নানা রঙের খেলা এবং তুলির আঁচড়ে নানা আকারের ক্যানভাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছে শিশু-কিশোররা। শুক্রবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি প্রাঙ্গণে এই ভিন্নধর্মী আয়োজন করে ‘হাসুমণির পাঠশালা’ নামের একটি সংগঠন।
স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত শিল্পী এবং মুক্তিযোদ্ধা শাহাবুদ্দিন আহমেদ অনুষ্ঠানের শুরুতেই বেলুন এবং পায়রা উড়িয়ে এই চিত্রাঙ্কন কর্মশালা উদ্বোধন করেন।
এ সময় শিল্পী শাহাবুদ্দিন বলেন, ‘ওদের মতো কিন্তু আমিও স্কুলে পড়েছি। তাদের আর আমার মধ্যে এখন অনেক তফাৎ। শিশুরা ফুলের মতো, ওদের যা-ই দেওয়া হবে তা নিয়ে বড় হবে। শিশুদের নিয়ে এ ধরনের উচ্চমানের আয়োজনের মতো উপহার আর কি হতে পারে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর জন্য, বিশেষ করে বঙ্গবন্ধুর কন্যার জন্য। এই শিশুরা যখন বড় হবে, তখন তারা এই দিনটাকে স্মরণ করে বলবে- এইদিনে আমরা এঁকেছিলাম। শেখ হাসিনার জন্মদিনে আমরা এঁকেছিলাম।’
শিল্পী শাহাবুদ্দিন আরও বলেন, ‘এই শিক্ষা ছোটবেলা থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শেখানো হয়। আমাদের দেশেও শুরু হয়েছে। ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হয়েছে, আর আজকে আমি এখানে। এখানে যে আসবো এটা আমি কোনও দিন ভাবিনি। এতেই প্রমাণিত হয় ‘জয় বাংলা’র একটি নিজস্ব শক্তি আছে। শিশু মানেই একদম সরল, ওদের যাই শিক্ষা দেওয়া হবে, তারা তা-ই গ্রহণ করবে।’
তিনি বলেন, ‘রঙের খেলা কিন্তু ভিন্ন, নাচ গান একরকম। রঙের খেলাটা একটু কঠিন, বেশি জনপ্রিয় না, সময় লাগে। লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি, মাইকেল অ্যাঞ্জেলো—এদের দেখলেই বুঝা যায়। আর এই খেলাটা টিকে যায়। কারণ, এটা পিওর, ইউনিভার্সেল।’
এরপর দেশবরেণ্য এই শিল্পী শিশুদের সঙ্গে নিয়ে দাঁড়িয়ে যান ক্যানভাসের সামনে, হাতে নেন ব্রাশ এবং তুলি। লাল, সবুজ, সাদা, কালো—এই চার রঙের সমন্বয়ে মাত্র ১৫ মিনিটেই ক্যানভাসে ফুটিয়ে তোলেন মায়ের কোলে এক শিশুর অবয়ব। এই সময় দর্শক এবং শিশুরা মুগ্ধ হয়ে তা দেখেন।
শিল্পীর তুলি দিয়ে শুরু হওয়া এই রঙর খেলায় ধীরে ধীরে মেতে ওঠে অন্য শিশুরাও। কেউ দেশের ছবি আঁকছে, কেউবা আঁকছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পোট্রেট। সেই পোট্রেটের নিচে কিংবা ওপরে কেউ কেউ লিখেছে ‘শুভ জন্মদিন প্রধানমন্ত্রী’, ‘শেখ হাসিনা আমাদের বাংলাদেশের গর্ব।’ কেউ কেউ এঁকেছে বাংলাদেশের পতাকা, আবার কেউবা এঁকেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পোট্রেট।
এছাড়া, এই আয়োজনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠানে প্রদর্শন করা হয় তার ৭১টি প্রতিকৃতি। শিল্পীদের হাতে আঁকা এই ছবিরও ভূয়সী প্রশংসা করেছেন শিল্পী শাহাবুদ্দিন। অনুষ্ঠান শেষে তিনি ঘুরে ঘুরে এই পোট্রেটগুলো দেখেন।
শুক্রবার সকালে অনুষ্ঠানের শুরুতে ছোট্ট শিশুদের সঙ্গে নিয়ে কেক কেটে হাসুমণির পাঠশালার এক বছর পূর্তির আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন শিশু ও মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসিমা বেগম, হাসুমণির পাঠশালার সভাপতি মারুফা আক্তার পপি, দেশবরেণ্য শিল্পী মনিরুজ্জামান মনিরসহ বিশিষ্টজনেরা।