X
সোমবার, ২৭ মার্চ ২০২৩
১৩ চৈত্র ১৪২৯

ঢাকায় ভুল চিকিৎসায় গালফ এয়ারের পাইলটের মৃত্যু, অভিযোগ বোনের

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
৩০ জানুয়ারি ২০২৩, ১৬:৪৩আপডেট : ৩০ জানুয়ারি ২০২৩, ১৬:৪৩

গালফ এয়ারের পাইলট ক্যাপ্টেন মোহান্নাদ ইউসুফ আলহেন্দি ফ্লাইট নিয়ে বাংলাদেশে আসার পর অসুস্থ হয়ে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি হন। কিন্তু সেখানে ভুল চিকিৎসা ও অবহেলায় মারা গেছেন বলে অভিযোগ তার বোনের। সোমবার (৩০ জানুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করেন পাইলটের বোন তালা আলহেন্দি

সংবাদ সম্মেলনে তালা আলহেন্দি জানান, তিনি বাংলাদেশে এসে ইউনাইটেড হাসপাতালের কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চাইলে তাকে অসহযোগিতা করা হয় এবং দেরি করে কাগজপত্র দিলেও সেখানে জালিয়াতি করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে তালা আলহেন্দি ইউনাইটেড হাসপাতালের বিরুদ্ধে যথাযথ ফৌজদারি ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে ন্যায়বিচার চান এবং ইউনাইটেড হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিল করারও দাবি জানান।

গালফ এয়ারও সময় মতো মোহান্নাদ ইউসুফ আলহেন্দির  চিকিৎসা নিশ্চিত করতে পারেনি বলেও জানান তার বোন।

তালা আলহেন্দি বলেন, ‘আমরা ভাই-বোন দুজনই যুক্তরাষ্ট্র ও জর্ডানের দ্বৈত নাগরিক। ভাই ইউসুফ আলহেন্দি গলফ এয়ারের পাইলট ছিলেন, আর বোন তালা আলহেন্দি  ব্রিটিশ সরকারের হয়ে কাজ করেন। ভাইয়ের অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর পর তিনি বাংলাদেশে ছুটে আসেন। খোঁজ-খবর নিয়ে ইউনাইটেড হাসপাতাল ও গালফ এয়ার কর্তৃপক্ষের অবহেলার নানান প্রমাণ পেয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘ঘটনার দিন তার ভাই ঢাকার মেরিডিয়ান হোটেলে ছিলেন। খুব সকালে তার গালফ এয়ারের ফ্লাইট পরিচালনার কথা ছিল। রাত পৌনে তিনটায় ঘুম থেকে উঠে তিনি ফ্লাইটের জন্য প্রস্তুত হন। এরপর হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে ভোর ৪টা ১০ মিনিটের দিকে তিনি ইমিগ্রেশনের প্রক্রিয়া শুরু করেন। তখন সেখানে তিনি পড়ে যান এবং নিঃসাড় ছিলেন। তার কাছ থেকে কোনও সাড়া মেলেনি। বিমানবন্দরে আমার ভাইয়ের প্রথম কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। তখন তিনি পাঁচ মিনিট কার্ডিওপালমোনারি রিসাসিটেশন (সিপিআর) পেয়েছেন। ক্রমশ তার রক্তচাপের অবনতি হতে থাকে। এরপর তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে পাঠানো হয়।’
তালা আলহেন্দি বলেন, ‘চিকিৎসা প্রক্রিয়ার সময় তাকে ওষুধ প্রয়োগ করে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছিল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেছেন, আমার ভাইয়ের চিকিৎসা করেছেন ডা. কায়সার নাসির। কিন্তু আমার ভাইয়ের পরিবারের কাছে চিকিৎসার যে কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়েছে, তাতে তার নাম পাওয়া যায়নি। রিপোর্টে বলা হয়েছে, আমার ভাইয়ের অ্যাজমা ছিল। এ বিষয়ে জানতে চাইলে, তারা বলেছে যে, ভুল করে এটা বাদ পড়ে গেছে। ফোনে কার্ডিওলোজিস্টের পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। তিনি সশরীরে রোগীর কাছে উপস্থিত ছিলেন না।’
তালা আরও  বলেন, ‘সকাল পৌনে ৬টায় আমার ভাইকে সিসিএমে স্থানান্তর করা হয়। এটির নাম কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিট। ঝুঁকিপূর্ণ রোগীর চিকিৎসা সেবা দিতে সেখানে অন্তত একজন কার্ডিওলোজিস্ট ও তাৎক্ষণিক বিশেষ সেবা দেওয়ার দরকার ছিল। কিন্তু অদক্ষ চিকিৎসকরা অবহেলা করেছেন। কার্ডিওলোজি কেয়ারের জন্য একটি ইউনিট করা হলেও সেখানে কোনও কার্ডিওলোজিস্ট ছিলেন না। সকাল পৌনে ৭টায় দ্বিতীয় কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয় আমার ভাইয়ের। ২০ মিনিট পর তৃতীয় কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট করেন তিনি। দুই ঘণ্টার ব্যবধানে আমার ভাইয়ের তিন বার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। কোনও কার্ডিওলোজিস্টের সঙ্গে যোগাযোগ করতে ঢাকা শহরের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই হাসপাতালের কার্ডিয়াক বিশেষজ্ঞ ইউনিট আবার ব্যর্থ হয়েছে। যা সিসিএম কর্মীদের নিছক ও চরম অবহেলা ছাড়া কিছু না। তারা একমাত্র যে পদক্ষেপটি নিয়েছে তা হলো— আরিএসসি-এর সঙ্গে ১৫ মিনিট সিপিআর করেছে। আমার ভাই তৃতীয়বার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট করলে সোয়া দুই ঘণ্টা পর্যন্ত তাকে কোনও চিকিৎসা সেবা ছাড়াই ফেলে রাখা হয়েছে। অর্থাৎ তিনি সঠিক চিকিৎসাবঞ্চিত ছিলেন।’
তালা আলহেন্দি বলেন, ‘কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্ট ট্রিটমেন্টের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর চিকিৎসক আমার ভাইকে হেপারিন সোডিয়াম ৫০০০ আইইউ  ইনজেকশন দিয়েছেন। রক্তজমাট বাধা বন্ধ করতে এটি দেওয়া হয়। এতে আরও পরিষ্কার হয়ে উঠেছে যে, রোগীর চিকিৎসায় সেখানে কোনও কার্ডিওলোজিস্ট ছিলেন না। কাজেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বাদে সাধারণ কর্মীদের পরামর্শ ছিল চরম অবহেলা।
তালা  বলেন, ‘বেলা সোয়া ১১টায়, চিকিৎসা চলার মধ্যেই আমার ভাইয়ের চতুর্থ ও শেষবারের কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছে। তাকে ৪৫ মিনিট সিপিআর দেওয়া হয়। টিপিএম বসানোর পরেই তিনি মারা যান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, ডা. কায়সার নাসির এসব প্রক্রিয়া করেছেন। কিন্তু তিনি কোনও কার্ডিওলোজিস্ট কিনা, তাও পরিষ্কার না। কারণ, চিকিৎসার কাগজপত্রে তার নাম উল্লেখ নেই। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করে, এটা ভুল হয়েছে। একজন জ্যেষ্ঠ কনসালটেন্ট (ডা. কায়সারউল্লাহ ও অন্য কনসালটেন্টরা) এনজিওগ্রাম করেছেন বলে তারা জানান। কিন্তু রিপোর্টে তাদের নাম নেই। আর কেন কোনও সারসংক্ষেপ রিপোর্ট নেই, জানতে চাইলে তারা বলেন, এগুলো অভ্যন্তরীণ কাগজপত্র। একজন কার্ডিওলোজিস্ট আমার ভাইয়ের চিকিৎসায় পরামর্শ দিলেও তিনি হাসপাতালে সশরীরে ছিলেন না।’

পাইলট ইউসুফের বোন তালা বলেন, ‘আমি পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে পেয়েছি যে, সিসিটিভি ফুটেজ ও হাসপাতালের কাগজপত্রে কারসাজি করা হয়েছে। এছাড়া আমি যখন অনুসন্ধান করছিলাম, তখন হাসপাতালের কর্মীরাও আমাকে ভয় দেখিয়েছেন। ২০২৩ সালের ২৬ জানুয়ারি ইউনাইটেড হাসপাতালের কাছে আমি চিকিৎসার কাগজপত্র ও সিসিটিভির ফুটেজ দেখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু প্রমাণাদি কারসাজি করতে তারা এসব দিতে তিন দিন সময় নিয়েছিল।

গালফ এয়ারের পাইলট ক্যাপ্টেন মোহান্নাদ ইউসুফ আলহেন্দি তালা আলহেন্দি বলেন, তাদের কাছে যখন জানতে চাচ্ছিলাম, তখন তারা আমাকে নিয়ে ঠাট্টা করেন ও রূঢ় ব্যবহার করেন। এরপর আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি ও দূতাবাসকেও এ বিষয়ে জানানো হবে বললে তারা আমাকে বিস্তারিত কাগজপত্র দিয়েছেন। কিন্তু এ জন্য তারা তিন দিন সময় নিয়েছেন। এ সময়ে সব কাগজপত্র কারসাজি করা হয়েছে। তারা কোনও কোনও তথ্য গোপন করেন, আবার কোনোটি যুক্ত করেন। এসব কাগজপত্রকে তারা হাসপাতালের সম্পত্তি বলে দাবি করলেও তা অন্য চিকিৎসকের কাছে রয়েছে জানিয়ে আমাকে দিতে বিলম্ব করে। তারা বলেছিল, ওই চিকিৎসকের ফুরসত মিললেই আমাকে কাগজপত্র জমা দেওয়া হবে। এভাবে তারা আমাকে তিন দিন অপেক্ষায় রেখেছেন। এমনকি দীর্ঘ বিলম্বের পরেও রোগীর হৃদকম্পন পরীক্ষার ২০টি পাতা দিয়েছে তারা আমাকে। কিন্তু তাতে সঠিক কার্ডিওলোজি রিপোর্ট কিংবা চিকিৎসার বিস্তারিত তথ্য ছিল না।’

তিনি বলেন, ‘যখন আমি হাসপাতালে যাই ও অনুসন্ধান চালাই, আমি দেখলাম যে, কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) কোনও কার্ডিওলোজিস্ট নেই। অথচ সেখানেই আমার ভাইকে ভর্তি করার পর দীর্ঘ সময় ধরে রাখা হয়েছিল। এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ পরামর্শ নিতে আমি যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তারা বলেছেন, নিয়মানুসারে ঘণ্টাখানেকের মধ্যে আমার ভাইকে জরুরি চিকিৎসা প্রক্রিয়ার মধ্যে নিয়ে যাওয়া উচিত ছিল। সেখানে ইউনাইটেড হাসপাতালে ছয় ঘণ্টা লেগেছে। অনুসন্ধানে আমি দেখেছি, সিএজি করা হয়েছে বলে প্রমাণ দিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পরে কাগজপত্র জালিয়াতি করেছে। যে কারণে কাগজপত্র দিতে তারা অযাচিত বিলম্ব করেছে ও অজুহাত দেখিয়েছে।’
গালফ এয়ারও তার ভাইয়ের চিকিৎসায় অবহেলা করেছে বলে দাবি করেছেন তালা   বলেন, ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হওয়ার পর আমার ভাই অচেতন হয়ে পড়েন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি সেই অবস্থায়ই ছিলেন। তিনি গালফ এয়ারের একটি ফ্লাইটে ওঠার সময় এটা হয়েছে। তিনি এই ফ্লাইটের একজন পাইলট ছিলেন। নিজের দায়িত্ব পালনের সময় তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। কাজেই গালফ এয়ার কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব ছিল— তিনি যাতে সঠিক চিকিৎসা পান তা নিশ্চিত করা। এছাড়া গালফ এয়ারের কাছে থাকা আমার ভাইয়ের অতীতের চিকিৎসার ইতিহাস ইউনাইটেড হাসপাতালে জমা দেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু তারা তা করেননি। পরিবারের অনুপস্থিতিতে অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করতে কোনও কর্মকর্তাকে হাসপাতালে পাঠায়নি গালফ এয়ার। অথচ ১০ মিনিট পরেই ৫০০ যাত্রী নিয়ে পাইলট হিসেবে আমার ভাইয়ের নেতৃত্বে গালফ এয়ারের একটি ফ্লাইটের উড়াল দেওয়ার কথা ছিল। বিমান চালনার সময় তিনি অসুস্থ হলে ৫০০ যাত্রীর জীবনও হুমকিতে পড়ে যেতে পারতো। কিন্তু আমার ভাইয়ের সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত করতে কোনও পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি গালফ এয়ারকে। তাকে সিটি স্ক্যানসহ বিভিন্ন টেস্ট করানো হয়েছে— যেটা হার্ট অ্যাটাক রোগীর জন্য অপ্রয়োজনীয় এবং তাতে অনেক সময় নষ্ট হয়েছে। তালা মনে করেন, এগুলো হাসপাতালের খরচ বৃদ্ধি করার জন্য করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলন শেষে কয়েকটি দাবি জানান তালা এলহেনডি। তিনি বলেন, ‘আমার ভাইয়ের হাসপাতালে ভর্তি ও চিকিৎসার পূর্ণাঙ্গ নির্ভেজাল রিপোর্ট ও সিসিটিভির ফুটেজ চাই। রোগী/ভুক্তভোগীর বোন হিসেবে আমার ভাইয়ের চিকিৎসার আদ্যোপান্ত জানতে চাই। কার মাধ্যমে এসব হয়েছে, তাও জানার অধিকার আমার আছে। হাসপাতাল বলছে, আমার ভাইয়ের চিকিৎসার কাগজপত্র গোপনীয় নথি। তারা চিকিৎসার কাগজপত্রে কারসাজি করেছে। আমার ভাইয়ের নির্ভেজাল কাগজপত্র হাতে পাওয়া অবৈধ কিংবা অনৈতিক কিছু না। এ রকম অপরাধের পুনরাবৃত্তি রোধে দৃষ্টান্তমূলক জরিমানা কিংবা ক্ষতিপূরণ চাই। তারা মূলত আমার ভাইকে হত্যা করেছেন। তাই ইউনাইটেড হাসপাতালের বিরুদ্ধে যথাযথ ফৌজদারি ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে আমি ন্যায়বিচার চাই এবং সবশেষে ইউনাইটেড হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিল করার দাবি জানাচ্ছি।

/সিএ/এপিএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
রবীন্দ্রনাথের সকল গানের ভাণ্ডারি দিনেন্দ্রনাথ
গানের শিল্পী, গ্রামোফোন, ক্যাসেট ও অন্যান্য: পর্ব ১৬রবীন্দ্রনাথের সকল গানের ভাণ্ডারি দিনেন্দ্রনাথ
কমিউনিটি সেন্টারে নিকাহ রেজিস্ট্রি নিয়ে দুই কাজীর টানাটানি
কমিউনিটি সেন্টারে নিকাহ রেজিস্ট্রি নিয়ে দুই কাজীর টানাটানি
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সংশোধন হচ্ছে মোটরসাইকেল নীতিমালা
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সংশোধন হচ্ছে মোটরসাইকেল নীতিমালা
দেবে গেছে সেতু, মাঝে গর্ত
দেবে গেছে সেতু, মাঝে গর্ত
সর্বাধিক পঠিত
রাজধানীতে আবারও সক্রিয় ‘খড় পার্টি’, টার্গেট নারীরা
রাজধানীতে আবারও সক্রিয় ‘খড় পার্টি’, টার্গেট নারীরা
স্যার না ডেকে ভাই বলায় শিক্ষকের ওপর খেপলেন সরকারি কর্মকর্তা
স্যার না ডেকে ভাই বলায় শিক্ষকের ওপর খেপলেন সরকারি কর্মকর্তা
সোমবার থেকে সরকারি অফিস ও ব্যাংক চলবে নতুন সময়সূচিতে
সোমবার থেকে সরকারি অফিস ও ব্যাংক চলবে নতুন সময়সূচিতে
ইফতার-সেহরি বিক্রিতে ব্যস্ত ওমর সানী ও মাহিয়া মাহি
ইফতার-সেহরি বিক্রিতে ব্যস্ত ওমর সানী ও মাহিয়া মাহি
চলন্ত মোটরসাইকেলে ফণা তুলে বসলো বিষধর সাপ
চলন্ত মোটরসাইকেলে ফণা তুলে বসলো বিষধর সাপ