাও দেন।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গোপসাগরের গভীর সমুদ্রে টুনা ও সমগোত্রীয় পেলাজিক মৎস্য  আহরণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে ৬১ কোটি ৬ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি পাইলট প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্প টুনা ও সমগোত্রীয় মৎস্য  আহরণে বেসরকারি বিনিয়োগ আকর্ষণে সহযোগিতা করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বিগত অর্থবছরের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ অর্জন হবে বলে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুারোর (বিবিএস) দেওয়া হিসাবের বিষয়ে কিছু গবেষণা সংস্থা সমালোচনা করছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে এম এ মান্নান বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কোনও ব্যক্তি বা সংস্থার সঙ্গে বিতর্কে জড়াতে চাই না।’ তবে তিনি বলেন, ‘বিবিএস একটি গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য প্রতিষ্ঠান। এটি প্রশিক্ষিত ও পেশাদার ব্যক্তিদের দিয়ে পরিচালিত হয়। তাদের কাজের প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে এবং তারা যথোপযুক্ত কাজ করে থাকে।’

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যে প্রকল্প প্রণয়নের কার্যক্রম অব্যাহত রাখায় প্রধানমন্ত্রী পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

এক প্রশ্নের উত্তরে পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী বলেন, ‘অতীতে যে পদ্ধতিতে জিডিপির হিসাব হয়েছে, এবারও একই পদ্ধতিতে হিসাব করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘জিডিপি প্রবৃদ্ধির হিসাব নিয়মিত রুটিন কাজ এবং বৈশ্বিক মান অনুসরণ করে এটা করা হয়ে থাকে।’

একনেক অনুমোদিত অন্য প্রকল্পসমূহ হলো—খুলনা সড়ক জোনের আওতাধীন বেইলি সেতুর স্থলে কংক্রিট সেতু নির্মাণ এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের একটি করে দু’টি প্রকল্প।

সূত্র: বাসস

/আইএ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
নটর ডেম কলেজের আরেক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
নটর ডেম কলেজের আরেক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
নৌ পথে ঈদযাত্রা ও পশুবাহী নৌযান নিরাপত্তায় কাজ করছে পুলিশ: অতিরিক্ত আইজিপি
নৌ পথে ঈদযাত্রা ও পশুবাহী নৌযান নিরাপত্তায় কাজ করছে পুলিশ: অতিরিক্ত আইজিপি
থাইল্যান্ডে গেছেন মির্জা ফখরুল
থাইল্যান্ডে গেছেন মির্জা ফখরুল
লিবিয়ায় নিরাপত্তা সংকট: প্রবাসী বাংলাদেশিদের সতর্ক থাকার নির্দেশ
লিবিয়ায় নিরাপত্তা সংকট: প্রবাসী বাংলাদেশিদের সতর্ক থাকার নির্দেশ
সর্বাধিক পঠিত
পররাষ্ট্র সচিবের অফিসার্স ক্লাবের সদস্য পদ স্থগিত
পররাষ্ট্র সচিবের অফিসার্স ক্লাবের সদস্য পদ স্থগিত
আসন্ন বাজেটে নতুন কী থাকছে
আসন্ন বাজেটে নতুন কী থাকছে
রংপুরের হাসপাতাল নেপাল ও ভুটানের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে: প্রধান উপদেষ্টা
রংপুরের হাসপাতাল নেপাল ও ভুটানের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে: প্রধান উপদেষ্টা
আ.লীগ-ছাত্রলীগের ২৬ নেতার আত্মসমর্পণ
আ.লীগ-ছাত্রলীগের ২৬ নেতার আত্মসমর্পণ
একাত্তরে গণহত্যায় সহযোগিতায় অভিযুক্তদের রাজনৈতিক অবস্থান ব্যাখ্যার আহ্বান এনসিপি’র
একাত্তরে গণহত্যায় সহযোগিতায় অভিযুক্তদের রাজনৈতিক অবস্থান ব্যাখ্যার আহ্বান এনসিপি’র