বিএনপি ও সমমনা বিরোধী দলগুলোর ডাকা টানা তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচির তৃতীয় ও শেষ দিন আজ। শেষ দিনে এসে রাজধানীর রাস্তায় যান চলাচল গত দুই দিনের চেয়ে কিছুটা বেড়েছে। রাস্তায় সাধারণ মানুষের উপস্থিতিও বেড়েছে। তবে বাসের চালক ও হেলপাররা জানিয়েছেন, রাস্তার বাস নামলেও যাত্রী তেমন বাড়েনি। দূরপাল্লার বাসেও যাত্রী নেই।
বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) রাজধানীর মিরপুর ১ ও ২ নম্বর এবং গাবতলী এলাকা সরেজমিনে ঘুরে এ তথ্য জানা গেছে।
সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের একদফা দাবির যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে গত ২৯ অক্টোবর সারা দেশে টানা তিন দিনের (৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর) অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপিসহ সমমনা বিরোধী দলগুলো।
রাজধানীতে চলাচলকারী বসুমতী বাসের চালক মো. সোহেল বলেন, ‘গত দুই দিনের চেয়ে রাস্তায় বাসের সংখ্যা বেড়েছে। কিন্তু বাসের তুলনায় যাত্রী বাড়েনি। কাজ ছাড়া আসলে কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছে না।’
মৌমিতা বাসের হেলপার মো. হানিফ বলেন, ‘আজকে রাস্তায় অনেক বাস আছে। তবে রাস্তা এখনও বেশ ফাঁকা আছে। আমরা বেশি ট্রিপ মারতে পারি। যদি যাত্রী আরও কিছু বাড়তো, তাহলে আমাদের জন্য ভালো হতো।’
‘গাবতলী এক্সপ্রেস’ বাসের চালক হারুন কাজী বলেন, আমরাতো বাস নিয়ে বের হয়েছি, কিন্তু আরও কিছু যাত্রী পেলে ভালো হতো। আসলে মানুষ আতঙ্কে থাকে, কখন বাসে আগুন দিয়ে দেয়। আমি নিজেও আতঙ্কে থাকি, তারপরও বের হই।’
দিশারী বাসে করে গুলিস্তানে যাচ্ছিলেন মাসরুর। তিনি বলেন, ‘আমার কাপড়ের ব্যবসা আছে গুলিস্তানে। তাই প্রতি দিন আমাকে সেখানে যেতে হয়। বাসে যেতে ভয় লাগে, তারপরও যেতে হয়।’
এদিকে মিরপুর ১, মাজার রোড, গাবতলীর বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে মোড়ে লাঠিসোঁটা নিয়ে সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের অবস্থান করতে দেখা যায়। বিভিন্ন রাস্তায় তারা অবরোধ কর্মসূচির প্রতিবাদে মিছিলও করেছেন।
নগরীতে যান চলাচল বাড়লেও গাবতলীতে দেখা গেছে, আজও দূরপাল্লার যানবাহনগুলো ভুগছে যাত্রী সংকটে। কাউন্টারগুলো আজও ফাঁকাই পড়ে আছে। যাত্রীর অভাবে বাস ছাড়ছেন না মালিকরা।
রিজভী ট্রাভেলসের মালিক মো কামরুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের বাসগুলো রাতে চলে। কিন্তু স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় কম। যাত্রী কম থাকায় গাড়ি কম চলছে। যাত্রীরা এখন আতঙ্কের মধ্যে আছে, তাই তারা কম যাতায়াত করছেন।’
চাঁপাই এক্সপ্রেস বাসের চালক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘গত তিন দিন আমাদের কোনও গাড়িই চলে নাই। দিনেও না, রাতেও না। আমি তিন দিন ধরে গাড়িতেই থাকছি।’
সুমন ডিলাক্সের ম্যানেজার আল-আমিন বলেন, ‘অবরোধের প্রথম দিন আমরা একটা গাড়ি ছাড়তে পেরেছিলাম। তারপর আর একটাও ছাড়তে পারিনি। যাত্রী নেই কী করবো?