আবাসিক হলের দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা মঙ্গলবার সকালে বিভিন্ন ভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়েছে। ক্যাম্পাসের সামনে থেকে রায়সাহেব বাজার পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করেছে প্রায় সহস্রাধিক শিক্ষার্থী। আজও তারা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন করছে।
সোমবার দেওয়া ঘোষণা অনুযায়ী, আজ মঙ্গলবার সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে ধর্মঘট শুরু হয়েছে। আগামীকাল বুধবারও তারা এ ধর্মঘট পালন করবে।
মঙ্গলবার সকালে শিক্ষার্থীরা নতুন একাডেমিক ভবন, উপাচার্য ভবন, বিজ্ঞান ভবন, সমাজ বিজ্ঞান ভবনে তালা লাগিয়ে দিয়েছে। ক্যাম্পাসের ভেতরে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পরিবহনকারী বাস প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের প্রধান ফটক এবং সামনের রাস্তায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়েছেন। রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে, হাতে ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে স্লোগান দিচ্ছেন তারা।
শিক্ষার্থীরা রাস্তায় অবস্থান নেওয়ায় জনসন রোডে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, ‘হলের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। এছাড়া সোমবার উপাচার্য অধ্যাপক মীজানুর রহমান বিভিন্ন টিভিতে মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্য দেওয়ায় আমরা তার প্রতিবাদ করছি।’
ঘটনাস্থানে প্রায় শতাধিক পুলিশ অবস্থান করছেন। কোতয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘নাশকতা ঠেকাতে আমরা অবস্থান নিয়েছি।’
এর আগে সোমবার পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচির তৃতীয় দিন সোমবার সকাল ১০ টার দিকে রাজধানীর রায়সাহেব বাজার পার হয়ে নয়াবাজার মোড়ের দিকে যেতেই পুলিশ তাদের ওপর লাঠিচার্জ করে এবং তাদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে। এতে প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তারা স্থানীয় ন্যাশনাল মেডিক্যাল হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়েছে বলে জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
এদিকে, প্রক্টর নুর মোহাম্মদ বাংলা ট্রিবিউনকে সোমবার বলেছিলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের বলেছি, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তাদের মধ্যে কয়েকজন প্রতিনিধি গিয়ে স্মারকলিপি জমা দিয়ে আসতে। কিন্তু তারা রাস্তায় মিছিল নিয়ে যাচ্ছিল। তারা তো শান্তিপূর্ণ মিছিল করলে পুলিশ তাদের ওপর আক্রমণ করতো না।’
প্রক্টরের নির্দেশেই পুলিশ লাটিচার্জ ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে- শিক্ষার্থীদের এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তারা তো এখন কত কথাই বলবে। আমি হুকুম দেওয়ার কেউ না, যা করার পুলিশই করেছে।’
গত ২ আগস্ট থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন নাজিম উদ্দিন রোডে পরিত্যক্ত কারাগারের জমিতে হল নির্মাণের দাবিতে আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা। জমি পেতে ২০১৪ সালের মার্চে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন স্বরাষ্ট্র সচিবের কাছে আবেদন করেছিল। নতুন করে আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে কারাগারের জায়গার জন্য গত ১৪ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের উচ্চপর্যায়ে আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য মীজানুর রহমান।
/আরএআর/এসটি/