X
শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫
২০ আষাঢ় ১৪৩২

জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে পদ-বাণিজ্যের অভিযোগ: ‘যথাযথ আদালত’ বলতে যা বুঝিয়েছেন হাইকোর্ট

বাহাউদ্দিন ইমরান
০১ নভেম্বর ২০২২, ২১:২১আপডেট : ০১ নভেম্বর ২০২২, ২১:৫১

দলীয় মনোনয়ন বাণিজ্য করে অবৈধ অর্থ আদায়ের অভিযোগ রয়েছে জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে। দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) এই অভিযোগ করেন দলটির দফতর সম্পাদক। একইসঙ্গে দুদকের প্রতি তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে মামলা গড়ায় হাইকোর্ট পর্যন্ত। তবে এ বিষয়ে কোনও ধরনের সাড়া দেননি আদালত। জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিষয়ে ‘যথাযথ আদালতে’ আবেদন জানানোর পরামর্শ দেন হাইকোর্ট। ফলে এখানে ‘যথাযথ আদালত’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে—সে বিষয়ে মতামত দিয়েছেন মামলার আইনজীবীরা।

হাইকোর্টে দায়ের করা রিট মামলায় অভিযোগ করা হয়েছিল—‘২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরে জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনে জাতীয় পার্টির ৪ জন মহিলা সংসদ সদস্যের মনোনয়ন কার্যক্রমে ১৮ কোটি ১০ লাখ টাকা উৎকোচ নেন জি এম কাদের। উৎকোচের বিনিময়ে ওই চার নারীকে জাতীয় সংসদ সদস্য হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়। মসিউর রহমান রাঙ্গার মাধ্যমে মনোনীত মহিলা সংসদ সদস্যদের জাতীয় সংসদের আসনে মনোনীত করার অঙ্গীকার ও অর্থ প্রদানের শর্তে চুক্তিপত্র সম্পাদন হয়। এ বিষয়ে একজন মহিলা সংসদ সদস্যের সঙ্গে চুক্তি হয়, যা এরই মধ্যে মিডিয়ায় ফাঁস হয়েছে। তিন জন সদস্যের কাছ থেকে কমপক্ষে প্রতিজনে ৫ কোটি করে মোট ১৫ কোটি এবং প্রয়াত অধ্যাপক মাসুদা এম রশীদ চৌধুরীর কাছ থেকে ৩ কোটি ১০ লাখ টাকা দুর্নীতির মাধ্যমে জি এম কাদের গ্রহণ করেছেন, যা তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে।’

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘দলীয় পদ-পদবি ব্যবহার ও প্রভাব খাটিয়ে দলের কো-চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পর মসিউর রহমান রাঙ্গাকে ব্যবহার করে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে সৃষ্টি করা একটি নামসর্বস্ব প্যাডে এরশাদ সাহেবের দস্তখত তৈরি করেন।’

এদিকে পদ-বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠা সত্ত্বেও তা তদন্ত শুরু না করায় দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছিলেন মো. ইদ্রিস আলী। কিন্তু সে আইনি নোটিশ পাওয়ার পর কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে সংসদ সদস্য পদের মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগের আবেদন নিষ্পত্তি করার নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়।

রিটটির শুনানি নিয়ে জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে দায়ের করা রিটটি নিষ্পত্তি করে দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে কোনও সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে ‘যথাযথ আদালত’-এ যাওয়ার নির্দেশ দেন আদালত। একইসঙ্গে তদন্তে গাফিলতি হলে দুদকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চের রায়ে বলা হয়েছে।

‘যথাযথ আদালত’ বলতে হাইকোর্ট কী বুঝিয়েছেন, সে বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘যথাযথ আদালত বলতে হাইকোর্ট বুঝিয়েছেন যে উপযুক্ত আদালতে আবেদন করতে। অর্থাৎ, যদি পদ বাণিজ্যের অভিযোগ থাকে এবং তা দুদকের তদন্তের জন্য শিডিউলভুক্ত হয়, তাহলে ফৌজদারি আদালতে কিংবা লেনদেন সংক্রান্ত বিষয় থাকলে, তা নিয়ে দেওয়ানি আদালতে মামলা হতে পারে। কিন্তু ঢালাওভাবে পদবাণিজ্য করেছে বললেই হবে না, নির্দিষ্ট করে অভিযোগ ও প্রতিকার চাইতে হবে। সেক্ষেত্রে রিট দায়ের করা যথাযথ প্রক্রিয়া হতে পারে না।’

রিটকারীদের অন্যতম আইনজীবী সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো. মোতাহার হোসেন সাজু বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘যথাযথ আদালত’ বলতে জেলার বিশেষ আদালতগুলোকে বোঝানো হয়ে থাকতে পারে। অর্থাৎ, বিষয়টি (অভিযোগ) যে আদালতের এখতিয়ারধীন সে আদালতেই যেতে হবে। তবে তদন্তের বিষয়ে বর্তমানে দুদক হস্তক্ষেপ করছে।’

/এপিএইচ/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সামনে মহাবিপদের আশঙ্কা, দেশ সংঘাতের দিকে যাচ্ছে: জি এম কাদের
জাতীয় পার্টির ইফতারে হট্টগোল-বিশৃঙ্খলা
হত্যাকাণ্ডের বিচারের নামে প্রহসন চলছে: জিএম কাদের
সর্বশেষ খবর
দলের কেউ অপরাধ করলে কঠোর ব্যবস্থা: রিজভী
দলের কেউ অপরাধ করলে কঠোর ব্যবস্থা: রিজভী
আইএস নেটওয়ার্ক ভেঙে দিলো মালয়েশিয়া, জড়িত বাংলাদেশি শ্রমিকরা
আইএস নেটওয়ার্ক ভেঙে দিলো মালয়েশিয়া, জড়িত বাংলাদেশি শ্রমিকরা
ফ্যাসিস্ট হটানোর পরে দেশে আবার সন্ত্রাস-চাঁদাবাজি শুরু হয়েছে: নাহিদ ইসলাম
ফ্যাসিস্ট হটানোর পরে দেশে আবার সন্ত্রাস-চাঁদাবাজি শুরু হয়েছে: নাহিদ ইসলাম
জুলাইকে উৎসর্গ করে ১১ জুলাই থেকে ‘অন্যদিন…’
জুলাইকে উৎসর্গ করে ১১ জুলাই থেকে ‘অন্যদিন…’
সর্বাধিক পঠিত
এনবিআর নিয়ে ‘কঠোর’ সরকার, আতঙ্কে শীর্ষ কর্মকর্তারা
এনবিআর নিয়ে ‘কঠোর’ সরকার, আতঙ্কে শীর্ষ কর্মকর্তারা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সীসা কারখানায় অভিযান, তিন চীনা নাগরিকসহ ৬ জনকে কারাদণ্ড
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সীসা কারখানায় অভিযান, তিন চীনা নাগরিকসহ ৬ জনকে কারাদণ্ড
সচিবালয়ে দখলের দ্বন্দ্ব : আন্দোলনের নেতৃত্বে বিভক্তি
সচিবালয়ে দখলের দ্বন্দ্ব : আন্দোলনের নেতৃত্বে বিভক্তি
খেলাপিতে ধসে পড়ছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান: বিপদে আমানতকারীরা
খেলাপিতে ধসে পড়ছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান: বিপদে আমানতকারীরা
প্রশ্নপত্রে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ির গল্প, পরীক্ষা বাতিল
প্রশ্নপত্রে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ির গল্প, পরীক্ষা বাতিল