অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মধ্যদিয়ে দ্বাদশ সংসদ গঠিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘সংবিধানের আলোকে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মধ্যদিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে দ্বাদশ সংসদ গঠিত হবে। এটাই জাতির প্রত্যাশা।’
বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) জাতীয় সংসদের সমাপনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রে নির্বাচনই একমাত্র পন্থা, যার মধ্যদিয়ে পরবর্তী সংসদ গঠিত হয়। এর থেকে বিচ্যুতির কোনও সুযোগ নেই। আমাদের এই অর্জন কোনোভাবে যেন ম্লান না হয়।’
স্পিকার বলেন, ‘আমরা সব অধিবেশন সফলভাবে সম্পন্ন করতে পেরেছি। প্রধানমন্ত্রী আমাকে সার্বক্ষণিক সংসদ পরিচালনায় সহায়তা করেছেন।’
সরকারি ও বিরোধী দলের সদস্য, ডেপুটি স্পিকার, সংসদীয় কমিটির সভাপতিদের ধন্যবাদ জানান তিনি।
শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘সংসদের শেষ বৈঠকে সংসদ সদস্যরা আবেগঘন বক্তব্য রেখেছেন। অনেকের বক্তব্যে আমার প্রতি আপনাদের আস্থার প্রকাশ ঘটেছে। এই আস্থা আমাকে গভীরভাবে স্পর্শ করেছে।’
স্পিকার বলেন, ‘পিতার আরাধ্য অপূর্ণ স্বপ্ন সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় নিয়ে দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দরিদ্র মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর ব্রত নিয়ে কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে চলেছেন। তার সব উন্নয়ন কার্যক্রমের মুল কেন্দ্রবিন্দু এ দেশের হতদরিদ্র জনগণ ও তাদের জীবনমান উন্নয়ন।’
তিনি বলেন, ‘আজ এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। স্বল্পোন্নত দেশের কাতার থেকে বেরিয়ে ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশ ও ২০৪১ সালে উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশের পথে আমাদের অগ্রযাত্রা। এ সব অর্জনের মূলে রযেছে কার্যকর সংসদ। সংসদীয় গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত থাকা, আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে। জনগণের প্রত্যাশা পূরণে মূল চালিকা শক্তিরূপে কাজ করেছে জাতীয় সংসদ।’
বিরোধী দলের উপস্থিতি ও তাদের কার্যক্রম সংসদকে প্রাণবন্ত ও কার্যকর করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সংসদকে কার্যকর করার ক্ষেত্রে সরকারি ও বিরোধী দলের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। সংসদীয় গণতন্ত্রের অব্যাহত চর্চাই পারে আইনের শাসন সমুন্নত রেখে মৌলিক স্বাধীনতা ও মানবাধিকার, ন্যায়বিচর পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে শোষণ ও বঞ্চিত সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে।’
তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র অর্থবহ করতে হলে জনগণের জীবনমান উন্নত, আশা আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ও ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করণে সংসদকে মূল ভূমিকা পালন করতে হয়। সংসদকে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু করতে হলে জনগণকে ক্ষমতায়ন করতে হবে।’
স্পিকার বলেন, ‘সমগ্র বিশ্ব আজ অস্থির সময় পার করছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, প্যালেস্টাইনের ওপর ইসরায়েলের আগ্রাসন অর্থনৈতিক মন্দা, ইকোনমিক রিসিশন, মূল্যস্ফীতি সমগ্র বিশ্বকে এক কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন করেছে।’
তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের কোনও বিকল্প নেই। সংসদীয় গণতন্ত্রকে পরিশীলিত ও শানিত করতে হবে। শত প্রতিকূলতাকে ছিন্ন করে বাধা অতিক্রম করে যিনি আজ বাংলাদেশকে গণতন্ত্রের শক্ত ভীতের ওপর দাঁড় করিয়েছেন, বিশ্ব পরিমণ্ডলে স্বীয় মর্যাদার আসনে আসীন করেছেন, তিনি শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে রবীন্দ্রনাথের ভাষায়— ‘অন্ধকারে সিন্ধু পাড়ে’। কিন্তু আমি বলতে চাই— ‘অন্ধকারে পদ্মা পাড়ে একলাটি সেই মেয়ে, আলোর নৌকা ভাসিয়ে দিলো আকাশ পানে চেয়ে।’