X
বৃহস্পতিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩
২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩০

মুক্তিযুদ্ধের যে স্মৃতি তিনি কখনওই ভুলতে পারেন না

জামাল উদ্দিন
২৫ মার্চ ২০১৬, ১২:৪৭আপডেট : ২৫ মার্চ ২০১৬, ১২:৫৪

অধ্যাপক আব্দুল আওয়াল মুছল্লী রাজেন্দ্রপুর ক্যান্টনমেন্ট থেকে বের হয়ে পাকিস্তানি সেনারা প্রায়ই আশপাশের গ্রামে ঢুকে মুক্তিযোদ্ধাদের খোঁজ করতো, আগুন দিতো ঘর-বাড়িতে। গরু, ছাগল, হাস-মুরগি যা পেতো তাই লুট করে নিয়ে যেতো। মুক্তিযোদ্ধারা কোনও অপারেশন চালালে তারা আরও হিংস্র হয়ে উঠতো। ধরে নিয়ে যেতো মা-বোনদের। বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজের সহকারী অধ্যাপক আব্দুল আওয়াল মুছল্লী বাংলা ট্রিবিউনের কাছে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে এসব কথা বলেন।
আব্দুল আউয়াল বলেন, কাঠের তৈরি ডামি বন্দুক দিয়ে স্কুলের মাঠে আমরা ট্রেনিং করতাম। বন্দুক নিয়ে কীভাবে ক্রলিং করে এগুতে হয়, সামনে পাকিস্তানি সেনাদের প্রতিকৃতি রেখে কীভাবে গুলি করতে হবে সেটাও ট্রেনিং দেওয়া হতো। বয়স কম ছিল বলে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম দিকে বিষয়টি খেলার মতোই মনে হতো। কিন্তু পরে বুঝতে পারি এটি খেলা নয়। এটি ছিল দেশের স্বাধিকার আন্দোলনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রশিক্ষণ। যে প্রশিক্ষণের গুরুত্ব ছিল অপরিসীম।
তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা তার মতো আরও অনেক ছেলেকেই স্থানীয় স্কুল মাঠে প্রশিক্ষণ দিতেন। প্রথম দিকে খেলা মনে হলেও পরে বুঝতে পারেন এটি ছিল হানাদার বাহিনীর প্রতিরোধে ও নিজেদের আত্মরক্ষার্থে কত কাজে লেগেছিল। তিনি বলেন, গাজীপুর সদরের মির্জাপুর এলাকার পাইনশাইলে তার বাড়ি। খুব কাছেই ছিল রাজেন্দ্রপুর ক্যান্টনমেন্ট। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পর ওই ক্যান্টনমেন্ট থেকে পাকিস্তানি সেনারা প্রায়ই হানা দিতো আশে-পাশের গ্রামগুলোতে। ওই সময় তিনি ছিলেন কিশোর। বয়স বেশি না হলেও পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অত্যাচার দেখেছেন নিজ চোখে।
একটি স্মৃতি তিনি কখনই ভুলতে পারেন না। নজু নামে গ্রামের এক যুবককে কীভাবে মেরেছিল পাকিস্তানি সেনারা। স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, যুদ্ধ শুরুর পর শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিল নজু। একদিন বাবা-মাকে দেখতে এসে নজু ধরা পড়ে পাকিস্তানি সেনাদের হাতে। বাড়ির পাশেই ঈদগাহ মাঠে ৪০-৫০ জনকে দাঁড় করিয়ে তারা জানতে চাইছে কে মুক্তিযোদ্ধা। গ্রামের আব্দুল হাই মুন্সী ও কাইয়ুম মুন্সী পাকিস্তানি সেনাদের বোঝানোর চেষ্টা করেন এখানে কেউ মুক্তিযোদ্ধা নন। কিন্তু এর কয়েকদিন আগে শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান আফছার খুন হলে পাকিস্তানি সেনারা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।

এক পর্যায়ে নজুর ওপরই তাদের নজর পড়ে। তাকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে সে হাই মুন্সীকে ধরে রাখে। কিন্তু পাকিস্তানি সেনারা তাকে জোর করে পাশের ক্ষেতে নিয়ে পরপর কয়েক রাউন্ড গুলি করে। মাটিতে লুটিয়ে পড়ে নজু। দীর্ঘ সময় ছটপট করতে করতে মারা যায় নজু। চোখের সামনে এমন দৃশ্য দেখে ভয়ে আরও কয়েকজনসহ আবদুল আউয়াল আত্মগোপন করেন ঘটনাস্থলের অদূরে তুরাগ নদীর পাশের বড়চালা গ্রামের চাচাতো বোনের বাড়িতে।

তিনি জানান, তার মতো ছেলেদের কাজ ছিল বিভিন্নস্থান থেকে তথ্য সংগ্রহ করে মুক্তিযোদ্ধাদের জানিয়ে দেওয়া। পাকিস্তানি হানাদারদের অবস্থান জানিয়ে দেওয়া।

/এএইচ/আপ- এপিএইচ/

সম্পর্কিত
বাংলা ট্রিবিউনকে বিএএফসি চেয়ারম্যানফাইন্যান্স কোম্পানি আইনে ‘সুরক্ষা পাবেন’ আমানতকারীরা
জিএমও বিশ্বব্যাপী সাফল্য পেয়েছে, বাংলাদেশেরও ভাবা উচিত: নোবেলজয়ী রিচার্ড রবার্টস
ভয়েস অব আমেরিকাকে রানা দাশগুপ্তমার্কিন ভিসানীতির ফলে নির্বাচনে সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতার ঘটনা কমতে পারে
সর্বশেষ খবর
গাইবান্ধায় আ.লীগের প্রার্থীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ
গাইবান্ধায় আ.লীগের প্রার্থীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ
আ.লীগের সঙ্গে জাপা নেতাদের ৩ দফায় বৈঠক, যা জানা গেলো
আ.লীগের সঙ্গে জাপা নেতাদের ৩ দফায় বৈঠক, যা জানা গেলো
চালককে মারধর করে পিকআপভ্যানে আগুন, পুড়ে মরলো কয়েকশ মুরগির বাচ্চা
চালককে মারধর করে পিকআপভ্যানে আগুন, পুড়ে মরলো কয়েকশ মুরগির বাচ্চা
মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে প্রাণ গেলো ২ বন্ধুর
মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে প্রাণ গেলো ২ বন্ধুর
সর্বাধিক পঠিত
ড্রাগন ফল নিয়ে বিভ্রান্তি
ড্রাগন ফল নিয়ে বিভ্রান্তি
আজকের আবহাওয়া: ভারী বর্ষণ এবং তাপমাত্রা কমার পূর্বাভাস
আজকের আবহাওয়া: ভারী বর্ষণ এবং তাপমাত্রা কমার পূর্বাভাস
আরাফাতের ৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকা ছয় মাস পর শূন্য
আরাফাতের ৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকা ছয় মাস পর শূন্য
৬২ মামলা মাথায় নিয়ে নির্বাচনে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত শওকত মাহমুদ
৬২ মামলা মাথায় নিয়ে নির্বাচনে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত শওকত মাহমুদ
জামায়াতকে একমঞ্চে আনার উদ্যোগ বিএনপির, যুগপৎ ভেঙে যাওয়ার শঙ্কা
জামায়াতকে একমঞ্চে আনার উদ্যোগ বিএনপির, যুগপৎ ভেঙে যাওয়ার শঙ্কা