শাহবাগ থানায় ছাত্রলীগের তিন নেতাকে মারধরের ঘটনা তদন্ত সাপেক্ষে জড়িত পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণসহ নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন, ২০১৩ অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা সমীচীন বলে মনে করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন ও গৃহীত ব্যবস্থা কমিশনকে অবহিত করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিবকে চিঠি দিয়েছে কমিশন।
মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) প্রতিবেদনের জন্য পরবর্তী দিন ধার্য রেখে সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দেওয়া সুয়োমটো চিঠিতে বলা হয়, 'থানায় নিয়ে ওসির কক্ষে এডিসির নেতৃত্বে মারধর' শিরোনামে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের প্রতি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী রাজধানীর শাহবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কক্ষে গত ৯ সেপ্টেম্বর শনিবার রাতে পুলিশের রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশীদের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের দুই কেন্দ্রীয় নেতাকে ধরে নিয়ে নির্মমভাবে মারধর করা হয়েছে। এমনকি, আরেকজন কেন্দ্রীয় নেতা তাদের খোঁজ নিতে গেলে তাকেও মারধর করা হয়েছে। একপর্যায়ে ছাত্রলীগের অন্য নেতা-কর্মীরা গিয়ে থানা থেকে তাদের উদ্ধার করেন। পুলিশের মারধরের শিকার ছাত্রলীগের তিন নেতা হলেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত আনোয়ার হোসেন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। অন্যরা চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, একটি ব্যক্তিগত বিষয়ের জেরে এডিসি হারুন এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। এভাবে ব্যক্তিগত আক্রোশে কাউকে থানায় নিয়ে যাওয়া এবং একজন পরিদর্শকের (তদন্ত) কক্ষে বেদম মারধর করার এই ঘটনায় পুলিশি ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ঘটনাটি তদন্তের জন্য ডিএমপি তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, ব্যক্তি আক্রোশকে কেন্দ্র করে একজন পুলিশ কর্মকর্তা নিষ্ঠুরতা প্রদর্শনের মাধ্যমে পুলিশি ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন বলে মনে করে কমিশন। যাতে মানবাধিকার লঙ্ঘন করার চিত্র ফুটে উঠেছে। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় একজন পুলিশ কর্মকর্তার এমন আচরণ আইন ও নীতি বিরুদ্ধ।