X
রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫
২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বাস্তবতা স্বীকার করে নিতে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ বিবৃতি

উদিসা ইসলাম
০৯ নভেম্বর ২০২০, ০৮:০০আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০২০, ০৮:০০

বাস্তবতা স্বীকার করে নিতে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ বিবৃতি (বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর সরকারি কর্মকাণ্ড ও তার শাসনামল নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে বাংলা ট্রিবিউন। আজ পড়ুন ওই বছরের ৯ নভেম্বরের ঘটনা।)

ভারত-বাংলাদেশ কর্মকর্তা পর্যায়ের বৈঠক শেষে সংবাদপত্রে প্রদত্ত এক যুক্ত বিবৃতিতে বলা হয়, উভয়পক্ষ এই মর্মে সম্পূর্ণ একমত যে উপমহাদেশে সম্পর্ক স্বাভাবিক করা ও দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে প্রাথমিক পদক্ষেপ হবে উপমহাদেশের বর্তমান বাস্তবতাকে স্বীকার করে নেওয়া। বিবৃতিতে বিপুল সংখ্যক বাঙালিকে রাজনৈতিক জিম্মি হিসেবে পাকিস্তানে আটক করে রাখার নিন্দা করা হয় এবং বলা হয়, পাকিস্তানের যুদ্ধবন্দিদের সঙ্গে নিরপরাধ বাঙালিদের এক করে দেখার কোনও যুক্তি থাকতে পারে না। আলোচনায় বাংলাদেশের কর্মকর্তা দলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র সচিব এনায়েত করিম। ভারতীয় দলের নেতৃত্ব দেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব টি এন কাউল। উল্লেখ্য, পাকিস্তান যুদ্ধবন্দিদের মুক্ত করতে বাংলাদেশিদের আটক করে রাখায় বরাবরই প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কোনও আলাপে বসতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছেন। তিনি বলেন, পাকিস্তানকে যেকোনও আলাপে বসার আগে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশের বাস্তবতা মেনে না নিলে কোনও বৈঠক হবে না।
এর আগে ৪ নভেম্বর তথ্যমন্ত্রী মিজানুর রহমান চৌধুরী বলেন, স্বীকৃতির আগে পাকিস্তানের সাথে কোন আলোচনা নয়। মিজানুর রহমান চৌধুরী এক সাক্ষাৎকারে বলেন, বাংলাদেশকে স্বীকৃতি ও সমতার ভিত্তিতে আলোচনার সম্মতি পাকিস্তান ও বাংলাদেশের আলোচনা বৈঠক শুরু হওয়ার প্রথম শর্ত। যুদ্ধাপরাধের প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, অপরাধী অপরাধীই। যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তির প্রশ্ন আর বাংলাদেশকে স্বীকৃতিদানের প্রশ্ন এক করে দেখা যুক্তিসঙ্গত নয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশ আজ একটি বাস্তব সত্য। কোনও দেশ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রশ্নে অন্য কোনও সরকারের ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর নির্ভর করে থাকতে পারেন না।

বাস্তবতা স্বীকার করে নিতে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ বিবৃতি

ভুট্টোর উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ

‘সত্যিই যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তির ব্যাপারে আগ্রহী হলে তবে ভুট্টো নিশ্চয়ই বাংলাদেশের সঙ্গে একটি সমঝোতায় উপনীত হতেন। তিনি নিশ্চয়ই বাংলাদেশ সরকারের নীতি অনুযায়ী স্বীকৃতি প্রদানের মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনার সূত্রপাত করতেন’—জাতিসংঘের ২৭তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদানকারী উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রতিনিধি এ অভিমত ব্যক্ত করেন। কূটনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল বিশ্বাস করেন যে বাংলাদেশ বহু অপ্রতিরোধ্য বাধার পথ অতিক্রম করেছে এবং এখন বাংলাদেশের সম্মুখে প্রগতি ও সমৃদ্ধির স্বর্ণদুয়ার উন্মোচিত।

পর্যবেক্ষক মহল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে ঢাকায় অনুষ্ঠিত দুজন পাকিস্তানি সাংবাদিকের সাক্ষাৎকারের কথা উল্লেখ করে বলেন, এই সাক্ষাৎকারে বঙ্গবন্ধু আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে জেনেভা চুক্তি বাস্তবায়ন সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন। এই সমস্ত সমস্যাকে উপমহাদেশে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টার সামগ্রিক পটভূমিতে বিচার করে দেখতে হবে। স্বাধীনতার মাত্র নয় মাস পরে রেকর্ড সময়ের মধ্যে একটি সংবিধান পাস এবং সাধারণ নির্বাচনের দিন ঘোষণার মাধ্যমে বাংলাদেশ তার মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বলেও মন্তব্য করেন তারা।

বাংলাদেশ-রুমানিয়া যুক্ত ইশতেহার

বাংলাদেশ ও রুমানিয়ার মধ্যে স্বাক্ষরিত এক যুক্ত ইশতেহারে বলা হয় যে শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে উপমহাদেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে হবে। রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ও সমতা, জাতীয়তার প্রতি সম্মান প্রদর্শন, রাষ্ট্রীয় ভূখণ্ডের অখণ্ডতার প্রতি পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ এবং বাইরের কোনও শক্তির হস্তক্ষেপ না করার নীতিই হবে আলোচনার ভিত্তি। বাসসের খবরে বলা হয়, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস সামাদের চারদিনব্যাপী রুমানিয়া সফর শেষে প্রকাশিত যুক্ত ইশতেহারে এসব কথা বলা হয়। দুই দেশের রাজধানী থেকে একই সাথে ইশতেহার প্রচারিত হয়। বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ ও পারস্পরিক সমঝোতার মধ্যে দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী সরকারি পর্যায়ে কথাবার্তা বলেন। তারা সন্তুষ্ট চিত্তে লক্ষ করেছেন যে দুদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পরে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে।

এবার উত্তরাঞ্চল থেকে রেশনে দুর্নীতির খবর

মৌলভীবাজার সিলেটের পরে এবার উত্তরাঞ্চলের পাবনা জেলার বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলের সরকারি যে রেশনের খাদ্যদ্রব্য সেসব নিয়ে যথেষ্ট দুর্নীতির খবর আসতে থাকে। অভিযোগ আসে, এসব জেলাতে অনেকেই রেশনের জিনিসপত্র বিশেষ করে খাদ্যদ্রব্য, সয়াবিন তেল ও চিনি গুদাম থেকে বের করে রাস্তাতেই কালোবাজারে বিক্রি করে দিচ্ছে। এসব মাল বিক্রি করে তারা গ্রামে গিয়ে জানায় মাল পাওয়া যায়নি বা আসেনি। গ্রামের নিরীহ জনসাধারণ সেসব কথা বিশ্বাস করে হাট-বাজার থেকে আকাশচুম্বী মূল্যে খাদ্যদ্রব্য সংগ্রহ করছে। এদিকে গ্রামের হাটবাজারের যথেচ্ছ রেশনের চাল গম সয়াবিন তেল প্রকাশ্য কালোবাজারে বিক্রি হচ্ছে।

/এমআর/এমওএফ/
সম্পর্কিত
মুজিব বর্ষ উদযাপনে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়-বিভাগের খরচ ১২৬১ কোটি
ভূমিহীনমুক্ত হচ্ছে সাতক্ষীরার ৬ উপজেলা, প্রস্তুত ৩৬৪টি ঘর
‘প্রধানমন্ত্রীর উপহার বেঁচে থাকার সাহস জুগিয়েছে’
সর্বশেষ খবর
রোনালদো মনে করেন, চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ীর কাছেই ব্যালন ডি’অর থাকা উচিত
রোনালদো মনে করেন, চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ীর কাছেই ব্যালন ডি’অর থাকা উচিত
যুক্তরাজ্যে হালাল মাংস ও বোরকা নিয়ে বিতর্কে উদ্বিগ্ন মুসলিমরা
যুক্তরাজ্যে হালাল মাংস ও বোরকা নিয়ে বিতর্কে উদ্বিগ্ন মুসলিমরা
লক্ষ্মীপুরে জুলাই শহীদদের সম্মানে ১৪ গরু কোরবানি
লক্ষ্মীপুরে জুলাই শহীদদের সম্মানে ১৪ গরু কোরবানি
সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে হামাস সদস্যকে লক্ষ্য করে ইসরায়েলি হামলা
সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে হামাস সদস্যকে লক্ষ্য করে ইসরায়েলি হামলা
সর্বাধিক পঠিত
অবশেষে জুলাইয়ে চালু হচ্ছে ভূমি মালিকানা সনদ
অবশেষে জুলাইয়ে চালু হচ্ছে ভূমি মালিকানা সনদ
লন্ডনে ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করতে চান টিউলিপ সিদ্দিক
লন্ডনে ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করতে চান টিউলিপ সিদ্দিক
এবার ৪৪ জন আমলাকে অপসারণের দাবিতে পোস্টার
এবার ৪৪ জন আমলাকে অপসারণের দাবিতে পোস্টার
মায়ের কবরে আবেগঘন শুভ: আকাশটাও কাঁদছিলো…
মায়ের কবরে আবেগঘন শুভ: আকাশটাও কাঁদছিলো…
কমিটি গঠনের দুই দিনের মধ্যে এনসিপির দুই নেতার পদত্যাগ
কমিটি গঠনের দুই দিনের মধ্যে এনসিপির দুই নেতার পদত্যাগ