করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে নিম্ন আয়ের মানুষদের উপার্জনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। একই কারণে তাদের খাবার জোগাড় করাও কঠিন হয়ে পড়েছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে বৃষ্টি। বৃষ্টিতে ভিজে ভিজেই অপেক্ষা করতে হচ্ছে অনেককে। আবার অনেকেই খাবারের আশায় থেকে খালি হাতে ফিরে গেছেন ঘরে। এই বৃষ্টি উপেক্ষা করেই অনেকে আবার বেরিয়েছেন রাস্তায় অসহায় মানুষগুলোর হাতে খাবার তুলে দিতে। বৃষ্টির কারণে তাদের খাবার বিতরণেও পড়তে হয়েছে দুর্ভোগে।
আবহাওয়া অধিদফতরের দেওয়া তথ্য মতে, লঘুচাপের প্রভাবে আকাশে ভারী মেঘমালার সৃষ্টি হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া সপ্তাহজুড়েই থেমে থেমে বৃষ্টি হবে। একই কারণে নদীবন্দরে দেওয়া হয়েছে সতর্কবার্তা। দেশের সবগুলো নদীবন্দরকে এক নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
রবিবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরের পর থেকে রাজধানীসহ সারাদেশে থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে। এতে খাবার জোগাড় করতে চরম বিপাকে পড়েছে সাধারণ মানুষ। রাস্তার পাশে নিম্ন আয়ের অনেক মানুষের অপেক্ষা ছিল যদি কেউ খাবার নিয়ে আসে। এসব মানুষদের জন্য খাবার নিয়ে এগিয়ে এসেছেন কেউ কেউ।
বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের সেচ্ছাসেবীরা রবিবার ঢাকায় ১০ হাজার ৫৮২ জন অসহায় মানুষকে ইফতার এবং ৯২০ জন মানুষের জন্য সেহরির ব্যবস্থা করেছে। বিদ্যানন্দের সেচ্ছাসেবীরা বৃষ্টি উপেক্ষা করেই এসব মানুষের জন্য খাবার সরবরাহ করেছেন। খাবার সরবরাহ করা এলাকাগুলোর মধ্যে আছে মিরপুর-১৪, মোহাম্মদপুর, জেনেভা ক্যাম্প, টিক্কাপাড়া, ভাসানটেক এলাকায়।
সংগঠনটির ঢাকা অফিসের ইনচার্জ সালমান খান ইয়াসীন বলেন, ‘বৃষ্টির মধ্যেও আমাদের স্বেচ্ছাসেবকরা আজকে ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় প্রায় সাড়ে ১০ হাজার মানুষের জন্য খাবার দিয়েছে। আমাদের তিনটি রান্নাঘর থেকে এই খাবারগুলো সরবরাহ হয়েছে। খিলগাঁও, টিপু সুলতান রোড এবং কেরানীগঞ্জে রান্না করে এই খাবার সরবরাহ করা হয়।’
অসহায় মানুষের জন্য বৃষ্টির মধ্যেও খাবারের ব্যবস্থা করেছেন ফেরদৌস আহমেদ উজ্জ্বল। রবিবার ৭০ জনের জন্য খিচুড়ি তৈরি করেছেন তিনি। এরপর কয়েকজন মিলে সেটি বিতরণ করেছেন রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শেখেরটেক এলাকায়। উজ্জ্বল বলেন, ‘আজকে আমরা ৭০ জনের জন্য রান্না করতে পেরেছি। আমরা যেখানে রান্না করি সেটি একটি বাড়ির ছাঁদের খোলা জায়গা। বৃষ্টির কারণে অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। তারপরও চেষ্টা করেছি অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে। আমরা কালকে থেকে চেষ্টা করবো ১০০ মানুষের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করবে।’
ব্যক্তি উদ্যোগে নিজ এলাকায় অসহায় মানুষদের খাবার দিয়েছেন কামরুল হাসান লিংকন ও মাসুদ পারভেজ সম্রাট। ধানমন্ডি এলাকায় ১২৫ জন অসহায় মানুষকে খাবার দিয়েছেন তারা দুই জন। কামরুল হাসান জানান, বৃষ্টির মধ্যে মানুষের অনেক কষ্ট। আমাদের পক্ষে তো সবাইকে দেওয়া সম্ভব না, তাই যত জনকে পেরেছি দিয়েছি। অনেকেই এসে খাবার পাননি, এজন্য আমাদেরও খুব খারাপ লাগছে।