রাজধানীতে ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর উদ্বোধন হয় মেট্রোরেলের। পর দিন ২৯ ডিসেম্বর থেকে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় নতুন এই গণপরিবহন। চালুর চার মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় মেট্রোরেলের জন্য পুলিশের বিশেষ ইউনিট এমআরটি পুলিশ গঠনের কাজ। তবে আশার কথা হলো, কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য এমআরটি পুলিশের অনুমতি দিয়েছে সচিব কমিটি। এখন অপেক্ষা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অনুমোদনের।
মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ বলছে, এমআরটি পুলিশের জন্য প্রযুক্তিগত জ্ঞান লাগবে। পুলিশের সদস্যরা আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব পালন করেন, সেই দায়িত্বের বাইরে গিয়ে তথ্যপ্রযুক্তিগত দক্ষতার বিষয়গুলো থাকতে হবে। যারা দায়িত্ব পালন করবেন তাদের জানতে হবে— মেট্রোরেলের কোথায় কী আছে, কোন কোন দিকে নিরাপত্তার বিষয়গুলো রয়েছে। এসব বিষয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করা হবে। মেট্রোরেল একটি আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন স্থাপনা। তাই যাদের এমআরটি পুলিশে নিয়োগ দেওয়া হবে তাদের প্রযুক্তিগত দক্ষতার বিষয়ে বিবেচনা করে নিয়োগ দেওয়ার কথাও জানানো হয়েছে পুলিশকে।
এমআরটি পুলিশ গঠনের জন্য অনেকটা সময় চলে গেছে উল্লেখ করে ঢাকা ম্যাস কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা চাই এমআরটি পুলিশ সাধারণ পুলিশের মতো হবে না। যারা এমআরটি পুলিশে কাজ করবেন তাদের টেকনিক্যাল জ্ঞান থাকতে হবে।’
পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (অপারেশনস অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট) ফারুক আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, সচিব কমিটি এরই মধ্যে মেট্রোরেল গঠনের অনুমোদন দিয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর সেটির প্রজ্ঞাপন জারি হবে। এরপর কার্যক্রম শুরু করবে মেট্রোরেল পুলিশ এমআরটি পুলিশ।
তিনি বলেন, ২৩১ সদস্য নিয়ে যাত্রা শুরু করবে এমআরটি পুলিশ। যারা এমআরটি পুলিশে নিয়োগ পাবেন তাদের দক্ষতার বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়েই নিয়োগের বিষয়গুলো সম্পন্ন হবে। স্টেশনগুলোর নিরাপত্তা, যাত্রী নিরাপত্তারসহ বিভিন্ন বিষয় গুরুত্ব দিয়ে এমআরটি পুলিশ তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
চালু থাকা উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশ ছাড়াও রাজধানীতে পাঁচটি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণাধীন। সবমিলিয়ে ১২৮ কিলোমিটার যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকবে মেট্রোরেলে। ডিএমটিসিএলের এই যোগাযোগ নেটওয়ার্কে ৫১টি উড়াল ও ৫৩টি পাতাল স্টেশনসহ মোট ১০৪টি স্টেশন তৈরি হবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতিটি মেট্রো স্টেশনেই থাকছে এটিএম বুথ, ইলেকট্রিক সরঞ্জাম ও দোকান। মেট্রো স্টেশনে সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি ও যোগাযোগ বিভাগের এটুআই কর্মসূচি চালু করেছে ‘ডিজিবক্স’। ডিজিটাল প্রক্রিয়ায় একটি কোডের মাধ্যমে এ বক্স খোলা যায়, যা একটি স্থানে পণ্য সরবরাহের বিশেষ করে কুরিয়ারের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। বিশাল এই স্থাপনা ও যাত্রীদের নিরাপত্তার দায়িত্ব থাকবে বিশেষায়িত পুলিশ ইউনিটের হাতে। এমআরটি পুলিশের জন্য প্রতিটি স্টেশনে পুলিশ ফাঁড়ি রাখারও প্রস্তাব করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: