X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

সাউথ এশিয়ার জিওপলিটিক্সে বাংলাদেশ অপ্রতিদ্বন্দ্বী: ঢাবি উপাচার্য

ঢাবি প্রতিনিধি
১৬ জানুয়ারি ২০২৩, ১৬:১৯আপডেট : ১৬ জানুয়ারি ২০২৩, ১৬:১৯

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেছেন, সাউথ এশিয়া জিওপলিটিক্যাল এন্টিটির একটি স্বতন্ত্র গুরুত্ব আছে। ইতিহাসে যতগুলো জিওপলিটিক্যাল এন্টিটি আছে, তার মধ্যে অনেকগুলোরই স্ট্র্যাটেজিক কারণে গুরুত্ব রয়েছে। তেমনিভাবে সাউথ এশিয়া এমন একটি এন্টিটি— যেটির অনেক মাত্রায় গুরুত্ব আছে। অর্থনৈতিক,সংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় নানা কারণে এটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক এলাকা। এরমধ্যে অনেকগুলো ডায়নামিকস আছে এবং এ সব ডায়নামিকসের মধ্যে বাংলাদেশ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। সাউথ এশিয়ার অনেকগুলো রাষ্ট্র, কিন্তু সেগুলোর মধ্যে বিভিন্ন কারণে বিভিন্ন মানদণ্ডে বাংলাদেশ অসাধারণ ও অপ্রতিদ্বন্দ্বী।

সোমবার (১৬ জানুয়ারি) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোজাফফর আহমদ অডিটোরিয়ামে ‘সেন্টার ফর সাউথ এশিয়ান স্টাডিজ’ আয়োজিত ‘মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির গুরুত্ব’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় তিনি আলোচনার বিষয়বস্তুর গুরুত্ব নিয়ে বলেন, ‘আজকে যখন সংবিধান সংশোধনের কথা বলা হয়, বাংলাদেশকে পুনর্নির্মাণের কথা বলা হয়,অথবা বিকৃত ইতিহাস উপস্থাপনের প্রয়াস করা হয়, মুক্তিযুদ্ধের মূলনীতিগুলোকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করা হয়। তখন মনে হয়, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এই অভিধায় আলোচনার গুরুত্ব রয়েছে। কেননা, টার্গেট হলো নতুন প্রজন্ম। যারা ১৯৭১ থেকে তুলনামূলক দূরে। এই টার্গেটগ্রুপ হলো বাংলাদেশের ডেমোগ্রাফিক পপুলেশন কম্পোনেন্টের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কম্পোনেন্ট। ফলে এদেরকে টার্গেট করে নেওয়া হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে স্মার্ট বাংলাদেশের কথা বলেছেন, উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের কথা বলছেন ২০৪১ সালের মধ্যে, সেটি হলো উন্নত বাংলাদেশ। উন্নত বাংলাদেশ ও স্মার্ট বাংলাদেশ এই দুটি বৈশিষ্ট্য হবে জ্ঞাননির্ভর। এটি নলেজ বেস্ট ইকোনমি কিন্তু প্রযুক্তিনির্ভর। প্রযুক্তি এবং জ্ঞাননির্ভর একটি সমাজ, যে সমাজ অন্তর্ভুক্তিমূলক, যে সমাজ সমতাভিত্তিক— এই শব্দগুলো সেক্ষেত্রে প্রযোজ্য। সেটির আলোকে যখন সমাজ গঠিত হবে, সেই সমাজে সাম্প্রদায়িকতা থাকে না, সে সমাজে অশুভ তৎপরতা থাকে না। হ্যাঁ থাকবে, যেমন বিশ্বের উন্নত দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিল এসব দেশেও রয়েছে। আইনও আছে। কিন্তু কথা হলো আইন অবিচার শক্তিশালী থাকবে, অশুভ তৎপরতাকে দমন করার জন্য,সেগুলোকে তখন দমিয়ে রাখা যাবে।’

সেন্টার ফর সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের পরিচালক অধ্যাপক ড. অরুন কুমার গোস্বামীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন— ঢাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা, একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত, শান্তি ও সংঘর্ষ বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম। এসময় মূল উপস্থাপন করেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মহসীন হাবিব।

জিনাত হুদা বলেন, ‘আজকে কেন এমন একটা বিষয় নিয়ে আমাদের কথা বলতে হচ্ছে, সেটি আমাকে ভাবাচ্ছে। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের মাধ্যমে যে দেশটির জন্ম, সেই বাংলাদেশের মূলমন্ত্র হচ্ছে— গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও বাঙালি জাতীয়তাবাদ। ধর্মনিরপেক্ষতা বা অসাম্প্রদায়িক বাঙালি চেতনা বা বাঙালি জাতীয়তাবাদ, কেমন করে আসলে বঙ্গবন্ধু এ বিষয়গুলোকে পলিটিক্যাল ডিসকোর্সের ভেতর নিয়ে এলেন, আমি অবশ্যই এই প্রজন্মের একজন গবেষক হিসেবে বিমোহিত হই। কেউ কেউ বলতে পারেন, কিছু কিছু প্রপঞ্চ পাশ্চাত্য প্রবন্ধ বঙ্গবন্ধু নিয়েছিলেন কিনা? অবশ্যই তিনি নিয়েছিলেন। তবে যখন আমরা বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীসহ অন্যান্য বই,‘আমার দেখা নয়া চীন’ বইগুলো পড়ি, তখন বিষয়টা আমাদের কাছে পরিষ্কার হয়ে আসে।

তিনি আরও বলেন, ‘ধর্ম সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান, ধর্মের সাথের আমাদের আত্মিক একটি যোগাযোগ রয়েছে। কিন্তু ধর্মকে যখন রাজনৈতিকহীন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করেন,সাম্প্রদায়িকতা ও রাজনৈতিকতা যখন একাকার হয়ে যায়। তখন সেটি বিষবাষ্পের মতো ছড়িয়ে পড়ে এবং সেটি সমাজকে ক্ষতবিক্ষত করে। আমরা দেখেছি, ধর্মকে নানাভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে অপব্যবহার করা হয়েছে। ধর্মের যে মূল সুর বা বাণী সেটি হলো— সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি,ভালোবাসা,মানবকল্যাণ এবং এগিয়ে যাওয়া। এই ধর্মের বাণী কী? কিন্তু বঙ্গবন্ধু তাঁর অসাম্প্রদায়িক প্যারাডাইমস সেটির মধ্যে নিয়ে এলেন।’

অজয় দাশগুপ্ত বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রতির সবচেয়ে বড় নজির যদি আমরা বলি, তাহলে সেটি হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এর সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও একসাথে চলার অন্যন্য উদাহরণ। জগন্নাথ হল দেখবেন— ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ যারা শহীদ হয়েছে, তাদের তালিকা রয়েছে। সেখানে জগন্নাথ হলের ছাত্র আছে, শিক্ষক আছে, হিন্দু আছে, মুসলিম আছে, বৌদ্ধ আছে, অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা আছে, সবাই কিন্তু হত্যাকাণ্ডের শিকার। পৃথিবীর কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১৯৫ জন শিক্ষার্থী আত্মাহুতি দিয়েছে স্বাধীনতার জন্য এবং সব ধর্মের খুঁজে পাবেন না।’

/এপিএইচ/
সম্পর্কিত
বুয়েটে নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির ঘোষণা ছাত্রলীগের, ৪ দফা কর্মসূচি
জাপানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে জাপানিজ স্টাডিজ
ঢাবির আসনসংখ্যা কমানো হতে পারে: উপাচার্য
সর্বশেষ খবর
শিশুকে পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগে ৪ কিশোর সংশোধনাগারে
শিশুকে পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগে ৪ কিশোর সংশোধনাগারে
পাঞ্জাবের আশুতোষের ঝড়ও যথেষ্ট হলো না, মুম্বাইয়ের তৃতীয় জয়
পাঞ্জাবের আশুতোষের ঝড়ও যথেষ্ট হলো না, মুম্বাইয়ের তৃতীয় জয়
কানের সমান্তরাল বিভাগে ঢাকার দুই নির্মাতার স্বল্পদৈর্ঘ্য
কানের সমান্তরাল বিভাগে ঢাকার দুই নির্মাতার স্বল্পদৈর্ঘ্য
এআই প্রযুক্তিতে প্রথম বাংলা গানের অ্যালবাম
এআই প্রযুক্তিতে প্রথম বাংলা গানের অ্যালবাম
সর্বাধিক পঠিত
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ নিয়ে জাতিসংঘে ভোট
ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ নিয়ে জাতিসংঘে ভোট
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
পিএসসির সদস্য ড. প্রদীপ কুমারকে শপথ করালেন প্রধান বিচারপতি
পিএসসির সদস্য ড. প্রদীপ কুমারকে শপথ করালেন প্রধান বিচারপতি
পরীমনির বিরুদ্ধে ‘অভিযোগ সত্য’, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন
পরীমনির বিরুদ্ধে ‘অভিযোগ সত্য’, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন