সংবিধান সমুন্নত রাখা, অংশগ্রহণমূলক একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ সৃষ্টি, ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখা— এ তিনটি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবেন দেশের ২১তম রাষ্ট্রপতি। এমনটাই মনে করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও বুদ্ধিজীবীরা।
চলতি বছরেই একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এই নির্বাচনকে ঘিরে দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক শক্তি আওয়ামী লীগ ও বিএনপি পরস্পরবিরোধী অবস্থান গ্রহণ করেছে।
আওয়ামী লীগ বলছে, সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনেই আগামী নির্বাচন হবে। অন্যদিকে বিএনপির দাবি, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। ফলে তার অধীনে নির্বাচনে অংশ নিতে চায় না দলটি।
এই পরস্পরবিরোধী অবস্থান দেশে চরম অস্থিরতা তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা বিশ্লেষকদের। ইস্যুটিকে ঘিরে রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন তারা। এ অবস্থায় রাষ্ট্রপতিকে অভিভাবকের দায়িত্ব নিতে হতে পারে। নতুন রাষ্টপতি এমন পরিস্থিতিতে কী পদক্ষেপ নেবেন তা দেখার অপেক্ষায় অনেকেই।
নতুন রাষ্ট্রপতি হিসেবে যিনি দায়িত্ব নেবেন তার সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ দেখা দেবে বলে মন্তব্য অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুনের। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘দেশে অংশগ্রহণমূলক একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ সৃষ্টি করা রাষ্ট্রপতির চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে অন্যতম। নির্বাচনকে ইস্যু করে দেশে যেন কোনও অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয় সেদিকে নতুন রাষ্ট্রপতিকে অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করতে হতে পারে। যদিও আমাদের দেশে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা সীমিত।’
এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘নতুন রাষ্ট্রপতির সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ সংবিধান সমুন্নত রাখা ও একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করা। জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতিতে অনাকাঙ্ক্ষিত কোনও পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে অভিভাবক হিসেবে তার সমাধানও রাষ্ট্রপতিকে করতে হবে। ফলে এগুলো বড় চ্যালেঞ্জ।’
তবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবউল আলম হানিফ মনে করেন নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের (ইসি)। তার ভাষ্য, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে রাষ্ট্রপতির কোনও চ্যালেঞ্জ দেখছি না। তবে তার দায়িত্ব রয়েছে, তা হলো সংবিধান সমুন্নত রাখা।’
এ বছরের এপ্রিলে শপথ নেবেন নতুন রাষ্ট্রপতি। আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। এখন রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মো. আবদুল হামিদ।