স্টারলিংকের মতো স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট সেবাদানকারী আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে আসতে আগ্রহী। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এ কথা জানান।
ফয়েজ আহমদ বলেন, আমরা এনজিএসও (বাংলাদেশে নন-জিওস্টেশনারি অরবিট) গাইডলাইন করেছি। এর আওতায় স্টারলিংক বাংলাদেশে কাজ শুরু করেছে। স্টারলিংকের মতো আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে আসার আগ্রহ প্রকাশ করে যোগাযোগ করছে।
মোবাইল অপারেটরগুলো ইন্টারনেটের দাম না কমালে সরকার পদক্ষেপ নেবে জানিয়ে তিনি বলেন, দাম কমানোর পর্যাপ্ত রেগুলেটরি এবং বাস্তবিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। স্টেকহোল্ডাররা অংশগ্রহণ করেছেন। যারা এখনও পার্টিসিপেট করেননি, তাদের পার্টিসিপেট করা উচিত। আর তারা যদি আমাদের সঙ্গে কো-অপারেট না করে, তাহলে তাদের সঙ্গে আমাদের যে দ্বিপাক্ষিক নেগোসিয়েশনগুলো আছে, সেগুলো আমরা আলোচনার টেবিলে আনবো। সেখানে আনসেটেল্ড ডিউ (অনিষ্পন্ন দেনা) আছে, সেগুলো আলোচনায় চলে আসবে। তাদের পারফরমেন্সও আলোচনার টেবিলে আসবে।
বিশেষ সহকারী জানান, আইএসপি (ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স) এবং আইআইজি (ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে) পর্যায়ের ২০ শতাংশ দাম কমানোর যে উদ্যোগ বিটিআরসি নিয়েছে, সেটা ১ জুলাই থেকে বাস্তবায়ন হবে।
ফয়েজ আহমদ জানান, নারী- পুরুষ এবং শহর ও গ্রামে ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশনের ক্ষেত্রে বৈষম্য রয়েছে। এমনকি দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশনের সুযোগ সমানভাবে পৌঁছেনি।
তিনি বলেন, ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলগুলোতে ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন হয়েছে। কিন্তু বেসরকারি পর্যায়ের বাংলা মাধ্যমের কিছু কিছু স্কুলেও ডিজিটাল সুযোগ সুবিধা রয়েছে৷ কিন্তু গ্রামীণ অঞ্চলের মাদ্রাসাগুলো, বিশেষ করে কওমি মাদ্রাসায় ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশনের সুফল পৌঁছেনি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ১৭ মে সরকারিভাবে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালিত হবে বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘ডিজিটাল রূপান্তরে নারী-পুরুষ সমতায়ন’
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্যসংঘ দিবসের অনুষ্ঠান বিগত সরকার 'এ' ক্যাটাগরি থেকে 'সি' ক্যাটাগরিতে নিয়ে এসেছিল। এটা আবারও 'এ' ক্যাটাগরিতে নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।
এ বছর টেলিযোগাযোগ দিবসের মূল অনুষ্ঠান আয়োজিত হবে বিটিআরসি কার্যালয়ে, সেখানে অনুষ্ঠানের উদ্বোধনসহ দিবস সর্ম্পকে আলোচনাসভা হবে। পরে টেলিযোগাযোগ খাতের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ যেমন- সরকার, রেগুলেটর, উদ্যোক্তা, অ্যাকাডেমিয়া এবং বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে সেমিনার আয়োজন করা হবে।
দিবস উপলক্ষে ডাক অধিদফতরের আয়োজনে প্রধান উপদেষ্টা মহোদয় কর্তৃক ডাক টিকিট অবমুক্ত করা হবে। এছাড়া, টেলিযোগাযোগ খাতের উদ্যোক্তা ও লাইসেন্সিদের সমন্বয়ে বিটিআরসির প্রাঙ্গনে মেলা অনুষ্ঠিত হবে।
টেলিযোগাযোগ খাতে দেশ ও বিদেশে বিশেষ অবদানের জন্য যোগ্য ব্যক্তি/দলকে সম্মাননা দেওয়া হবে। এছাড়া, জুলাই আন্দোলনে আহত বীরদের বিশেষ ডিভাইস সরবরাহ করা হবে।
বাংলাদেশ সচিবালয় (ভিতর ও বাহিরে), প্রেসক্লাব, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, বিজয় সরণি থেকে সামরিক যাদুঘর ও আগারগাঁও (বিটিআরসি কার্যালয় এর প্রবেশ পথ) পরিবেশ বান্ধব ব্যানারের মাধ্যমে সাজানো হবে।
দিবসের প্রতিপাদ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বিভিন্ন টেলিভিশনে টকশো আয়োজন, জাতীয় দৈনিক ও অনলাইনগুলোতে ক্রোড়পত্র প্রকাশ এবং বিসিএস (টেলিকম) সমিতি কর্তৃক স্মরণিকা প্রকাশ করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন— ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) জহিরুল ইসলাম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী প্রমুখ।