(বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে বঙ্গবন্ধুর সরকারি কর্মকাণ্ড ও তার শাসনামল নিয়ে মুজিববর্ষ উপলক্ষে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে বাংলা ট্রিবিউন। আজ পড়ুন ১৯৭৩ সালের ১১ ডিসেম্বরের ঘটনা।)
প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেসব আমদানিকারক আইন না মেনে নির্দিষ্ট পণ্যের পরিবর্তে অন্য পণ্য আমদানি করেছে তাদের অবিলম্বে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের নির্দেশ দেন। নিয়ম না মেনে এভাবে আমদানি করা পণ্য বাজেয়াপ্ত করে নিলামে বিক্রিরও নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু।
বাসসের খবরে বলা হয়, ৮ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী আকস্মিক চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শনকালে দেখতে পান, প্রদত্ত লাইসেন্সে কতিপয় আমদানিকারক নির্দিষ্ট পণ্য আমদানি না করে অন্য পণ্য আমদানি করেছে। এ অবস্থা দেখার পরই প্রধানমন্ত্রী এই নির্দেশ দেন।
খবরে প্রকাশ, প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এসব আমদানিকারকদের লাইসেন্স অবিলম্বে বাতিল করা এবং স্থায়ীভাবে এদের কালো তালিকাভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
দুবলারচরে ২শ’ লোকের প্রাণহানি
ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে খুলনার দুবলারচরে অন্তত দুইশ’ লোকের প্রাণহানি ঘটেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়। এ সংখ্যা বেড়ে তিন থেকে চারশ’তে পৌঁছাতে পারে। উল্লেখ্য, ঘূর্ণিঝড় দুদিন পরও দুবলারচরের অবস্থা দেখতে কেউ যায়নি। সুতরাং সেখানকার বাসিন্দাদের ভাগ্যে কী ঘটছে তার সঠিক খবর তখনও জানা যায়নি।
অন্য জেলা থেকে আরও প্রাণহানির খবর আসতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করা হয়। সমুদ্রে নিখোঁজ দুইশ’ জেলে নৌকা সম্পর্কে কোনও খবর পাওয়া যায়নি। এদিকে ইত্তেফাকের খবরে বলা হয়, প্রাণহানির সংখ্যা ১১১। কিন্তু খবরে এ সংখ্যা আরও বাড়বে বলে জানানো হয়।
জাতীয় দিবসের প্রস্তুতি
এরমধ্যে চলছিল জাতীয় দিবসের ব্যাপক প্রস্তুতি। বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনায় ১৬ ডিসেম্বর জাতীয় দিবস পালনের জন্য সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে ব্যাপক তোড়জোড় চলছিল। এ উপলক্ষে বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয় এবং জাতীয় ঐক্যজোট মাসের শুরু থেকেই নানা কর্মসূচি পালন করে আসছিল।
এদিকে আসন্ন জাতীয় দিবস উপলক্ষে বছরের মার্চপাস্টের পরিবর্তে এবার রুটমার্চের আয়োজন করা হয়। সেদিন সকাল ৯টায় শেরেবাংলা নগর থেকে শুরু হবে এবং মিরপুর রোড, এলিফ্যান্ট রোড, শাহবাগ আব্দুল গনি রোড, বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, নবাবপুর অতিক্রম করবে। বাংলাদেশ আর্মি, নেভি, এয়ারফোর্স, বিডিআর, পুলিশ, রক্ষীবাহিনী ও আনসার সদস্যদের ১৬ ডিসেম্বর জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে ব্যাপক তোড়জোড় ছিল। বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনও দিবস উপলক্ষে বিশেষ কর্মসূচি ঘোষণা করে।
পুনর্বাসনে সাহায্য করুন
পাকিস্তান থেকে প্রত্যাগত বাঙালিদের পুনর্বাসন কাজে প্রয়োজনীয় সাহায্য প্রদান করার জন্য জাতিসংঘ মহাসচিব জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতি আহ্বান জানান। তিনি আশা প্রকাশ করেন, জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো বাঙালিদের পুনর্বাসনের মানবীয় সমস্যা সমাধানে বাস্তব সহযোগিতা দেবে। দক্ষিণ এশিয়া ও উপমহাদেশে বৃহৎ মানবতার স্বার্থে জাতিসংঘের রিলিফদানের পদ্ধতি সম্পর্কে ১ সেপ্টেম্বর সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতি বিবৃতি দেন জাতিসংঘ মহাসচিব।
আন্তর্জাতিক জুরি কমিশনের অভিনন্দন
কমিশন এই দিন দালাল আইনে দোষী সাব্যস্ত ও আটক ব্যক্তিদের বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক সাধারণ ক্ষমা প্রদর্শনের বিষয়ে অভিনন্দিত করেন। কমিশনের জেনারেল সেক্রেটারি প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিকট পাঠানো বার্তায় জানান, এই ক্ষমা প্রদর্শন উপমহাদেশে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হবে।