বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের ঘোষণা অনুযায়ী ঈদুল আজহা উপলক্ষে বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। তবে অন্যান্য বারের তুলনায় এবার বাসের অগ্রিম টিকিট কিনতে কাউন্টারে আসা যাত্রীর সংখ্যা একেবারেই হাতে গোনা। যদিও সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, অনলাইনে আরও আগে থেকেই অগ্রিম টিকিট বিক্রি হওয়ায় কাউন্টারে চাপ কম। তাছাড়া দুয়েকদিন গেলে কাউন্টারেও চাপ বাড়বে বলে মনে করছেন তারা।
মঙ্গলবার (১৩ জুন) সকাল থেকে কল্যাণপুর, গাবতলী, কমলাপুর ও সায়েদাবাদ এলাকায় বিভিন্ন কাউন্টারে এমন চিত্র দেখা গেছে।
রাজধানীর কমলাপুরে হানিফ বাসের কাউন্টারে দেখা গেছে টিকিট কিনতে আসা অধিকাংশই নিয়মিত যাত্রী, মাত্র কয়েকজন যাত্রী অগ্রিম টিকিট নিতে এসেছেন। গ্রিন লাইনের কাউন্টারে অগ্রিম টিকিট কিনতে আসা যাত্রীর সংখ্যা কিছুটা বেশি হলেও খুব একটা চাপ দেখা যায়নি।
টিকিট বিক্রেতারা বলছেন, প্রথম দিন হওয়াতে চাপ একটু কম, তবে ধীরে ধীরে তা বাড়বে। হানিফ কাউন্টারের বিক্রয়কর্মী শাহজালাল জানান, কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সকাল ৬টা থেকে উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গগামী সকল রুটের কাউন্টারে ঈদের আগাম টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। সকাল ৬টা থেকেই তারা টিকিট দেওয়া শুরু করেছেন এবং দুপুর পর্যন্ত ১০০টির মতো অগ্রিম টিকিট বিক্রি করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আজ প্রথম দিন হওয়ায় যাত্রীর চাপ একটু কম। তবে কাল থেকেই চাপ বাড়বে মনে হচ্ছে।’
কলাবাগানে শ্যামলী কাউন্টারে যাত্রীদের লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কিনতে দেখা গেছে। এখানে খুব দীর্ঘ না হলেও সকাল থেকেই যাত্রীদের লাইন ছিল। কাউন্টারের ম্যানেজার শাকিল মাহমুদ জানালেন, এবার অন্যান্য সময়ের মত যাত্রীদের ভিড় নাই। খুব সহজে ১০ মিনিটেই টিকিট পেয়ে যাচ্ছেন যাত্রীরা। এ ছাড়া অনলাইনে টিকিট কাটতে পারায় অনেক যাত্রীই লাইনে দাঁড়ানোর কষ্ট করছেন না।
এদিকে ঈদ যাত্রার অগ্রিম টিকিট কিনতে আসা যাত্রীরা জানিয়েছেন, তুলনামূলক ভিড় কম থাকায় কষ্ট ছাড়াই তারা টিকিট কিনতে পারছেন। তবে টিকিট কেনার ক্ষেত্রে গন্তব্য কম হলেও পুরো রুটের ভাড়া দিতে হচ্ছে তাদের। তারপরও টিকিট পেয়ে হাসি-মুখে ছবি তুলতেও দেখা গেছে অনেককে।
কমলাপুরে গ্রিন লাইনের কাউন্টারে শরীফুল ইসলাম নামের এক যাত্রী বলেন, অনেক লম্বা লাইনের প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিলাম। তবে কয়েক মিনিটেই টিকিট পেয়ে গেছি। খুবই ভালো লাগছে। এ ছাড়া প্রথম দিন হওয়াতে পছন্দের তারিখের টিকিট পেয়েছি। টিকিটের চাহিদা বেশি থাকলে বাধ্য হয়ে অন্য তারিখের টিকিট কাটতে হতো।
কলাবাগানে ইসরাত সোনালী নামে এক যাত্রী জানান, আগে উত্তরবঙ্গের গাড়িগুলোতে পুরো রাস্তা না গেলে ভাড়াও কম দেওয়া লাগতো। এবার যতটুকুই যাই পুরো রুটের ভাড়া দিতে হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘ভাড়া বেশি নিলেও সহজে টিকিট পেয়ে ভালো লাগছে। আগে আগেই পরিবারের সাথে যোগ দিতে পারবো।’
এর আগে শুক্রবার (৯ জুন) বাস ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক শুভঙ্কর ঘোষ মঙ্গলবার থেকে ঈদের অগ্রিম টিকিট বিক্রি করার ঘোষণা দেন। তিনি জানান, গাবতলী এলাকা থেকে চলা উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের বাসের আগ্রিম টিকিট বিক্রি হবে। অন্যদিকে সায়েদাবাদ থেকে চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও সিলেট এলাকার বাসের টিকিট পাওয়া যাবে। তবে মহাখালী টার্মিনাল থেকে চলা বাসের ক্ষেত্রে এ নিয়ম প্রযোজ্য নয়। এই টার্মিনাল থেকে বাস ছাড়ার আগে টিকিট বিক্রি করা হয়।
শুভঙ্কর ঘোষ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমরা যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপ সামলাতে এবার আগে থেকেই টিকিট দিচ্ছি। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) নির্ধারিত ভাড়া অনুযায়ী বাসের ভাড়া নেওয়া হবে। ভাড়ার তালিকার বাইরে বাড়তি ভাড়া নেওয়া যাবে না। সব বাস মালিককে সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।