X
শনিবার, ১০ মে ২০২৫
২৬ বৈশাখ ১৪৩২

বাবাকে যে সেলে হত্যা করা হয়েছিল সেখানে ৯ মাস ছিলাম: নাসিম

ফজলুর রহমান রাজু
০৩ নভেম্বর ২০১৭, ১৩:৫৮আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০১৭, ১৪:১৩

মোহাম্মদ নাসিম, ছবি: ঢাকা ট্রিবিউন আমার বাবাকে (এম মনসুর আলী) জেলের যে সেলে হত্যা করা হয়েছিল সেখানে ৯ মাস কারাবন্দি ছিলেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মাদ নাসিম।

১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কেন্দ্রীয় কারাগারে হত্যা করা হয় জাতীয় চার নেতাকে। তারা হলেন, মুক্তিযুদ্ধকালীন অস্থায়ী সরকারের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য এম মনসুর আলী ও এইচএম কামরুজ্জামান। তারা বঙ্গবন্ধুর খুব ঘনিষ্ট ছিলেন। বর্তমানে ওই চার নেতার পরিবারের ৯ জন সদস্য আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তাদের মধ্যে রয়েছেন এম মনসুর আলীর দুই ছেলে মোহাম্মাদ নাসিম ও ড. মোহাম্মদ সেলিম এবং নাসিমের ছেলে তানভীর শাকিল জয়।

জাতীয় নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী এম মনসুর আলীর ছেলে মোহাম্মদ নাসিম মুক্তিযুদ্ধের সময় একজন সংগঠক ছিলেন। এসএসসি পরীক্ষার সময় তিনি পাকিস্তান সরকারের নীতির বিরোধিতা করে আন্দোলনে অংশ নেন। এরপর তাকে কারাগারে নেওয়া হয়। জেল থেকেই তিনি সাফল্যের সঙ্গে পরীক্ষায় পাস করেন এবং পাবনা এডওয়ার্ড কলেজে ভর্তির আবেদন করেন। কিন্তু কয়েদি হওয়ায় তাকে কলেজে ভর্তি করা হয়নি। পরে তিনি জগন্নাথ কলেজে (বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়) ভর্তি হন।

যুদ্ধের কথা স্মরণ করে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি ছাত্রলীগের নেতা ছিলাম। ১৯৬৬ সালে পাকিস্তান সরকার আমাকে ও বাবাকে গ্রেফতার করে। পরে পাবনা কারাগারে আমাদের একই সেলে এক বছর রাখা হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘ডাক্তার উন্নত চিকিৎসার জন্য আমাকে ঢাকায় নিয়ে যেতে বলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ কথা শুনে আমাদের জন্য বিমানের দুটি টিকিট পাঠিয়েছিলেন। বাবাকে ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এমনকি তিনি হাসপাতালে আমাকে দেখতেও গিয়েছিলেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু আমাদের বাড়িতে গিয়েছিলেন। তিনি আমাকে তার ছেলের মতো ভালোবাসতেন।’

১৯৭৫ সালে যখন বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারের সদস্যদের হত্যা করা হয় তখন মোহাম্মদ নাসিম বাংলাদেশ কৃষক-শ্রমিক লীগের পাবনা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও যুব লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ছিলেন। ওই সময় তিনি আত্মগোপনে চলে যান এবং সেখান থেকে রাজনৈতিক আন্দোলনের সমন্বয় করতেন। একই বছরের আগস্টের শেষ দিকে খন্দকার মোশতাক আহমেদের মন্ত্রিপরিষদে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানালে মোহাম্মদ নাসিমের বাবা ও বাকি তিন নেতাকে গ্রেফতার করে সামরিক সরকার। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর জেলের মধ্যে চার নেতাকে হত্যা করা হলে মোহাম্মদ নাসিম ভারতে পালিয়ে যান এবং সেখানেই চার বছর ছিলেন। ১৯৮০ সালে দেশে ফিরে আসলে পাবনা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে জাতীয় চার নেতাকে যে সেলে হত্যা করা হয় ঘটনাক্রমে তাকেও সেই সেলে রাখা হয়।

মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘আমিও ওই সেলে ৯ মাস ছিলাম। ওই দিনগুলোয় সেখানে আমি বাবার নিঃশ্বাস অনুভব করতাম। আমার সবচেয়ে বড় দুঃখ বাবাকে হত্যার পর আমি তার মুখও দেখতে পারিনি। এতোকিছুর পরও ২০১৩ সালে জেল হত্যার বিচার শেষ হয়েছে। তবে কয়েকজন হত্যাকারী এখনও পলাতক আছে। আশা করছি হত্যাকারীদের বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনতে অন্য দেশগুলো সাহায্য করবে।’

সৌজন্যে ঢাকা ট্রিবিউন

 

/এসএনএইচ/এসটি/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
আ.লীগ নিষিদ্ধের আন্দোলনে বিরতি ঘোষণা, শাহবাগেই ঘুমিয়ে পড়েছেন হাসনাত
আ.লীগ নিষিদ্ধের আন্দোলনে বিরতি ঘোষণা, শাহবাগেই ঘুমিয়ে পড়েছেন হাসনাত
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের অবরোধ তুলে নিলেন শিক্ষার্থীরা
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের অবরোধ তুলে নিলেন শিক্ষার্থীরা
শাহবাগে মধ্যরাতেও উপচেপড়া ভিড়, চলছে ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী
শাহবাগে মধ্যরাতেও উপচেপড়া ভিড়, চলছে ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী
আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ, ২০ কিলোমিটার যানজট
আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ, ২০ কিলোমিটার যানজট
সর্বাধিক পঠিত
জার্সি পরেই যমুনার সামনে দায়িত্বে রমনার ডিসি মাসুদ আলম
জার্সি পরেই যমুনার সামনে দায়িত্বে রমনার ডিসি মাসুদ আলম
সাবেক শিবির নেতাদের নেতৃত্বে নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ
সাবেক শিবির নেতাদের নেতৃত্বে নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ
যেভাবে বানাবেন কাঁচা আমের টক-মিষ্টি-ঝাল আমসত্ত্ব 
যেভাবে বানাবেন কাঁচা আমের টক-মিষ্টি-ঝাল আমসত্ত্ব 
তিন শিক্ষক আর পাঁচ শিক্ষার্থী দিয়ে চলছে সরকারি বিদ্যালয়
তিন শিক্ষক আর পাঁচ শিক্ষার্থী দিয়ে চলছে সরকারি বিদ্যালয়
কলকাতায় যুদ্ধের প্রস্তুতি মমতা সরকারের
কলকাতায় যুদ্ধের প্রস্তুতি মমতা সরকারের