X
রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪
১৫ বৈশাখ ১৪৩১

যেসব কারণে শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ স্থাপন প্রকল্প সংশোধন

শফিকুল ইসলাম
২৫ জানুয়ারি ২০২০, ১৫:৫০আপডেট : ২৬ জানুয়ারি ২০২০, ১০:০৩

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়

জামালপুরে ‘শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ’ স্থাপন প্রকল্পটি অনুমোদনের প্রায় চার বছর পর সংশোধন করা হয়েছে। এর অংশ হিসেবে প্রকল্পটির নামেও পরিবর্তন আনা হয়। এবার ‘শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজ স্থাপন, জামালপুর’ নামে প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে এসব সংশোধনী প্রস্তাবসহ প্রকল্পটি অনুমোদন করেছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

কমিশন সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পটি সংশোধন করতে গিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, প্রায় চার বছর আগে ২০১৪ সালে অনুমোদিত প্রকল্পটি গণপূর্ত অধিদফতরের দর তফসিল অনুযায়ী প্রণয়ন করা হয়েছে। বর্তমানে নির্মাণ ব্যয় অনুমোদিত সংস্থানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তাই নির্মাণ খাতে ব্যয় বেড়েছে। শুধু তাই নয়, প্রকল্প প্রস্তাবনায় প্রকল্পের বিভিন্ন অংশের সঙ্গে সীমানা প্রাচীরসহ অন্যান্য উল্লেখযোগ্য উপখাত অন্তর্ভুক্ত ছিল না। বাস্তবতার প্রয়োজনে সংশোধিত প্রস্তাবে প্রকল্প এলাকাজুড়ে সীমানা প্রাচীর  অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে সংশোধিত প্রস্তাবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, হাসপাতাল ভবনের নির্মাণ কাজ ভারতীয় ক্রেডিট লাইন (এলওসি)-এর আওতায় চুক্তি অনুযায়ী ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে আদর্শ দরপত্র দলিল প্রস্তুত করা, দরপত্র আহ্বান করা এবং ভবন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার জন্য প্রকল্পের মেয়াদ ৩১ ডিসেম্বর ২০২১ পর্যন্ত ২ বছর ৬ মাস বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। সবশেষে প্রকল্পটি সংশোধনের কারণ সম্পর্কে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, জামালপুর মেডিক্যাল কলেজের নাম পরিবর্তন করে ‘শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ, জামালপুর’ করায় প্রকল্পের শিরোনাম পরিবর্তন করা হয়েছে এবং প্রকল্পটির নতুন শিরোনাম করা হয়েছে ‘শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজ স্থাপন, জামালপুর’।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় ও কমিশন সূত্রে জানা গেছে, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে স্বাস্থ্য অধিদফতর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। চিকিৎসা শিক্ষার জন্য অবকাঠামো গড়ে তোলা, অধিক সংখ্যক চিকিৎসক তৈরির মাধ্যমে ডাক্তার ও জনসংখ্যার অনুপাত যৌক্তিকীকরণ, চিকিৎসা শিক্ষার ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ করা, জামালপুর এবং এর আশপাশের জেলার জনগণকে আধুনিক চিকিৎসাসেবা প্রদান করা, বিশেষ সেবা প্রদানের মাধ্যমে সাশ্রয়ী মূল্যে স্বাস্থ্য পরিচর্যা নিশ্চিত করা এবং নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করাই এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য।

জানা গেছে, প্রকল্পটি জামালপুর সদর উপজেলায় স্থাপিত হবে। ২০১৬ সাল থেকে শুরু হওয়া প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ আগামী ২০২১ সালের ৩০ জুনের মধ্যে শেষ হবে। এজন্য মোট ব্যয় হবে ৯৫০ কোটি ৫০ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। যার মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেওয়া হবে ৬৭০ কোটি ৫০ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। বাকি ২৮০ কোটি টাকা প্রকল্প ঋণ বাবদ ভারতীয় ক্রেডিট লাইন (এলওসি) থেকে পাওয়া যাবে।   

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্প প্রস্তাবনা অনুসারে ১০ তলা ভিত বিশিষ্ট একটি ৬ তলা হাসপাতাল ভবন নির্মাণ করা হবে। ৮ তলা ভিত বিশিষ্ট ৬ তলা একটি অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণ করা হবে। ৮ তলা ভিত বিশিষ্ট ৪ তলা একটি ছাত্র হোস্টেল ভবন নির্মাণ করা হবে। ৮ তলা ভিত বিশিষ্ট ৪ তলা একটি ছাত্রী হোস্টেল ভবন নির্মাণ করা হবে। পুরুষ ও মহিলা ইন্টার্ন ডাক্তারদের জন্য ডরমেটরি ভবন নির্মাণ করা হবে। এছাড়া পুরো প্রকল্পটির জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হবে ৩৫ একর। হাসপাতাল ও  কলেজের জন্য আধুনিক মেডিক্যাল যন্ত্রপাতি ও আসবাবপত্র সংগ্রহ করা হবে। যানবাহন কেনা হবে।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, পুষ্টি ও জনসংখ্যা খাতে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার অভীষ্ট, কৌশল এবং লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে বাংলাদেশে সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষাসহ জাতিসংঘের প্রস্তাবিত টেকসই উন্নয়ন (এসডিজি) লক্ষ্যগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ লক্ষ্য অর্জনের উল্লেখ রয়েছে। প্রস্তাবিত প্রকল্পটি সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার আওতায় চিহ্নিত সূচকগুলোর অগ্রগতিতে গুরুত্বর্পূণ অবদান রাখবে এবং চিকিৎসাসেবার মান বাড়াবে। একারণেই প্রকল্পটি সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।

পরিকল্পনা কমিশন মনে করে, নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পটি শেষ করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদফতর ও আইএমইডি কর্তৃক নিবিড় তদারকি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান জানিয়েছেন, প্রকল্পটি পুরোপুরি বাস্তবায়ন হলে অবহেলিত জামালপুরসহ আশপাশের এলাকার মানুষের স্বাস্থ্যসেবার বিষয়টি নিশ্চিত হবে। মানুষ উন্নত সেবা পাবে। তাদের আর উন্নত চিকিৎসাসেবা নিতে ঢাকায় আসতে হবে না।

জানতে চাইলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন, সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে উন্নত সেবা দিতেই নির্মিত হচ্ছে শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। যেটি অপেক্ষাকৃত অনুন্নত এলাকা জামালপুরে স্থাপিত হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে ওই এলাকার মানুষ উন্নত চিকিৎসাসেবা নিতে পারবে।

/এএইচ/এমএমজে/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
জাতীয় দল রেখে ঢাকা লিগে সাকিবের খেলার ব্যাখ্যা দিলেন নির্বাচক
জাতীয় দল রেখে ঢাকা লিগে সাকিবের খেলার ব্যাখ্যা দিলেন নির্বাচক
পাপন শুনেছেন, তামিম নাকি সামনের বছর ফিরবেন!
পাপন শুনেছেন, তামিম নাকি সামনের বছর ফিরবেন!
তিনটি গ্রাম থেকে সেনা সরিয়ে নিলো ইউক্রেন
তিনটি গ্রাম থেকে সেনা সরিয়ে নিলো ইউক্রেন
ভেসে আসা ‘টর্পেডো’ উদ্ধারে কাজ করছে নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড
ভেসে আসা ‘টর্পেডো’ উদ্ধারে কাজ করছে নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড
সর্বাধিক পঠিত
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
ইমিগ্রেশনেই খারাপ অভিজ্ঞতা বিদেশি পর্যটকদের
ইমিগ্রেশনেই খারাপ অভিজ্ঞতা বিদেশি পর্যটকদের
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে