সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। সবচেয়ে জাঁকজমকপূর্ণ হয় এই আয়োজন। তাই প্রস্তুতিও চলে বেশ ঘটা করে। শনিবার (১৪ অক্টোবর) মহালয়ার দিনে রাজধানীর রমনা কালী মন্দিরে গিয়ে দেখা যায়, রঙতুলির আলপনা আর কারুকাজে চলছে শেষ সময়ের প্রস্তুতি।
বাংলা একাডেমির উল্টো পাশে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে রমনা কালী মন্দিরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়— পূজা মণ্ডপসহ মন্দির প্রাঙ্গণ সাজাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন সবাই। মূল ফটকে ঢোকার আগে একশ মিটারের মতো নানা রঙয়ের ‘মরিচ’ বাতি, আর সাদা কাপড় দিয়ে সাজানো হচ্ছে। মূল ফটকে আঁকা হচ্ছে আলপনা। মূল ফটকের ভেতরে হাতের বাঁয়ে পুকুরে বসানো হয়েছে শিব মূর্তি। তাতে রঙ করতে ব্যস্ত কারিগররা।
এছাড়া পূজামণ্ডপ ও আশপাশের এলাকাও সাজাতে ব্যস্ত সংশ্লিষ্টরা। কাজ করছিলেন শিপন কর্মকার। তিনি বলেন, ২০ অক্টোবর থেকে পূজা শুরু হবে। শিগগিরই কাজ শেষ করতে হবে। এটা করতে অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করে। ব্যস্ত সময় হলেও বেশ উপভোগ করেন বলেও জানান তিনি।
দেখা গেছে, রমনা কালী মন্দিরে ইতোমধ্যেই প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ। তবে এখনও রঙ করা বাকি। আজকেই রঙয়ের কাজ শুরু হবে বলে জানান মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি উৎপল সাহা। ষষ্ঠী পূজার আগেই সব কাজ শেষ হবে বলেও তিনি জানান।
পূজার এবারের সার্বিক আয়োজনের বিষয়ে জানতে চাইলে উৎপল সাহা বলেন, আজকে মহালয়ার মধ্যদিয়ে পূজার সময় গণনা শুরু। ষষ্ঠী পূজার দিন, ২০ অক্টোবর থেকে আনুষ্ঠানিক পূজা শুরু হবে। ২৪ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে দুর্গাপূজা শেষ হবে।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক শক্তি যেন কোনও অঘটন ঘটাতে না পারে— সেজন্য বাড়তি নিরাপত্তা রয়েছে বলেও তিনি জানান। সব ধর্মের মানুষকে নিয়ে দুর্গাপূজা উপভোগ করেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার।’ তাই আমরা সবাইকে নিয়ে আমাদের আয়োজন উপভোগ করি। রমনা কালী মন্দিরের পাশেই একটি মসজিদ আছে। সেই মসজিদের লোকজনও আমাদের দুর্গাপূজায় আসে।
প্রস্তুতি নিয়ে তৎপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের মন্দির পরিচালনা কমিটিও। এখানেও দেখা যায়, প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ। শুধু রঙ করা বাকি আছে। হল প্রাঙ্গণকে সাজানো হয়েছে রঙিন বাতি দিয়ে। হলের দুই মূল ফটকে তোরণ নির্মাণের কাজ চলছে। ষষ্ঠী পূজার আগে আঁকা হবে আল্পনা।
জগন্নাথ হলের পূজার সার্বিক প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহা বলেন, পূজার প্রস্তুতির কাজ চলছে। যথা সময়ে সব কাজ শেষ করে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় পূজা পালন করা হবে।