X
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪
৭ বৈশাখ ১৪৩১

‘মানবপাচার মামলার প্রসিকিউশনে ত্রুটিগুলোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে’

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২৯ জুলাই ২০২১, ২২:২৪আপডেট : ২৯ জুলাই ২০২১, ২২:২৪

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম বলেছেন, মানবপাচার মামলার বিচার এতো কম হয়, নয় বছরের ৩৬টি মামলায় সাজা হয়েছে। আমি মনে করি এতে পাচারকারীরা কেন উৎসাহিত হবে না? তাহলে কিভাবে বন্ধ হবে। আবার সাজাও যেটা হয় সেটাও ভালো করে প্রচার হয় না। সাজাপ্রাপ্তদের বিষয়ে প্রচারণা দরকার।

বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) সকালে আন্তর্জাতিক মানব পাচার বিরোধী দিবস উপলক্ষে ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম আয়োজিত ‘মানবপাচার ও অনিয়মিত অভিবাসন: পরিস্থিতি বিশ্লেষণ, চ্যালেঞ্জ ও ও করনীয় শীর্ষক আলোচনায় এসব কথা বলেন তিনি।’

নাছিমা বেগম বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বলবো প্রসিকিউশনে বেশ কিছু ত্রুটি থাকে। আমরা যেন প্রসিকিউশনের ত্রুটিগুলোর দিকে খেয়াল রাখি। এখানে সিআইডি’র অনেক বড় একটা ভূমিকা আছে বলে আমি মনে করি। আবার অনেকেই মানবাপাচারের শিকার হয়ে ফেরত এসে বিচার চায় না। এ জায়গাগুলোতেও আমাদের কাজ করতে হবে, তাদেরকে মোটিভেশন করা দরকার।

তিনি আরও বলেন, আইনের অনেক কঠোর প্রয়োগ করতে হবে। অনেক ভালো আইন আছে আমাদের। কিন্তু প্রয়োগ হয় না। আগামী রবিবার – সোমবারের মধ্যে আমার এখান থেকে একটা চিঠি যাবে। চিঠিতে আমরা বলবো পুলশ প্রশিক্ষণ একাডেমিসহ সব বিভাগে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান আইন এবং মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন ভালো করে শেখানোর জন্য। পাশাপাশি প্রশিক্ষণের সময় মানবাধিকারে যে মৌলিক বিষয়গুলো আছে, এগুলোকে মানবিক মূল্যবোধের দৃষ্টিকোণ থেকে মানবাধিকার নিয়ে যারা কাজ করে সবার ভেতরে একটা বোধ যেন গড়ে তোলা যায়। 

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (রাজনৈতিক ও আইসিটি) জি এস এম জাফরুল্লাহ বলেন, যে কয়টি মামলা এখন পর্যন্ত নিষ্পত্তি হয়েছে এটি মোটেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক না। এই নিষ্পত্তির পরিমাণ বাড়াতে হবে। এসব মামলা নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে যেসব অসুবিধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে পুলিশ প্রশাসনসহ সবাইকে সেটা নিয়ে আমাদের সবাইকে কাজ করতে হবে। পাচার রোধে ইতোমধ্যে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সঙ্গে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। ভারত থেকে একটি কমন স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসেডিউর (এসওপি) তৈরির কাজ চলছে। 

জনশক্তি , কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) মহাপরিচালক শহীদুল আলম, এনডিসি বলেন, যারা বিদেশে যাচ্ছে কাজের উদ্দেশ্যে তারা কোথায় যাচ্ছে,  কীভাবে যাচ্ছে, কত টাকা বেতনে যাচ্ছে এসব দেখার প্রয়োজনই মনে করে না। আমরা স্লোগান দিয়েছিলাম- ‘মুজিব বর্ষের আহ্বান, দক্ষ হয়ে বিদেশ যান’ সেটি কেউ কর্ণপাতই করছে না। আমাদের প্রবণতা এমন যে –এখনই বিদেশ পাঠাতে হবে। ২ লাখ টাকার বেশি কোন দেশে যেতে খরচ হওয়ার কথা না। কিন্তু বাস্তবতা একদমই ভিন্ন।

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) মানবপাচার বিষয়ক সেলের বিশেষ পুলিশ সুপার সাইদুর রহমান বলেন, পাচারের শিকার ব্যক্তির তথ্য না পাওয়া যাওয়ায় কিছু মামলার কার্যক্রম বিলম্ব হয়। সেই তথ্য না পেলে মামলা নিষ্পত্তি করা সম্ভব হয় না। বিদেশে যারা নির্যাতিত হচ্ছে এবং হয়ে ফেরত আসছে সংশ্লিষ্ট দেশে আমাদের দূতাবাস কাজ করছে। নির্যাতন কিন্তু ওইদেশের আইনেও অপরাধ। ভিক্টিমদের সেখানে স্থানীয় যে আইনগত সহায়তা বিষয় আছে সেগুলো কিন্তু আমরা দেখছি। মাঝে মাঝে কিছু দেশ থেকে নারীকর্মীর অনেকেই শিশুসহ দেশে ফেরত আসেন, তিনি কীভাবে সেই শিশুটিকে নিয়ে ফেরত আসলো। তাদের তো সেখানে স্থানীয় একটা আইন আছে। সেই আইনে যদি বিচার হতো তাহলে কিন্তু এই ধরনের অপরাধগুলো কমে যেতো। আবার ফেরত আসার সময় সংশ্লিষ্ট দেশের পুলিশের পাছে লিখিত দিয়ে আসে যে তাকে কোনও প্রকার নির্যাতন করা হয়নি, সে স্বেচ্ছায় দেশে ফেরত যাচ্ছে। আমরা যখন দূতাবাসের কাছে চাই তখন সেদেশের সরকার এই ধরনের ফিডব্যাক দেয়। ফলে দেশে এসে করা এই মামলাগুলোর তদন্ত করতেও আমাদের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তাছাড়া মামলার ক্ষেত্রে একটা বড় অংশ কিন্তু আপস করে ফেলে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্র্যাকের সিনিয়র পরিচালক এম মোর্শেদ। এছাড়া মানবপাচার পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিবেদন তুলে ধরেন ব্র্যাকের মাইগ্রেশন বিভাগের প্রধান শরিফুল হাসান।

 

/এসও/এফএএন/ 
সম্পর্কিত
লিবিয়ায় জিম্মি চট্টগ্রামের ৪ যুবক, পাঠানো হচ্ছে নির্যাতনের ভিডিও
কানাডায় দ্বিতীয়বার ‘ডিরেক্টরস ক্লাব অ্যাওয়ার্ড’ পেলেন মাহবুব ওসমানী
বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকীতে ম্যানিলায় শিশু-কিশোরদের মিলনমেলা 
সর্বশেষ খবর
হাতিরঝিলে ভাসমান অবস্থায় যুবকের মরদেহ
হাতিরঝিলে ভাসমান অবস্থায় যুবকের মরদেহ
ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলায় রুশ সাংবাদিক নিহত
ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলায় রুশ সাংবাদিক নিহত
নীলফামারীতে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারিসহ ৩ জন গ্রেফতার
নীলফামারীতে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারিসহ ৩ জন গ্রেফতার
পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের অগ্রগতি জাতিসংঘে তুলে ধরলো বাংলাদেশ
পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের অগ্রগতি জাতিসংঘে তুলে ধরলো বাংলাদেশ
সর্বাধিক পঠিত
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
ইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
ইস্পাহানে হামলাইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া
দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি
দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি