অসদাচরণের অভিযোগে গাজীপুর মহানগর পুলিশের (জিএমপি) উপ-কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ কামাল হোসেনকে তিরস্কার করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমানের ২১ আগস্ট স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে লঘুদণ্ডের (শাস্তির) কথা জানানো হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ১৮ মে পর্যন্ত ঠাকুরগাঁওয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত ছিলেন মুহাম্মদ কামাল হোসেন।
চাকরিতে যোগদানের সময় ঠাকুরগাঁওয়ের নারী কনস্টেবল দিলরুবা আক্তারের নিজের বিয়ের তথ্য গোপন করা বিয়েবহির্ভূত অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়ে চাকরি শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজ করার অভিযোগ অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেওয়া হয় ডিসি মুহাম্মদ কামাল হোসেনকে।
ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পেয়েও বিষয়টিকে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে অনুসন্ধান না করা এবং তাগিদপত্র পাওয়ার পরও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করেননি তিনি। পদোন্নতিসূত্রে ২০২১ সালের ১৮ মে পুলিশ সদর দফতরে যোগ দিলেও অভিযোগটি কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর না করে নিজ খেয়াল-খুশি মোতাবেক ওই বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিজ হেফাজতে রেখে দেন। এ অভিযোগে ২০২২ সালের ১৭ জুলাই তাকে কারণ দর্শানো হয়। পরে তিনি ২৫ আগস্ট কারণ দর্শানোর জবাব দিয়ে শুনানির আবেদন করেন।
তার এই আবেদনের পর ২০২২ সালের ৭ নভেম্বর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানিকালে আনীত অভিযোগ, উভয় পক্ষের বক্তব্য, অভিযুক্ত কর্মকর্তার জবাব এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দালিলিক প্রমাণাদি পর্যালোচনায় করা হয়। শেষে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলোর গুরুত্ব ও প্রকৃতি বিবেচনায় এবং অভিযোগগুলো প্রমাণিত হলে গুরুদণ্ড আরোপ হতে পারে প্রতীয়মান হওয়ায় সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮-এর ৭(২)(ঘ) বিধি মোতাবেক রংপুর রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি এস এম রশিদুল হককে বিভাগীয় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়।
তদন্ত কর্মকর্তা এস এম রশিদুল হক সরেজমিন তদন্ত শেষে গত ১৯ জুলাই (২০২৩) তদন্ত প্রতিবেদন (ফাইন্ডিংস) দাখিল করেন। তদন্ত প্রতিবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা অভিযুক্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে আনীত অসদাচরণের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে মর্মে মতামত প্রদান করেন।
এ অবস্থায় বর্তমানে গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার হিসেবে কর্মরত মুহাম্মদ কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগে তার লিখিত জবাব, ব্যক্তিগত শুনানিতে উভয় পক্ষের বক্তব্য, তদন্ত প্রতিবেদন, প্রাসঙ্গিক দলিলপত্রাদি এবং অপরাধের প্রকৃতি ও মাত্রা বিবেচনা করা হয়। পরে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮-এর ৩(খ) বিধি অনুযায়ী 'অসদাচরণ'-এর অভিযোগে একই বিধিমালার ৪(২) উপ-বিধি (১)(ক) উপবিধি অনুযায়ী তাকে তিরস্কার দণ্ড প্রদান করা হয়। জনস্বার্থে জারি করা এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।