জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ ছিলেন একাধারে ভালো মানুষ, ভালো সাংবাদিক ও ভালো নেতা। তিনি পেশাগত জীবনে তিনি সবকিছুকে ছাপিয়ে সাংবাদিকতাকেই প্রাধান্য দিতেন, সাংবাদিকদের জন্য তিনি ছিলেন নিবেদিত প্রাণ।
মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ স্মরণে সম্পাদক পরিষদ ও নোয়াব যৌথ আয়োজিত স্মরণ সভায় অংশ নিয়ে বিশিষ্ট সাংবাদিকরা এসব কথা বলেন। সম্পাদক পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদের সঞ্চালনায় স্মরণ সভায় সভাপতিত্ব করেন নোয়াব সভাপতি এ কে আজাদ। স্মরণসভার শুরুতে মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
স্মরণসভায় রিয়াজ উদ্দিন আহমেদের ছেলে মাসরুর রিয়াজ বলেন, ‘বাবা সব সময় আমাদের আদর্শিক একটা চেতনায় বড় করেছেন। সৎ পথে চলা, মানুষকে ভালোবাসা শিক্ষা দিতেন। তিনি পরিবার এবং সংবাদমাধ্যম কর্মীদের সমানভাবে দেখতেন। বরং সংবাদকর্মীদের প্রতি বেশি উদার ছিলেন।’
স্মরণসভায় ডেইলি অবজারভার পত্রিকার সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, আমি আর রিয়াজ ভাই (রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ) একই সঙ্গে সাংবাদিকতা শুরু করেছিলাম। আমরা পাকিস্তান অবজারভারে কাজ করেছি। দুর্ভাগ্যক্রমে তিনি অন্য একটি ধারায় চলে গেছেন। এক সময় ঐক্যবদ্ধ পতাকার তলে আমরা কাজ করতাম। যাদের ত্যাগের বিনিময়ে সাংবাদিক ইউনিয়নের ঐক্যবদ্ধ পতাকা পেয়েছিলাম, কিন্তু আমরা সে পতাকা ধরে রাখতে পারিনি। ১৯৯২ সালে আমরা বিভক্ত হয়ে গেলাম। একটি হলো মুক্তিযুদ্ধ চেতনার, আরেকটি জাতীয়তাবাদী। এরপরও আমরা কিছু বিষয়ে এক হয়েছি। তিনি সাংবাদিক ছিলেন এবং সাংবাদিক হিসেবেই মৃত্যুবরণ করেছেন।
রিয়াজ উদ্দিন আহমেদকে একজন পরিপূর্ণ মানুষ উল্লেখ করে নোয়াব সভাপতি এ কে আজাদ বলেন, তার জীবনের শেষ সভাটি ছিল নোয়াবের। নিজে সততা ও ইন্ট্রিগ্রিটি বজায় রেখেছেন বলেই সন্তানদেরও ইন্টিগ্রিটি, অনেস্টি ও হার্ড ওয়ার্ক করার পরামর্শ দিয়ে যেতে পেরেছেন। যে কোনও সংকট সমাধানে তিনি সঠিক পরামর্শ দিতেন। তার আদর্শ চিরকাল বেঁচে থাকবে।
স্মৃতিচারণ করে সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন বলেন, ‘তিনি সাংবাদিকতার সবকিছু অর্জন করেছেন। তিনি রিপোর্টার থেকে সম্পাদক হয়েছেন। উচ্চ স্লোগান না দিয়েও কীভাবে সমস্যার সমাধান করা যায়, আমরা তার থেকে শিখেছি। তিনি পেশাগত মূল্যবোধ ধারণ করতেন। সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে পেশার উপরে কখনোই দলীয় রাজনীতিকে গুরুত্ব দেননি।’
অনুষ্ঠানে আরও স্মৃতিচারণ করেন বিএফইউজে একাংশের সভাপতি ওমর ফারুক, সাংবাদিক মনজুরুল হাসান বুলবুল, যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম ও প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন প্রমুখ। প্রেসক্লাব থেকে আগামী ৩ জানুয়ারি সকালে রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ স্মরণে ‘স্মরণসভা’ আয়োজিত হবে বলেও জানানো হয়।