X
বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫
১০ আষাঢ় ১৪৩২

এ দেশে সংখ্যালঘু-সংখ্যাগুরু বলতে কিছু নেই: প্রধানমন্ত্রী

বাংলা ট্রিবিউন ডেস্ক
০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৭:৪৬আপডেট : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৮:০১

হিন্দুদের সংখ্যালঘু না মনে করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আপনারা কেন নিজেদের সংখ্যালঘু বলেন? এ দেশে সংখ্যালঘু-সংখ্যাগুরু বলতে কিছু নেই। বরং বাংলাদেশে সব ধর্মের মানুষ সমান অধিকার ভোগ করে। নিজেদের সংখ্যালঘু বা দুর্বল মনে করবেন না। তাছাড়া আপনারা কেন এমনটা মনে করেন, যেখানে আপনারা এ দেশেরই মানুষ?’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা এই মাটিতে জন্মেছে তারা এই মাটিরই সন্তান এবং এ দেশের নাগরিক হিসেবে তাদের সব ধরনের অধিকার রয়েছে। তাই আপনারা (হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ) সব অধিকার নিয়েই এ দেশে বাস করবেন।

আজ বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) গণভবনে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। বুধবার উদযাপিত জন্মাষ্টমী উপলক্ষে এই অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।

গণভবনে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ছবি: ফোকাস বাংলা)

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে একসঙ্গে কাজ করতে আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমরা আমাদের মাতৃভূমিকে এগিয়ে নিতে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবো। আমরা আমাদের জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা ও ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়বো।’

এ সময় তিনি দেশে ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্টের যেকোনও পদক্ষেপ এবং জাতির অগ্রগতির বিরুদ্ধে অপপ্রচার সম্পর্কে সবাইকে সর্বদা সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। স্মার্ট সরকার, স্মার্ট দক্ষ জনশক্তি, স্মার্ট অর্থনীতি ও স্মার্ট সোসাইটি নিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে আরও এগিয়ে যাবে। কারণ, তার সরকার ২০০৮ সালের নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ইতোমধ্যে দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তর করেছে।

গণভবনে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ছবি: ফোকাস বাংলা)

শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার ক্ষমতায় আসার পর সংবিধান সংশোধন করে সব জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে জনগণের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও অধিকার পুনরুদ্ধার করেছে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান সংবিধান সংশোধন করে সব ধর্মের অধিকার রক্ষা ও ধর্মীয় উৎসব পালনের স্বাধীনতা সংক্রান্ত সব অনুচ্ছেদ বাতিল করেছিলেন। তিনি বলেন, জিয়া সংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বাতিল করে দেন, যা আমাদের ধর্মীয় নিরপেক্ষতাকে নিশ্চিত করেছিল। 

শেখ হাসিনা বলেন, ধর্মনিরপেক্ষতা মানে প্রতিটি ধর্মের মানুষ তাদের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান ও উৎসব স্বাধীনভাবে পালন করবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা (ছবি: ফোকাস বাংলা)

প্রধানমন্ত্রী হিন্দু সম্প্রদায়কে স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, দেশটি সবার। কারণ, জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে নয় মাস যুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হয়েছিল।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, এলজিআরডি ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য এবং ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খানও বক্তব্য রাখেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার সর্বদা বাংলাদেশের ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার এবং এমন একটি সামাজিক সম্প্রীতি বজায় রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছে, যেখানে একজন আরেকজনের অধিকার ক্ষুণ্ন করবে না এবং সব মানুষ সমান অধিকার উপভোগ করে জীবনযাপন করবে।

জন্মাষ্টমী উপলক্ষে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ছবি: ফোকাস বাংলা)

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা জানি সব জায়গায় কিছু স্বার্থান্বেষী লোক আছে, যারা কিছু সমস্যা তৈরি করতে চায়। কেউ যেন কোনও সমস্যা তৈরি করতে না পারে, সবাইকে সেদিকে নজর দিতে হবে।’ 

দেশ-বিদেশে অপপ্রচার চালাচ্ছে, এমন কিছু মানুষের বিরুদ্ধেও শেখ হাসিনা সবাইকে সতর্ক করেছেন।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি সবাইকে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনা ধ্বংস হয়ে যায়।

তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের পর হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ বারবার অমানবিক নির্যাতন ও দমন-পীড়নের শিকার হয়েছে। আমরা আবারও সংবিধান সংশোধন করে সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষের জন্য সমান অধিকার ও ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছি।

শেখ হাসিনা তার দলকে ভোট দিয়ে বাংলাদেশে অসাম্প্রদায়িক চেতনা পুনরুদ্ধার করার সুযোগ দেওয়ার জন্য দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানান।

তিনি বলেন, ‘যেহেতু তারা আমাদের ভোট দিয়ে দেশের সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন, তাই আমরা সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে আবারও অসাম্প্রদায়িক চেতনা পুনরুদ্ধার করতে ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রাখতে সক্ষম হয়েছি। আমরা মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ বাস্তবায়নের সুযোগ পেয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘আমি চাই আপনারা সবাই নিজ নিজ ধর্ম যথাযথভাবে পালন করুন। একসময় (সরকারি) চাকরির ক্ষেত্রে বৈষম্য ছিল, কিন্তু এখন এই বৈষম্য এখানে আর নেই। সরকারি চাকরিতে পদোন্নতির ক্ষেত্রেও সরকার যোগ্যতা ও কর্মদক্ষতা মূল্যায়ন করে।’ সূত্র: বাসস

/এফএস/এমওএফ/
সম্পর্কিত
প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নির্ধারণে স্পষ্টতা চায় বিএনপি
প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদের বিষয়ে বিএনপিসহ ৩ দল ছাড়া একমত বাকিরা: আলী রীয়াজ
রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ও প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নিয়ে আলোচনা চলছে: সালাহ উদ্দিন
সর্বশেষ খবর
সচিবালয়ের ক্যান্টিন নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৫
সচিবালয়ের ক্যান্টিন নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৫
‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’ যুগান্তকারী, চীনকে বিএনপি
‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’ যুগান্তকারী, চীনকে বিএনপি
আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি, আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা বিডিআর সদস্যদের
আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি, আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা বিডিআর সদস্যদের
সিরিজ জয়ের লক্ষ্যে ১৮ বছর পর কলম্বোতে নামছে বাংলাদেশ
সিরিজ জয়ের লক্ষ্যে ১৮ বছর পর কলম্বোতে নামছে বাংলাদেশ
সর্বাধিক পঠিত
সরকারি চাকরিজীবীদের বিশেষ সুবিধার সংশোধিত প্রজ্ঞাপন জারি
সরকারি চাকরিজীবীদের বিশেষ সুবিধার সংশোধিত প্রজ্ঞাপন জারি
ক্রুদের প্রতি কঠোর নির্দেশনা জারি বিমানের
ক্রুদের প্রতি কঠোর নির্দেশনা জারি বিমানের
ফ্ল্যাট বিক্রিতে ধস, নির্মাণ খাতে ছাঁটাইয়ের শঙ্কা
ফ্ল্যাট বিক্রিতে ধস, নির্মাণ খাতে ছাঁটাইয়ের শঙ্কা
দেশে প্রথমবারের মতো গুগল পে চালু হচ্ছে আজ, যেসব সুবিধা পাওয়া যাবে
দেশে প্রথমবারের মতো গুগল পে চালু হচ্ছে আজ, যেসব সুবিধা পাওয়া যাবে
নির্বাচনি সমঝোতার পথে পাঁচ ধর্মভিত্তিক দল
নির্বাচনি সমঝোতার পথে পাঁচ ধর্মভিত্তিক দল