বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পাকিস্তানকে নাক না গলানোর আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।
তিনি বলেছেন, আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কারও উদ্বেগকে আমরা স্বাগত জানাই না। এটি বারবার স্মরণ করিয়ে দেওয়া হলেও তারা এ কাজ করছে।
রবিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিজ কার্যালয়ে তিনি এ কথা বলেন।
গত ৪ মে জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির আদেশ বহাল রাখার রায় দেওয়ার পর শুক্রবার পাকিস্তান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দেয়।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এ বিবৃতি সম্পর্কে বলেন, এটি আমাদের হতাশ করেছে। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তারা এ রায়ে ব্যথিত হয়েছে। আমি যদি বিষয়টির গভীরে যাই তাহলে বোঝা যায়, তারা আমাদের যুদ্ধাপরাধীদের পরবর্তী প্রজন্মকে আশ্বস্ত করতে চাইছে, পাকিস্তান তাদের সঙ্গে আছে। পাকিস্তান একটি দেশ হিসেবে তাদের পাশে থাকবে, এ ধরনের একটি বার্তা বোধহয় তারা দিচ্ছে এবং আমি মনে করি, এটা আরও ভয়ঙ্কর বিষয়।
পাকিস্তান গত শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলেছে, নিজামীর রায়ের ফলে তারা ‘নিদারুন মানসিক যন্ত্রনায়’ ভুগছে।
আরও পড়ুন: রক্তের জন্য থ্যালাসেমিয়া রোগীদের আর্তনাদ!
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা যাদের বিচার করছি তারা বাংলাদেশের নাগরিক। ১৯৭৪ সালের চুক্তিতে বলা ছিল, ১৯৫ জন পাকিস্থানি যুদ্ধাপরাধীর বিচার বাংলাদেশ করবে না। কিন্তু কোথাও সামান্যতম ইঙ্গিত নেই যে, বাংলাদেশিদের বিচার করা যাবে না। আমি আহ্বান জানাবো, তারা যেন ১৯৭৪ সালের চুক্তির অপব্যাখ্যা না দেয়।
বাংলাদেশ এ বিবৃতির প্রতিবাদ করবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা অবশ্যই এ বিষয়ে কথা বলবো। কূটনৈতিক চ্যানেলে যে মাধ্যমগুলো আছে সেগুলো আমরা ব্যবহার করবো।
তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে বাংলাদেশের মানুষের সম্মতি আছে এবং এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ তার নির্বাচনী ইসতেহারে লিখিতভাবে জানিয়েছে। আমরা এ ওয়াদা যে কোনও মূল্যে বাস্তবায়ন করবো।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় প্রথমে বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে, ফাঁসি কেন হচ্ছে এগুলো নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। কিন্তু এখন তারা সে জায়গা থেকে সরে এসেছে। আমরা অনেক কাজ করেছি, স্বচ্ছতা নিশ্চিত করেছি এবং আমাদের পক্ষে যতদূর সক্ষমতা আছে ততদূর আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রাখার চেষ্ঠা করেছি। এর ফলে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ অনেকাংশে কমানো সম্ভব হয়েছে।
সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসির সময় তুরস্ক পর্যন্ত তাদের পুরনো জায়গা থেকে সরে এসে বলেছে, ভ্রাতৃপ্রতিম দেশ হিসেবে তারা আশা করে, বাংলাদেশ যেন তার মৃত্যুদণ্ড না দেয়। তুরস্ক বলেনি বিচার খারাপ হয়েছে বা অন্য কিছু, তারা বলেছে, যেন মৃত্যুদণ্ড যেন না দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: গণপূর্তমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তদন্ত চলবে
/এসএসজেড/এআর/এপিএইচ/