X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

পাকিস্তানে আটকে পড়া বাঙালিদের পরিবারের নিরাপত্তায় বঙ্গবন্ধুর উদ্যোগ

উদিসা ইসলাম
১৫ জুলাই ২০২০, ০৭:৫৯আপডেট : ১৫ জুলাই ২০২০, ০৭:৫৯

পাকিস্তানে আটকে পড়া বাঙালিদের পরিবারের নিরাপত্তায় বঙ্গবন্ধুর উদ্যোগ ১৯৭২ সালের ১৫ জুলাই। তখনও পাকিস্তানে আটকে আছে হাজার হাজার বাঙালি পরিবার। তার মধ্যে যারা সরকারি কর্মচারী তাদের পরিবারের পোষ্যদের জন্য খোরাকি ভাতার ব্যবস্থা করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এই দিনে এক আদেশে স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে তিনি পাকিস্তানে আটক বাঙালি সামরিক ও বেসামরিক কর্মচারীদের পোষ্যদের খোরাকি ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। আদেশ জারির বিষয়টি জানিয়ে সংবাদ সংস্থা বাসসের খবরে বলা হয়, সরকার আটক ব্যক্তিদের বেতনের এক-তৃতীয়াংশ হারে সর্বোচ্চ ৪শ’ এবং সর্বনিম্ন একশ’ টাকা হারে ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

পাকিস্তানে আটকে পড়া বাঙালিদের পরিবারের নিরাপত্তায় বঙ্গবন্ধুর উদ্যোগ

বঙ্গবন্ধু সাক্ষাতের হার কমিয়ে আনেন। অতিরিক্ত কাজের চাপের কারণে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সৌজন্য সাক্ষাৎপ্রার্থীদের অপেক্ষা করতে বলে একটি আদেশ জুনের মাঝামাঝি সময়ে জানানো হয়। ১৯৭২ সালের ১৫ জুলাই গণভবনে আসামের গোয়ালপাড়া জেলা সাংস্কৃতিক দল আসে। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তারা। এই সাংস্কৃতিক দলের একটি ছোট্ট মেয়ে বঙ্গবন্ধুকে ফুলের তোড়া উপহার দেন। ১৯৭২ সালের ১৬ জুলাই প্রথম সারির প্রতিটি পত্রিকায় প্রথম পাতায় ওই ছবি প্রকাশিত হয় ।

পাকিস্তানে আটকে পড়া বাঙালিদের পরিবারের নিরাপত্তায় বঙ্গবন্ধুর উদ্যোগ

১৯৭২ সালের ১৬ জুলাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বৃক্ষরোপণ পক্ষ অভিযান সাফল্যমণ্ডিত করে তোলার জন্য জনসাধারণের প্রচেষ্টা ও আন্তরিক সহযোগিতার আবেদন জানান। বাসসের খবরে বলা হয়, ১৫ জুলাই বৃক্ষরোপণ অভিযান শুরুর প্রাক্কালে এক বাণীতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী প্রত্যেকটি লোককে একটি করে হলেও গাছ রোপণের আহ্বান জানান এবং দেশের বনজ সম্পদ উন্নয়নের অংশগ্রহণের স্মারক হিসেবে গাছটিকে সযত্নে লালন পালন করতে বলেন।

বঙ্গবন্ধুর দুজন বিশেষ দূত আরব জাহান ও আফ্রিকায় যাবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস সামাদ ঘোষণা করেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দুজন বিশেষ দূত আরব বিশ্ব ও আফ্রিকার দেশগুলো সফরকালে আফ্রিকার দেশগুলোর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করবেন এবং সরকারের বক্তব্য তুলে ধরবেন। এই বিশেষ দূতদ্বয় পাকিস্তানে আটক বাঙালিদের বিষয়ে জনমত গড়ার কাজও করবেন। আরব বিশ্বের জন্য প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হবেন ২৫ মার্চের গণহত্যার প্রতিবাদে পদত্যাগ করা কূটনীতিক আকবাল আতহার। পররাষ্ট্র দফতরের অফিসার এবং লেবাননে নিযুক্ত পাকিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রদূত এম আর আহমেদ আফ্রিকার দেশগুলো সফর করবেন।

বাংলাদেশ সরকার ১৯৭২ সালের সার্ভিসেস আদর্শের অধীনে দুটি বোর্ড গঠনের কথা ঘোষণা করা হয়। প্রথম বোর্ডের প্রধান হলেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সৈয়দ উদ্দিন তালুকদার। বোর্ডের অন্য সদস্যরা হলেন আইন ও পার্লামেন্টারি দফতরের জয়েন সেক্রেটারি আনোয়ার হোসেন এবং অবসরপ্রাপ্ত এডিসি মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী । দ্বিতীয় বোর্ডের প্রধান প্রথম শ্রম আদালতের প্রাক্তন চেয়ারম্যান জনাব এস এম রাশেদ। অন্য সদস্যরা হলেন প্রথম শ্রম আদালতের প্রাক্তন চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এন এইচ চৌধুরী এবং আইন মন্ত্রণালয় সাবের যুগ্মসচিব হেসাব উদ্দিন মণ্ডল।

পাকিস্তানে আটকে পড়া বাঙালিদের পরিবারের নিরাপত্তায় বঙ্গবন্ধুর উদ্যোগ

পাকিস্তানের কণ্ঠে নতুন সুর

বেশ কিছু দিন থেকে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জুলফিকার আলী ভুট্টো পাকিস্তানের যুদ্ধবন্দিদের মুক্তিদান, বাংলাদেশের বিশ্বদরবারে উপস্থিতি নিয়ে কথা বলা ও শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে আলাপ করছিলেন। মাঝে সিমলা চুক্তি আলোচনার সময় তিনি নরম সুরে কথা বললেও হঠাৎ তিনি গৃহযুদ্ধে জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী বিচার হয় কিনা সেই নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তোলেন।

তিনি বলেন, গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতিতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কোনও কানুন নেই। জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী পাকিস্তানের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবে বলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সম্প্রতি সাংবাদিক সম্মেলনে করা মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ভুট্টো এ মন্তব্য করেন। এনিয়ে ১৫ জুলাই রেডিও পাকিস্তানে পর্যালোচনা প্রচারিত হয়। গত বছর পূর্ব পাকিস্তানে যুদ্ধ করার জন্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে তারা কাজ করেছে। ফলে আন্তর্জাতিক আইনের কোনও ধারা অনুযায়ী তাদের যুদ্ধাপরাধী বলা যাবে না। কর্তৃপক্ষ তাদের বিচারের ব্যবস্থা করলে তাতে তিক্ততা বৃদ্ধি পাবে।

 

এমআর/
সম্পর্কিত
ভূমিহীনমুক্ত হচ্ছে সাতক্ষীরার ৬ উপজেলা, প্রস্তুত ৩৬৪টি ঘর
‘প্রধানমন্ত্রীর উপহার বেঁচে থাকার সাহস জুগিয়েছে’
রাহমানের কণ্ঠে ‘জয় বাংলা’, ভিডিও করলেন মুগ্ধ প্রধানমন্ত্রী
সর্বশেষ খবর
লোকসভা নির্বাচন: মণিপুরে ভোটকেন্দ্রে সংঘর্ষ
লোকসভা নির্বাচন: মণিপুরে ভোটকেন্দ্রে সংঘর্ষ
ওঠানামা করছে মুরগির দাম, বাড়ছে সবজির
ওঠানামা করছে মুরগির দাম, বাড়ছে সবজির
শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে
শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে
দেয়ালের দেশ: মন খারাপ করা সিনেমা
সিনেমা সমালোচনাদেয়ালের দেশ: মন খারাপ করা সিনেমা
সর্বাধিক পঠিত
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ