২০১৬ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর উপজেলার গোবরাতলা ইউনিয়নের মহিপুরে স্কুলছাত্রী কণিকা রানী ঘোষকে কুপিয়ে হত্যার মামলায় আব্দুল মালেককে বিচারিক আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট।
আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স গ্রহণ এবং জেল আপিল খারিজ করে বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি এ এন এম বসির উল্লাহ ও বিচারপতি মুহম্মদ মাহবুব-উল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালতে আসামিপক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী নারগিস আক্তার। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি।
এর আগে ২০১৬ সালের ২৭ মে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সদর উপজেলার দিয়াড় ধাইনগর গ্রামের লক্ষণ ঘোষের মেয়ে স্থানীয় মহিপুর এসএএম দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী কণিকা তার তিন বান্ধবী তারিন আফরোজ, তানজিমা আক্তার ও মরিয়ম আক্তারকে নিয়ে প্রাইভেট পড়ে বাড়ি ফিরছিল। পথে মহিপুর ডিগ্রি কলেজের পেছনের সড়কে আব্দুল মালেক ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। কিছু বুঝে উঠার আগেই অস্ত্র দিয়ে ওই চার ছাত্রীকে কোপাতে থাকে। মালেকের হাসুয়ার আঘাতে কণিকাসহ তার তিন বান্ধবী গুরুতর আহত হয়। স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা কণিকাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় ওই দিনই নিহত কণিকার মা অঞ্জনা রানী ঘোষ বাদী হয়ে আব্দুল মালেকের বিরুদ্ধে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পরে একই বছরের ৭ অক্টোবর আব্দুল মালেকের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। ২১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যপ্রমাণ ও যুক্তিতর্ক শেষে পরের বছরের ১ ফেব্রুয়ারি আসামির উপস্থিতিতে ওই রায় ঘোষণা হয়। আব্দুল মালেক গোবরাতলা ইউনিয়নের বালুগাঁ দিয়াড় গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে।
বিচারিক আদালত কণিকাকে হত্যার দায়ে আব্দুল মালেকের ফাঁসির আদেশ দেন। অপর তিন শিক্ষার্থীকে হামলার জন্য ৩২৪ ধারায় ১০ বছর, ৩২৬ ধারায় ১৪ বছর এবং ৩০৭ ধারায় ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ৫ মাসের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন। ২০১৭ সালের ১ ফেব্রুয়ারি চাঁপাইনবাবগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের বিচারক অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. জিয়াউর রহমান ওই রায় দেন।
পরে নিয়ম অনুসারে আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স ও তার জেল আপিল শুনানির জন্য হাইকোর্টে আসে।