দেশে বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলোতে রোগীর রোগ নির্ণয়ে নমুনা পরীক্ষার ফি নিয়ে চলছে নৈরাজ্য। একই নমুনা পরীক্ষার ফি হাসপাতাল ভেদে একেক রকম। বেসরকারি হাসপাতালে রক্তের কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট(সিবিসি) বা রক্তের সাধারণ নমুনা পরীক্ষার খরচ সর্বনিম্ন ৪০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৭৫০ টাকা পর্যন্ত রয়েছে। যেখানে এই নমুনা পরীক্ষার প্রকৃত মূল্য হওয়ার কথা ২০ থেকে ৩০ টাকা। অপরদিকে আলট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষার সর্বনিম্ন মূল্য নেওয়া হচ্ছে ১ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২ হাজার টাকা পর্যন্ত, যেখানে এর প্রকৃত মূল্যমান হওয়া উচিত সর্বোচ্চ ১ হাজার টাকা। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এমনটাই জানা গেছে।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, ধানমন্ডিতে অবস্থিত ল্যাবএইড স্পেশাল ও ল্যাবএইড কার্ডিয়াক হাসপাতালে সিবিসি পরীক্ষায় খরচ হয় ৫৭০ টাকা, আলট্রাসনোগ্রাম অব অ্যাবডোমেনে খরচ হয় ২ হাজার টাকা এবং রক্তের গ্রুপ পরীক্ষায় খরচ হয় ২৬০ টাকা। ল্যাবএইড উত্তরা শাখায় সিবিসি ৫৫৫, আলট্রাসনোগ্রাম অব অ্যাবডোমনে ২ হাজার ও ১৫০০ এবং রক্তের গ্রুপ নির্ধারণ পরীক্ষায় নেওয়া হয় ২৫০ টাকা, যেখানে শমরিতায় রক্তের গ্রুপ নির্ধারণ পরীক্ষায় নেওয়া হয় ২০০ টাকা, সিবিসি পরীক্ষায় নেওয়া হয় ৪৯০ টাকা এবং আলট্রাসনোগ্রাম অব অ্যাবডোমেনে নেওয়া হয় ১ হাজার টাকা।
নমুনা পরীক্ষার এত পার্থক্য কেন থাকে জানতে চাইলে শমরিতা হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, দেশের করপোরেট হাসপাতালগুলোর নমুনা পরীক্ষার চার্জ অনেক বেশি যেটা আমাদের মতো গরিব দেশের জন্য না হলেই ভালো। মাত্রা সহনীয় পর্যায়ে থাকা উচিত এবং বেসরকারি চিকিৎসা সেবা আইনটি এক্ষেত্রে জরুরি বলেই মনে করেন তারা। অপরদিকে ল্যাবএইড কার্ডিয়াক হাসপাতালের এজিএম(করপোরেট কমিউনিকেশন) সাইফুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, সরকারি জমির ওপরে যে হাসপাতাল রয়েছে সেখানকার সেবা আর ধানমন্ডিতে অবস্থিত এরকম উন্নত হাসপাতালের সার্ভিস মূল্য কখনওই এক হবে না। এমনিতে এ জায়গাই অনেক পার্থক্য গড়ে দেয়, তার ওপর জনশক্তি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, সরকারি হাসপাতালে রক্তের সিবিসি পরীক্ষায় খরচ পরে ৫০ টাকা, আর যেকোনও বেসরকারি হাসপাতাল কিংবা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে খরচ পরে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। আলট্রাসনোগ্রাফি অব অ্যাবডোমেন করতে খরচ হয় সরকারি হাসপাতালে ৪৫০ টাকা, বেসরকারিতে ১ হাজার থেকে ১৪০০ টাকা; রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করতে নেওয়া হয় ২৫০ টাকা যেটা সরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয় ২০ টাকা। মধ্যবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্তের হাসপাতালগুলোর মধ্যে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের মতিঝিল শাখায় রক্তের সিবিসি পরীক্ষায় খরচ হয় ৪০০ টাকা, আলট্রাসনোগ্রাফি অব অ্যাবডোমেনে খরচ হয় ১০৩০ টাকা আর রক্তের গ্রুপ পরীক্ষায় খরচ হয় ১৪৫ টাকা। অপরদিকে গ্রিনরোডে অবস্থিত সেন্ট্রাল হাসপাতালে রক্তের সিবিসি পরীক্ষায় নেওয়া হয় ৪৫০ টাকা, আলট্রাসনোগ্রাম অব অ্যাবডোমেনে নেওয়া হয় ১২০০ টাকা এবং রক্তের গ্রুপ পরীক্ষায় নেওয়া হয় ২০০ টাকা। একই রোডে অবস্থিত গ্রীন ভিউ ক্লিনিকে সিবিসি পরীক্ষায় নেওয়া হয় ৪০০ টাকা, রক্তের গ্রুপ পরীক্ষায় নেওয়া হয় ১৫০ টাকা এবং আলট্রাসনোগ্রাম অব অ্যাবডোমেন পরীক্ষায় নেওয়া হয় ১৫০০ টাকা। গ্রীন লাইফ হাসপাতালে সিবিসি পরীক্ষায় ৫০০ টাকা, আলট্রাসনোগ্রাম অব অ্যাবডোমেনে নেওয়া হয় ১৬০০ টাকা এবং রক্তের গ্রুপ পরীক্ষায় নেওয়া হয় ২৩০ টাকা। মধ্যবিত্তের হাতের নাগালে থাকা আরেক হাসপাতাল শমরিতায় রক্তের গ্রুপ নির্ধারণ পরীক্ষায় নেওয়া হয় ২০০ টাকা, সিবিসি পরীক্ষায় নেওয়া হয় ৪৯০ টাকা এবং আলট্রাসনোগ্রাম অব অ্যাবডোমেনে নেওয়া হয় ১ হাজার টাকা। পান্থপথে অবস্থিত বাংলাদেশ স্পাইন অ্যান্ড অর্থোপেডিক হাসপাতালে রক্তের গ্রুপ পরীক্ষায় খরচ পরে ২০০ টাকা, সিবিসি পরীক্ষায় নেওয়া ৩৫০ টাকা এবং আলট্রাসনোগ্রাম অব অ্যাবডোমেনে খরচ হয় ১ হাজার টাকা।
অপরদিকে উচ্চবিত্তদের হাসপাতাল এবং করপোরেট হাসপাতাল বলে পরিচিত স্কয়ার হাসপাতালে রক্তের সিবিসি পরীক্ষায় নেওয়া হয় ৬০০ টাকা, আলট্রাসনোগ্রাম অব অ্যাবডোমেনে খরচ হয় ১৯৫০ টাকা এবং রক্তের গ্রুপ নির্ধারণে খরচ হয় ৭০০ টাকা। ইউনাইটেড হাসপাতালে ইএসআরসহ সিবিসি পরীক্ষায় খরচ হয় ৭৫০ টাকা এবং ইএসআর ছাড়া ৫৫০ টাকা, আলট্রাসনোগ্রাম অব অ্যাবডোমেনে খরচ হয় ১৮৫০ টাকা এবং রক্তের গ্রুপ পরীক্ষায় খরচ হয় ৫০০ টাকা। আবার ল্যাবএইড হাসপাতালের ধানমণ্ডি ও উত্তরা শাখায় এই খরচের তারতম্য রয়েছে। ধানমন্ডিতে সিবিসি পরীক্ষায় খরচ হয় ৫৭০ টাকা, আলট্রাসনোগ্রাম অব অ্যাবডোমেনে খরচ হয় ২ হাজার টাকা এবং রক্তের গ্রুপ পরীক্ষায় খরচ হয় ২৬০ টাকা। আর উত্তরা শাখায় সিবিসি ৫৫৫, আলট্রাসনোগ্রাম অব অ্যাবডোমনে ২ হাজার এবং ১৫০০ এবং রক্তের গ্রুপ নির্ধারণ পরীক্ষায় নেওয়া হয় ২৫০ টাকা।
অথচ সিবিসি পরীক্ষার প্রকৃত মূল্যমান ২৫ থেকে ৩০ টাকা হওয়া উচিত বলে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক চিকিৎসক। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন- তবে আলট্রাসনোগ্রাম অব অ্যাবডোমেনের মূল্যের পার্থক্যটা গড়ে দেয় টু-ডি, থ্রি-ডি ও ফোর-ডি মেশিন। তবে সবচেয়ে ভালো মেশিন ফোর-ডির আলট্রাসনোগ্রাম হলেও তার খরচ হওয়া উচিত সর্বোচ্চ ১ হাজার টাকা। আর বাকি দুই মেশিনের খরচ হবে আরও কম ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা এবং ব্লাড গ্রুপ নির্ধারণে খরচ নেওয়া উচিত সর্বোচ্চ ৫০ টাকা। এর সঙ্গে একমত পোষণ করেন একই হাসপাতালের একজন রেডিওলজিস্ট।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মূলত তিনভাবে এসব পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য যন্ত্রপাতি কেনা হয়- নগদ টাকা দিয়ে, কিস্তিতে এবং রি-এজেন্ট এগ্রিমেন্ট প্ল্যানে। যেসব যন্ত্রপাতি রি-এজেন্ট এগ্রিমেন্ট প্ল্যানের মাধ্যমে কেনা হয় সেগুলোর রিএজেন্ট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান থেকে কেনার বাধ্যবাধকতা থেকে যায় আর এ কারণেই পরীক্ষার মূল্যমানের তারতম্য হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, একটি নীতিমালা আটকে থাকলেও যেকোনও পরীক্ষার জন্য রোগীদের কত টাকা দিতে হবে তার কোনও নির্দেশনা সরকারের নেই। আর এ কারণেই একেক বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে একই রোগের নমুনা পরীক্ষার জন্য একেকরকম টাকা দিতে হচ্ছে। আর অলিগলিতে গড়ে ওঠা এসব হাসপাতাল-ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে এত টাকা নিয়ে করা পরীক্ষাগুলো কতটা মানসম্পন্ন সেটাও একটা প্রশ্ন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় কয়েক বছর ধরে বেসরকারি চিকিৎসা সেবা আইন থমকে আছে। একই কথা স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (হাসপাতাল-ক্লিনিক) সামিউল ইসলামেরও। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, এ বিষয়ে একটি নীতিমালা থাকলেও সেটি এখনও আপডেট হয়নি। নতুন স্বাস্থ্যনীতিতে আমরা এটি পাঠিয়েছি। তবে হাসপাতালগুলো নিজেদের মতো করে বিভিন্ন স্বাস্থ্য পরীক্ষার মূল্যমান বাড়িয়েছে, যেটা হওয়া উচিত না। বিষয়টি ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে জানিয়ে শামিউল ইসলাম বলেন, এটি নিয়ে নতুন আলোচনা চলছে। ক্লিনিক অ্যাসোসিয়েশনে যারা আছেন তারাও এই নীতিমালা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল আছেন এবং তারা সেটি মেনে নিয়েছেন। আইনটি পাস হয়ে গেলেই রোগীদের এ নিয়ে আর ভোগান্তিতে পরতে হবে না এবং কোনও নৈরাজ্যও থাকবে না আশা করছি।
উল্লেখ্য, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বিভিন্ন সময়ে রোগের পরীক্ষা-নিরীক্ষার এই ব্যয় নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
জানতে চাইলে ল্যাবএইড কার্ডিয়াক হাসপাতালের এজিএম (করপোরেট কমিউনিকেশন) সাইফুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বেশি হওয়ার কারণগুলো খুব সহজেই আমরা বুঝতে পারি। প্রাইভেট হাসপাতালকে যেভাবে রোগী এবং রোগীর আত্মীয়কে সার্ভিস দিতে হয় যার জন্য ট্যাকনিশিয়ান, ট্যাকনোলজিস্ট থেকে শুরু করে যেসব এক্সপার্টারদের রাখতে হয়, তাদের পেমেন্ট সরকারি হাসপাতালগুলোর স্টাফদের চেয়ে অনেক বেশি। আমাদের অবকাঠামো ভিত্তিও সরকারি হাসপাতালের চেয়ে বা প্রাইভেট ক্লিনিকগুলোর চেয়ে দামি। সরকারি জমির ওপরে যে হাসপাতাল রয়েছে সেখানকার সেবা আর ধানমন্ডিতে অবস্থিত এরকম উন্নত হাসপাতালের সার্ভিস মূল্য কখনওই এক হবে না। এমনিতে এ জায়গাই অনেক পার্থক্য গড়ে দেয় তার ওপর জনশক্তি। এছাড়া আমাদের ট্যাকনোলজি সবসময়ই আপডেটেট। আমাদের জবাবদিহিতার বিষয় রয়েছে সেবাপ্রার্থীদের কাছে সবসময়। বিভিন্ন কারণে তাদের কাছে জবাবদিহি করতে হয় এবং তারা এটাও বলে- ‘আমাদের কাছে তারা আসেই স্পেশাল সার্ভিসের জন্য। সেক্ষেত্রে তাদের খরচ করতেও বাধা নেই।’ আমাদেরকে নিশ্চিত করতে হয় যে, একজন রোগী আসা মাত্রই যেন সে তাৎক্ষণিক সার্ভিস পায়, যেটা সরকারি হাসপাতালগুলোতে সম্ভব না। ম্যানেজমেন্ট কষ্ট, স্টাবলিশমেন্ট কষ্ট, জনশক্তি খরচ সবকিছু যোগ করলে আসলে পয়সাটা একটু দিতেই হয়।
অপরদিকে সেন্ট্রাল হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. লতিফ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বিভিন্ন খরচ হিসাব করেই সেন্ট্রাল হাসপাতালে বিভিন্ন নমুনা পরীক্ষার ফি নির্ধারণ করা হয়। বেশি রাখা হয় না।
বাংলাদেশ প্রাইভেট ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এবং শমরিতা হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবিএম হারুন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, সরকার অর্থ্যাৎ স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে নমুনা পরীক্ষার চার্জ নির্ধারণ করে দেওয়ার কথা হচ্ছে। কিন্তু যারা একটু করপোরেট হাসপাতাল যাবেন যেমন- অ্যাপোলো, ইউনাইটেড, স্কয়ার, ল্যাবএইড, পপুলার– এসব হাসপাতালের চার্জ একটু বেশি। কিন্তু এসব হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও একমত হয়েছেন যে, একটা সহনীয় পর্যায়ের মূল্যমান রেখে একটি বিধিমালা করা জরুরি। আমরা আশা করছি সরকার থেকে খুব শিগগিরই একটি নির্দেশনা আমরা পাবো।
হাসপাতালের নাম | সিবিসি | আলট্রাসনোগ্রাম অব অ্যাবডোমেন | রক্তের গ্রুপ নির্ধারণ |
ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল, মতিঝিল | ৪০০ টাকা | ১,০৩০ টাকা | ১৪৫ টাকা |
সেন্ট্রাল হাসপাতাল | ৪৫০ টাকা | ১,২০০ টাকা | ২০০ টাকা |
গ্রীণ ভিউ ক্লিনিক | ৪০০ টাকা | ১,৫০০ টাকা | ১৫০ টাকা |
গ্রীণ লাইফ হাসপাতাল | ৫০০ টাকা | ১,৬০০ টাকা | ২৩০ টাকা |
শমরিতা হাসপাতাল | ৪৯০ টাকা | ১,০০০ টাকা | ২০০ টাকা |
বাংলাদেশ স্পাইন অ্যান্ড অথোপেডিক হাসপাতাল | ৩৫০ টাকা | ১,০০০ টাকা | ২০০ টাকা |
স্কয়ার হাসপাতাল লি: | ৬০০ টাকা | ১,৯৫০ টাকা | ৭০০ টাকা |
ইউনাইটেড হাসপাতাল | ৫৫০ থেকে ৭৫০ টাকা | ১,৮৫০ টাকা | ৫০০ টাকা |
ল্যাবএইড স্পেশাল এবং ল্যাবএইড কার্ডিয়াক হাসপাতাল, ধানমন্ডি | ৫৭০ টাকা | ২,০০০ টাকা | ২৬০ টাকা |
ল্যাবএইড হাসপাতাল, উত্তরা শাখা | ৫৫৫ টাকা | ১,৫০০ থেকে ২,০০০ | ২৫০ টাকা |
/এএইচ/