যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপ করেছেন। ১৫ মিনিটের আলোচনা ছিল উষ্ণ, সৌহার্দ্যপূর্ণ এবং গঠনমূলক, যা দুই দেশের মধ্যে শক্তিশালী দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে প্রতিফলিত করে বলে জানায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
বৈঠকে উভয় নেতা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য নিয়ে আলোচনা, চলমান সংস্কার প্রক্রিয়া, গণতান্ত্রিক উত্তরণ, আসন্ন সাধারণ নির্বাচন এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য সহায়তাসহ পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।
সেক্রেটারি রুবিও বাংলাদেশের সংস্কার এজেন্ডা এবং আগামী বছরের শুরুতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পদক্ষেপের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেন।
যুক্তরাষ্ট্রকে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রফতানি গন্তব্য এবং রেমিট্যান্সের শীর্ষ উৎস হিসেবে উল্লেখ করে উভয় নেতা শিগগিরই শুল্ক নিয়ে আলোচনা শেষ করার আশাবাদ ব্যক্ত করে, যা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধির পথ প্রশস্ত করবে।
প্রফেসর ইউনূস উল্লেখ করেন যে, তার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা সম্প্রতি ওয়াশিংটনে ডেপুটি সেক্রেটারি অব স্টেট ল্যান্ডাউয়ের সঙ্গে একটি চমৎকার বৈঠক করেছেন এবং দ্বিপক্ষীয় বন্ধন জোরদারে তাদের প্রতিশ্রুতির কথা জোর দিয়েছেন।
বাংলাদেশের ওপর পারস্পরিক শুল্ক ব্যবস্থা ৯০ দিনের জন্য স্থগিতের অনুরোধে ইতিবাচক সাড়া দেওয়ায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানান ইউনূস, তিনি বলেন, 'প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বাণিজ্য এজেন্ডায় কার্যকরভাবে সাড়া দিতে আমরা একটি প্যাকেজ চূড়ান্ত করতে আপনার কর্মকর্তাদের সঙ্গে কাজ করছি।
প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস পুনর্ব্যক্ত করেন যে, আগামী বছরের প্রথম দিকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং তার সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চলমান সংলাপের ফলে দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থার অতিপ্রয়োজনীয় সংস্কার ঘটবে।
তিনি বলেন, 'নির্বাচন কমিশন নির্বাচনি ব্যবস্থা পুনর্গঠনে কঠোর পরিশ্রম করছে, যা বিগত সরকার ধ্বংস করে দিয়েছিল। আমাদের তরুণরা জীবনে প্রথমবারের মতো ভোট দেবে।
প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অব্যাহত উদার সহায়তার জন্য ওয়াশিংটনের প্রশংসা করেন।
২০১৭ সাল থেকে রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা প্রদানে শীর্ষ দাতা দেশ হিসেবে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রফেসর ইউনূস বলেন, 'রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরে যাওয়া ও একটি টেকসই সমাধানের সম্ভাবনা এখন আগের চেয়ে ভালো এবং বাংলাদেশ এ বিষয়ে কাজ করছে।’
দুই নেতা একটি স্থিতিশীল ও শান্তিপূর্ণ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রয়োজনীয়তা এবং প্রতিবেশীদের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কসহ ভূ-রাজনৈতিক ইস্যু নিয়েও কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস সেক্রেটারি রুবিওকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়ে বলেন, 'এটি আমাদের তরুণদের অনুপ্রাণিত করবে।’