দেশের ১২টি সিটি করপোরেশনের জনবলকাঠামোতে মহামারি বিশেষজ্ঞের পদসৃষ্টির একটি প্রস্তাব পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম।
বুধবার (৩০ নভেম্বর) হোটেল সোনারগাঁওয়ে ‘মেয়র সংলাপ: নগর জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার চ্যালেঞ্জসমূহ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন তিনি।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, “প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবার জন্য সিটি করপোরেশনকে আইন দ্বারা ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। আমি যতটুকু জানি সিটি করপোরেশনগুলোতে এপিডেমিওলজিস্ট (মহামারি বিশেষজ্ঞ) অন্তর্ভুক্তকরণের জন্য অরগানোগ্রামে (জনবলকাঠামো) একটি প্রস্তাব আমাদের দেওয়া হয়েছে, এতে সম্মিলিত অনুমোদন লাগবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নগর ও গ্রামীণ স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর খেয়াল রাখার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দায়িত্বপ্রাপ্ত। মেগা স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠান যেমন—ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়—এসব জায়গায় যদি স্থানীয় সরকারকে ক্ষমতায়ন করা হয় কেন্দ্রীয় সরকারের কিছুটা ভার বহন করা যাবে। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে তখন অনেক দায়িত্ব পালন করা সম্ভব হবে।’
মহামারি-অতিমারিতে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, বিশেষ করে মহামারি বিশেষজ্ঞের (এপিডেমিওলজিস্ট) গুরুত্ব পুরো বিশ্ব টের পেয়েছে যার ফলে এক্ষেত্রে আরও বেশি কাজ করার সুযোগ আছে বলে মত দিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস।
পিটার ডি হাস বলেন, “কোভিড-১৯ মহামারি আমাদের দেখিয়েছে উন্নয়নশীল এবং উন্নত দেশগুলোতে জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার বেহাল দশা। একটি পরামর্শ বারবারই এসেছে—জনস্বাস্থ্য ও মহামারি বিশেষজ্ঞদের স্থায়ীভাবে সিটি করপোরেশন জনকাঠামোতে অন্তর্ভুক্ত করা। বিশেষজ্ঞরা ব্যাখ্যাও দিয়েছেন যে কীভাবে জনস্বাস্থ্য ও মহামারি বিশেষজ্ঞদের ওপর বিনিয়োগ সংক্রামক এবং অসংক্রামক রোগের ক্ষেত্রে খরচ এবং প্রভাবকে ব্যাপকভাবে হ্রাস করতে পারে। বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্য খাতে আরও ব্যাপক পরিসরে কাজ করার আছে।”
এই সভায় প্রথমবারের মতো ১০ সিটি করপোরেশনের মেয়ররা দেশের নগর জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার কাঠামোগত বিভিন্ন দিক, এর চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায় নিয়ে আলোচনা করেন। তারা তাদের নিজ নিজ এলাকায় করোনাকালীন এবং করোনা পরবর্তী সময়ে জনস্বাস্থ্য বিষয়ক চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরে অন্তত একজন এপিডেমিওলজিস্টের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করেন।
মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন–১২টি সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, স্থানীয় সরকার বিভাগের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা, ইউএসসিডিসি’র কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. সুসান (নিলি) কায়ডোস-ড্যানিয়েলস, সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর অনো ভ্যান ম্যানেন, ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. শামীম জাহান, সেফটিনেট বাংলাদেশের কান্ট্রি হেড লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) ডা. সৈয়দ হাসান আবদুল্লাহ, দেশের শীর্ষস্থানীয় জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞগণ, বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ এবং সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশ ও সেফটিনেট বাংলাদেশের অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাগণ।